তৃণমূলকে বিএনপির বিকল্প করার জোর তৎপরতা
স্টাফ রিপোর্টারঃ
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত না হলে ভোটে অংশগ্রহণ করবে না বলে ঘোষণা রয়েছে বিএনপির। একই অবস্থান জানিয়ে দিয়েছে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা অন্য বিরোধী দলগুলোও। এমন পরিস্থিতিতে নির্বাচন কীভাবে অংশগ্রহণমূলক করা যায়, সেই কৌশল আঁটছে ক্ষমতাসীনেরা। শুরু হয়েছে বিএনপি থেকে বেরিয়ে যাওয়া কিছু পরিচিত মুখকে সামনে রেখে নতুন জোট গঠনের প্রক্রিয়া। সেই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে মাঠে নেমেছে বিএনপির প্রয়াত নেতা ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার গঠন করা দল তৃণমূল বিএনপি।
তৃণমূলের পুনর্গঠনের পুরো প্রক্রিয়াকে নির্বাচনের আগে উদ্দেশ্যমূলক কর্মকাণ্ড হিসেবে দেখছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক সাব্বির আহমেদ।
তিনি বলেন, নির্বাচনের একটা কৌশল হিসেবে এই দলের উত্থান। দলটির কোনো আদর্শ ও জাতীয় পর্যায়ে সাংগঠনিক ভিত্তি নেই, এমন পর্যবেক্ষণ দিয়ে সাব্বির আহমেদ বলেন, এই দলে যাঁরা যুক্ত হয়েছেন, তাঁদের মূল উদ্দেশ্য হলো ক্ষমতার কাছাকাছি থাকা।
তৃণমূল বিএনপি ও নির্বাচন সামনে রেখে নানামুখী তৎপরতার প্রতি ইঙ্গিত করে গতকাল টঙ্গীতে বিএনপির সমাবেশে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘কিছু ফেরিওয়ালা আছে, বিভিন্ন সংস্থার লোকজন আছে। তারা ফেরি করে লোকজন জড়ো করছে। ভবিষ্যতে তারা আরেকটা নাটক করবে। আরেকটা নাটকের নির্বাচনের মধ্য দিয়ে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করবে। তার একটা লক্ষণ, আজ একটা পার্টি হয়েছে, রাজনীতিবিদ কেনাবেচার হাট শুরু হয়ে গেছে।
শেখ হাসিনার পাতানো নির্বাচনে যারাই পা বাড়াবে, তাদের পা আস্ত থাকবে না বলে উল্লেখ করে, জনগণ তাদের পা ভেঙে দেবে।
অপর দিকে তৃণমূল বিএনপির গতকালের কাউন্সিলে বিএনপির বর্তমান কোনো সুপরিচিত নেতাকে দেখা যায়নি। তবে বর্তমান সরকার ও আওয়ামী লীগের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলে এমন ২০টি নিবন্ধনহীন রাজনৈতিক দলের নেতারা শুভেচ্ছা জানাতে আসেন অনুষ্ঠানে। কয়েকজন নেতা তৃণমূল বিএনপির সঙ্গে জোট বেঁধে আগামী নির্বাচনে অংশ নেওয়ার আগ্রহের কথাও জানান।
এছাড়া সংগঠনগুলোর নেতাদের মধ্যে বক্তৃতা করেন বিএলডিপির চেয়ারম্যান নাজিম উদ্দীন আল আজাদ, যিনি ১৯৭৯ সালে বিএনপি থেকে এমপি নির্বাচিত হন। পরে তিনি সামরিক শাসক এইচ এম এরশাদের সরকারে যোগ দিয়ে ধর্মমন্ত্রী হন। এরপর ১৯৯৬ সালের জুনে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী ছিলেন।
এর বাইরে আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ প্রগতিশীল ইসলামী জোটের চেয়ারম্যান সাবেক সংসদ সদস্য এম এ আউয়াল, জাতীয় স্বাধীনতা পার্টির চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন খান মজলিশ, প্রগতিশীল ন্যাপের আহ্বায়ক পরশ ভাসানী ও গণ আজাদী লীগ, সনাতন পার্টি, হিউম্যানিস্ট পার্টি, মানবাধিকার আন্দোলন, ইসলামী গণতান্ত্রিক লীগ, জনতা ফ্রন্ট, ইউনাইটেড ডেমোক্রেটিক পার্টি ও জাতীয় মুক্তি দলের নেতারাও অতিথি হিসেবে তৃণমূলের অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।