কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্রী সোহাগী জাহান তনু হত্যা মামলার তদন্তকারী সংস্থার পরিবর্তন হয়েছে। অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডির পর এবার পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন পিবিআইতে হস্তান্তর করা হয়েছে মামলাটি। এর আগে পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থা ডিবির হাত পরিবর্তন হয়ে সিআইডিতে যায় এই হত্যা মামলার তদন্তভার। হত্যাকাণ্ডের সাড়ে ৪ বছরে থানা পুলিশ, ডিবি, সিআইডির হাত পরিবর্তন হলেও দীর্ঘ এই সময়েও তনুর হত্যাকারীরা শনাক্ত হয়নি। নেই মামলার উল্লেখযোগ্য কোনও অগ্রগতি। তনুর খুনি চিহ্নিত না হওয়ায় ক্ষুব্ধ তনুর পরিবার এবং কুমিল্লার বিশিষ্টজনরা।
তনুর হত্যা মামলা পিবিআইতে হস্তান্তরের বিষয় নিশ্চিত করে মঙ্গলবার (১৭ নভেম্বর) সকালে সাবেক তদন্তকারী সংস্থা সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এনামুল হক জানান, সোহাগী জাহান তনু হত্যা মামলাটি সিআইডি পিবিআইতে হস্তান্তর করেছে। বর্তমানে পিবিআই মামলাটি তদন্ত করছেন।
খালেদার বড়পুকুরিয়া মামলায় অভিযোগ গঠনের শুনানি ১২ জানুয়ারি
তনুর বাবা ইয়ার হোসেন জানান, চার বছর ধরে মামলাটি সিআইডিতে। তারা কখন পিবিআইতে হস্তান্তর করেছে আমরা জানি না। গত (১৫ নভেম্বর) ঢাকা থেকে কিছু পিবিআই সদস্য আসেন সেনানিবাসের ভেতরে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। তারপর আমাদের সঙ্গে কথা বলতে এসে জানায়, মামলাটি এখন পিবিআই তদন্ত করা হয়েছে। সিআইডিতে এখন আর নেই।
তনুর পরিবারের সূত্র জানায়, ২০১৬ সালের ২০ মার্চ সন্ধ্যায় কুমিল্লা সেনানিবাসের ভেতরে একটি বাসায় টিউশনি করতে গিয়ে আর বাসায় ফিরেনি তনু। পরে স্বজনরা খোঁজাখুঁজি করে রাতে বাসার অদূরে সেনানিবাসের ভেতর একটি জঙ্গলে তনুর মরদেহ পায়। পরদিন তার বাবা কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের অফিস সহায়ক ইয়ার হোসেন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। থানা পুলিশ ও ডিবির পর ২০১৬ সালের ১ এপ্রিল থেকে মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডি কুমিল্লা। তনুর দুই দফা ময়নাতদন্তে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ফরেনসিক বিভাগ মৃত্যুর সুস্পষ্ট কারণ উল্লেখ করেনি। শেষ ভরসা ছিল ডিএনএ রিপোর্ট। ২০১৭ সালের মে মাসে সিআইডি তনুর জামাকাপড় থেকে নেওয়া নমুনার ডিএনএ পরীক্ষা করে তিনজন পুরুষের শুক্রানু পাওয়ার কথা গণমাধ্যমকে জানিয়েছিল। পরে সন্দেহভাজনদের ডিএনএ ম্যাচিং করার কথা থাকলেও তা করা হয়েছে কিনা- এ নিয়েও সিআইডি বিস্তারিত কিছু বলছে না। সর্বশেষ সন্দেহভাজন হিসেবে তিনজনকে ২০১৭ সালের ২৫ অক্টোর থেকে ২৭ অক্টোবর পর্যন্ত সিআইডির একটি দল ঢাকা সেনানিবাসে জিজ্ঞাসাবাদ করে। জিজ্ঞাসাবাদ করা ব্যক্তিরা তনুর মায়ের সন্দেহ করা আসামি বলেও সিআইডি জানায়। তবে তাদের নাম জানানো হয়নি।
মামলাটির সর্বশেষ তদন্তকারী কর্মকর্তা ছিলেন সিআইডি কুমিল্লার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার জালাল উদ্দীন আহমেদ। তনু হত্যা মামলার তদন্তের দায়িত্বে পিবিআই ।
তনুর মামলা তদন্তের বিষয়ে পিবিআই কুমিল্লার পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান জানান, সিআইডি থেকে মামলাটি পিবিআইতে এসেছে শুনেছি। তবে কুমিল্লা পিবিআইতে এটি হস্তান্তর করেনি। মামলাটি সেন্ট্রাল পিবিআই দেখছেন সম্ভবত।