কুমিল্লার জেলার বুড়িচং উপজেলার ষোলনল ইউনিয়নের বুড়বুড়িয়া গ্রামের আবু তাহের এর মেয়ে ও সোনার বাংলা কলেজের একাদশ শ্রেণীর ছাত্রী তানিয়া আক্তার গত শনিবার (৩১ অক্টোবর) দুপুরে বিষ পান করে মারা যায়।জানা যায়, একই ইউনিয়নের খাড়াতাইয়া গ্রামের মৃত রোস্তম আলীর ছেলে ও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের অনার্স ৪র্থ বর্ষের ছাত্র মোঃ সাইদুজ্জামান নাঈমের সাথে নিহত তানিয়ার ছোট বোন রীমির প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। এই সুবাদে প্রায় সময় বড় বোন তানিয়ার সাথে কথোপকথন হতো নাঈমের।
বেশ কিছুদিন পর রীমি ও নাঈমের প্রেমের সম্পর্কের বিষয়টি জেনে যায় উভয়ের পরিবারের অভিভাবকরা। তাদের প্রেমের বিষয়টি নিয়ে একে অপরকে দায়ী করে অভিভাবকদের মাঝে কথা কাটাকাটি হয়ে প্রেমের সম্পর্ক দূরত্ব হয়ে যায়। এই ফাঁকে ছোট বোনের খোঁজখবর রাখতে গিয়ে বড় বোন তানিয়া সাথে কথোপকথন শুরু করে নাঈম। এই ভাবে কথা বলতে বলতে নাঈমকে ভালোবেসে ফেলে তানিয়া।
নাঈমের বড় ভাই কামরুজ্জামান মিঠু প্রতিনিধিকে জানান, তানিয়ার মৃত্যুর কিছুদিন আগে প্রকৃতির ডকে সাড়া পেয়ে রাতে তানিয়া বাইরে যায়। এ সময় নাঈম তানিয়ার বাড়িতে যায় এবং দুইজনে দেখা করে। টের পেয়ে তানিয়ার ভাই নাঈমকে আটকে রেখে এবং গরু চুরির অভিযোগ এনে নাঈমের বাড়িতে খবর পাঠায় তানিয়ার অভিভাবকরা।
আব্দুর রব মুনা বিশ্বাসের পাট্টা শাষণ
ঘটনার খবর পেয়ে সাথে সাথে তানিয়ার বাড়িতে যায় নাঈমের পরিবার। তখনই তারা জানতে পারে তানিয়া ও নাঈমের প্রেমের সম্পর্কের বিষয়টি। তখন তানিয়ার সাথে নাঈমের আর সম্পর্ক থাকবে না এমন কথা বলে বিষয়টি মিটমাট করে নাঈমকে বাড়িতে নিয়ে শাসন করে এবং হাতের মোবাইলটি জব্দ করে তার পরিবার।
এর কিছুদিন পর অর্থ্যৎ মৃত্যুর আগে নাঈমের মোবাইল ফোনে না পেয়ে বড় ভাই পিন্টুর বউ (ভাবি’র) মোবাইলে কল ও মেসেজ দিতে থাকে তানিয়া। এই মেসেজ গুলো তানিয়ার পরিবারকে দেখানো হয় এবং বিয়ের প্রস্তাব দেওয়া হয় কিন্তু তানিয়ার পরিবার প্রস্তাবে রাজি না হয়ে তানিয়াকে শাসন করতে শুরু করে।
শনিবার আত্মহত্যার কয়েক ঘন্টার আগে তানিয়ার বাবা আবু তাহের ও তার চাচা এবং জেঠাতো ভাই মামুন ও মাসুম মাস্টার তানিয়াকে শাসন করে এবং মারধর করে। এই অপমান সহ্য করতে না পেরে ঘরের রুমের ভিতরে রাখা বিষ খেয়ে সে আত্মহত্যা করে।
স্থানীয় কয়েকজন জানান, ঘরের মধ্যে তানিয়া বিষ পান করে নামাজে দাঁড়িয়ে যায় এবং নামাজে দাঁড়ানো অবস্থায় বমি করার সময় ছোট ভাই দেখে কান্নাকাটি করলে বাড়ির সবাই এসে ধরাধরি করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করে।
এ বিষয়ে প্রতিনিধি নিহত তানিয়ার বাড়িতে গেলে বাবা ও মা কেউ ক্যামেরার সামনে আসতে এবং কোনো মন্তব্য দিতে রাজি হয়নি।
এ বিষয়ে নাঈমের বড় ভাই কামরুজ্জামান মিঠু বলেন, তানিয়ার আত্মহত্যার পর থেকেই নাঈমকে মামলার হুমকি দিয়ে আসছে এবং কিছু টাকাও দাবী করেছে। হুমকির ভয়ে আমার ভাই পালিয়ে যায়। তাকে এখন খুঁজে পাচ্ছি না। তানিয়াকে উত্যাক্ত করতেন এমন অভিযোগ এনে শুনেছি আমার ভাইকে আসামী করে নিহতের পরিবার থানায় মামলা করছে। বুধবার আমাদের বাড়িতে পুলিশ এসেছে।
এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী ও বুড়িচং থানার এসআই মোঃ ইমরুল জানান, শনিবারে নিহত তানিয়ার মরদেহ কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গ থেকে ময়নাতদন্ত করে লাশ বাড়িতে পাঠানো হয়েছে। মঙ্গলবার বুড়িচং থানাতে নাঈমকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করে নিহতের পরিবার।