দুই দশক পরে চালু হতে যাচ্ছে ঠাকুরগাঁওয়ের রেশম কারখানা
আব্দুল্লাহ আজাদ/ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ
দীর্ঘ দুই যুগ ধরে বন্ধ পড়ে থাকার পর চালু হতে যাচ্ছে ঠাকুরগাঁওয়ের একমাত্র রেশম কারখানাটি। কারখানাটি চালু হবার মাধ্যমে রেশমশিল্পের সুদিন ফিরবে বলে আশাবাদী সংশ্লিষ্টরা।
রেশম বোর্ড সূত্রে জানা যায়, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা আরডিআরএস ১৯৭৫-৭৬সালে স্থানীয় বেকার নারী-পুরুষদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থার জন্যই এই কারখানাটি ঠাকুরগাঁওয়ের গবিন্দনগরে ৩ দশমিক ৩৪ একর জমির উপরে রেশম স্থাপন করেন।পরে ২০০২ সালে কারখানাটি বন্ধ হয়ে যায়।
সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১৯৮১ সালের ৩০ জুন কারখানাটি রেশম বোর্ডের নিকট হস্তান্তর করা হয়।কারখানাটিতে ২০টি রিলিং বেসিন, ৩টি শক্তিচালিত তাঁত, ১৯টি হস্তচালিত তাঁত ও আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতি সংস্থাপিত ছিল। কারখানাটির চলতি মূলধন না থাকায় কারখানা পরিচালনার যাবতীয় অর্থ বোর্ডের উন্নয়ন তহবিল থেকে ঋণ হিসেবে দেওয়া হয়।
১৯৯৬ হতে ১৯৯৯ সালে ১৬৩.৫৪ লাখ টাকা ব্যয়ে বিএমআরই প্রকল্পের অধীনে কারখানাটির ভবন বর্ধিতকরণসহ অতিরিক্ত ২০টি শক্তিচালিত তাঁতসহ কিছু আনুষাঙ্গিক যন্ত্রপাতি সংস্থাপিত হয়।
কিন্তু আবর্তক তহবিলের অভাবসহ নানাবিধ কারণে কারখানাটি পরিচালনা সম্ভব হয়নি।
২০০২ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত ১০ মাস শ্রমিকদের মজুরি প্রদান সম্ভব হয়নি।
একপর্যায়ে ২০০২ সালের ৩০ নভেম্বর কারখানাটি বন্ধ ঘোষণা করে কর্মরত ৮৬ জন জনবলকে গোল্ডেন হ্যান্ডসেকের মাধ্যমে চাকরি হতে অব্যাহতি প্রদান করা হয় ৷
কারখানাটিতে দীর্ঘদিন কাজ করে আসা আলেয়া বেগম বলেন, আমি প্রায় দীর্ঘ ২৪ বছর যাবত চাকরি করছি এই রেশম কারখানায়, আমার অভিজ্ঞতা অনেক বেশি। ২০০২ সালে কোম্পানি বন্ধ হয়ে যায় তারপর থেকে আমি বেকার, এই কারখানাটি চালু হলে আমিও কর্মসংস্থান ফিরে পাবো।
এ বিষয়ে রেশন শ্রমিক সাইদুর রহমান বাবু বলেন, আরডিআরএস এর বিভিন্ন আন্দোলন করে ১৯৮১ সালে সরকারিভাবে কারখানাটিকে জাতীয়করণ করি। মাঝে একটু অনিয়মের কারণে কারখানাটি বন্ধ করে দেওয়া হয়, পরবর্তীতে সরকার আবারও জাতীয়করণ করলেও ২০০২ সালে বন্ধ হয়ে যায়। এখন আবারও নতুন করে চালু হবে শুনে আমরা সবাই আনন্দিত।
সুপ্রিয় এন্টারপ্রাইজের জিএম মেহেদী হাসান বলেন, গত মে মাসে আমরা এই রেশন কারখানাটি লিজ নিয়েছি। এই মাসের মধ্যেই কারখানাটি আমরা চালু করতে পারবো বলে আশা করি। কারখানাটি চালু হলে স্থানীয় অনেক মানুষের কর্মসংস্থান হবে।
রংপুর অঞ্চলের উৎপাদন কর্মকতা আবুল কালাম আজাদ জানান, ৫ বছরের জন্য সুপ্রিয় এন্টারপ্রাইজকে ৮ লাখ ১০ হাজার টাকা চুক্তিতে কারখানাটি দেওয়া হয়েছে। তারা শুধু বিলডিং এবং যন্ত্রগুলো ব্যবহার করতে পারবে।
ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক মাহবুবুর রহমান বলেন, রেশম কারখানার কর্মকতারা এসেছিলেন, তারা আমাকে বিষয়টি মৌখিক ভাবে জানিয়েছেন। কারখানাটি চালুর বিষয়টি আমি অবগত আছি।