ঢাকা ০৭:৫৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ২৮ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম:
Logo বীর মুক্তিযোদ্ধা আঃ আজিজ মিয়ার শেষ বিদায়ে হাজার মানুষের ঢল Logo ঝালকাঠিতে এ্যাড. শাহাদাৎ হোসেনের গণসংযোগ Logo ঈশ্বরগঞ্জে আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস উপলক্ষে সচেতনতামূলক মহড়া Logo রাজাপুরে আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস পালন র‌্যালি, আলোচনা সভা ও মহড়া অনুষ্ঠিত Logo ঈশ্বরগঞ্জ পুলিশের অভিযানে গরু চোর চক্রের ৪ সদস্য গ্রেপ্তার, উদ্ধার ৩টি গরু Logo বড়ইতলা স্মৃতিসৌধে নেমে এসেছে নীরবতা, হারিয়ে গেছে শ্রদ্ধা! Logo চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ডিঙ্গেদহ এলাকায় বিষাক্ত মদপানে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। Logo তরুণ কৃষি-উদ্যোক্তাদের জন্য সামাজিক ব্যবসা তহবিল গঠনের আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার Logo কিশোরগঞ্জে গরু চুরি নিয়ে দুগ্রুপের সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ৩০ Logo আঠারবাড়িতে তারেক রহমানের বিবিসির সাক্ষাৎকার জনগনের মাঝে প্রচার

দু-একটা দলকে সমর্থন করতে গিয়ে সরকার নিরপেক্ষতা হারিয়েছে

Astha DESK
  • আপডেট সময় : ০২:৩৪:০৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৮ অক্টোবর ২০২৫
  • / ১২১২ বার পড়া হয়েছে

দু-একটা দলকে সমর্থন করতে গিয়ে সরকার নিরপেক্ষতা হারিয়েছে

স্টাফ রিপোর্টারঃ

এনসিপি নেতা নাহিদ ইসলামের বক্তব্যে রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তাপ সময়ের ক্যালকুলেটরে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বাকি আছে মাত্র তিন মাস।

অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যতম বিষয়ে রয়েছে
জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এ নির্বাচনের বাকি আছে মাত্র তিন মাস। এই হিসেবে রাজনীতির মাঠ এখন অনেকটা নির্বাচনমুখী। আসন ভিত্তিক সমাবেশ, গণসংযোগ শুরু করেছেন দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশীরা।

ঠিক এমন মুহূর্তে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক, সাবেক তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেছেন, উপদেষ্টাদের অনেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে লিয়াজোঁ করে ফেলেছেন। তাঁরা এখন নিজেদের সেফ এক্সিট বা নিরাপদ প্রস্থান নিয়ে ভাবছেন।

নাহিদ ইসলামের এ মন্তব্যে রাজনৈতিক অঙ্গনে ছড়িয়ে পড়ে উত্তাপ। টেলিভিশনের টক শো ও সমাজমাধ্যমে শুরু হয় ব্যপক আলোচনা। রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের মধ্যে নাহিদের মন্তব্য নিয়ে কথা বলছে। নানান আলোচনা হচ্ছে সরকারের ভিতরেও।

আলোচনার পাশাপাশি অনেকে নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। তাঁদের যুক্তি, নাহিদ ইসলাম একসময় ছিলেন সরকারের ভিতরের লোক। পরে সরকার থেকে বেরিয়ে এলেও ঘনিষ্ঠতা রয়েছে সরকারসংশ্লিষ্টদের সঙ্গে।

সাক্ষাৎকারে নাহিদ ইসলাম আরও বলেছেন, উপদেষ্টাদের অনেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে লিয়াজোঁ করে ফেলেছেন। তাঁরা নিজেদের সেইফ এক্সিটের কথা ভাবতেছেন। এটা আমাদের অনেক পোহাতে হচ্ছে এবং পোহাতে হবে। তাঁর কাছ থেকে যখন এ ধরনের মন্তব্য আসে তখন সেটা গুরুত্বের পাশাপাশি হাস্যরসের জন্ম দিয়েছে।

তিনি বলেন, কিন্তু তাঁরা যদি এটা বিশ্বাস করতেন যে তাঁদের নিয়োগকর্তা ছিল গণ অভ্যুত্থানের শক্তি, রাজপথে নেমে জীবন দেওয়া ও আহত সাধারণ মানুষজন এবং তাঁরা যদি তাঁদের ওপর ভরসা করতেন, তাহলে উপদেষ্টাদের এ বিচ্যুতি হতো না।

একই ইস্যুতে আরও আক্রমণাত্মক মন্তব্য করেন এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, কিছু উপদেষ্টার মধ্যে দেখা যাচ্ছে, তাঁরা কোনোভাবে দায়সারা দায়িত্ব পালন করেন, নির্বাচনের মধ্য দিয়ে এক্সিট নিতে পারলেই হলো, দেশে থাকুক আর দেশের বাইরেই থাকুক।

এ দায়সারা দায়িত্ব নেওয়ার জন্য অভ্যুত্থান-পরবর্তী একটি সরকার কাজ করতে পারে না। তাঁরা এত শহীদ, রক্তের ওপরে দাঁড়িয়ে ওখানে (সরকারে) আছেন। তাঁরা যদি এমনটা করে থাকেন, তাহলে দেশের মানুষের সামনে মুখ দেখাতে পারবেন না। যাঁরা এ ধরনের চিন্তা করেন তাঁদের জন্য মৃত্যু ছাড়া কোনো সেফ এক্সিট নেই। পৃথিবীর যে প্রান্তে যাক বাংলাদেশের মানুষ তাঁদের ধরবে।

এনসিপির পক্ষ থেকে অন্তর্বর্তী সরকার জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে বলে মন্তব্য করা হচ্ছে। পাশাপাশি কয়েকজন উপদেষ্টার বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের তির ছোড়া হয়েছে। সরকারের ভূমিকায় অনেকটা হতাশ তাঁরা। সেইফ এক্সিটের কথা বলা হয়েছে।

রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক নুরুল আমিন বেপারী বলেন, ইউনূস সরকারের অনেক ভুল রয়েছে। এসব ভুলের কারণে চব্বিশের গণ অভ্যুত্থানের ফসল জনগণ পায়নি। এ কারণে নির্বাচনের আগে উপদেষ্টাদের সেফ এক্সিটের কথা আসছে।

অধ্যাপক নুরুল আমিন বেপারী বলেন, প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস সাহেব হচ্ছেন ব্যক্তিগতভাবে সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্যক্তি। কিন্তু উনি সবচেয়ে বেশি বোকামি করেছেন অভিজ্ঞ ও নিরপেক্ষ রাজনীতিবিদদের সরকারে যুক্ত করেননি। উনি সরকারে নিয়েছেন এনজিও ব্যক্তিত্বদের। আঞ্চলিক পর্যায়ের লোকদের গুরুত্ব দিয়েছেন।

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পাটির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, আমার ধারণা, নাহিদরা যেভাবে চেয়েছিলেন উপদেষ্টাদের একটা অংশ সেভাবে কাজ করেননি। সরকার একটা বা দুইটা দলকে সমর্থন করতে গিয়ে তাদের নিরপেক্ষতা হারিয়েছে।

ট্যাগস :

দু-একটা দলকে সমর্থন করতে গিয়ে সরকার নিরপেক্ষতা হারিয়েছে

আপডেট সময় : ০২:৩৪:০৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৮ অক্টোবর ২০২৫

দু-একটা দলকে সমর্থন করতে গিয়ে সরকার নিরপেক্ষতা হারিয়েছে

স্টাফ রিপোর্টারঃ

এনসিপি নেতা নাহিদ ইসলামের বক্তব্যে রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তাপ সময়ের ক্যালকুলেটরে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বাকি আছে মাত্র তিন মাস।

অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যতম বিষয়ে রয়েছে
জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এ নির্বাচনের বাকি আছে মাত্র তিন মাস। এই হিসেবে রাজনীতির মাঠ এখন অনেকটা নির্বাচনমুখী। আসন ভিত্তিক সমাবেশ, গণসংযোগ শুরু করেছেন দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশীরা।

ঠিক এমন মুহূর্তে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক, সাবেক তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেছেন, উপদেষ্টাদের অনেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে লিয়াজোঁ করে ফেলেছেন। তাঁরা এখন নিজেদের সেফ এক্সিট বা নিরাপদ প্রস্থান নিয়ে ভাবছেন।

নাহিদ ইসলামের এ মন্তব্যে রাজনৈতিক অঙ্গনে ছড়িয়ে পড়ে উত্তাপ। টেলিভিশনের টক শো ও সমাজমাধ্যমে শুরু হয় ব্যপক আলোচনা। রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের মধ্যে নাহিদের মন্তব্য নিয়ে কথা বলছে। নানান আলোচনা হচ্ছে সরকারের ভিতরেও।

আলোচনার পাশাপাশি অনেকে নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। তাঁদের যুক্তি, নাহিদ ইসলাম একসময় ছিলেন সরকারের ভিতরের লোক। পরে সরকার থেকে বেরিয়ে এলেও ঘনিষ্ঠতা রয়েছে সরকারসংশ্লিষ্টদের সঙ্গে।

সাক্ষাৎকারে নাহিদ ইসলাম আরও বলেছেন, উপদেষ্টাদের অনেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে লিয়াজোঁ করে ফেলেছেন। তাঁরা নিজেদের সেইফ এক্সিটের কথা ভাবতেছেন। এটা আমাদের অনেক পোহাতে হচ্ছে এবং পোহাতে হবে। তাঁর কাছ থেকে যখন এ ধরনের মন্তব্য আসে তখন সেটা গুরুত্বের পাশাপাশি হাস্যরসের জন্ম দিয়েছে।

তিনি বলেন, কিন্তু তাঁরা যদি এটা বিশ্বাস করতেন যে তাঁদের নিয়োগকর্তা ছিল গণ অভ্যুত্থানের শক্তি, রাজপথে নেমে জীবন দেওয়া ও আহত সাধারণ মানুষজন এবং তাঁরা যদি তাঁদের ওপর ভরসা করতেন, তাহলে উপদেষ্টাদের এ বিচ্যুতি হতো না।

একই ইস্যুতে আরও আক্রমণাত্মক মন্তব্য করেন এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, কিছু উপদেষ্টার মধ্যে দেখা যাচ্ছে, তাঁরা কোনোভাবে দায়সারা দায়িত্ব পালন করেন, নির্বাচনের মধ্য দিয়ে এক্সিট নিতে পারলেই হলো, দেশে থাকুক আর দেশের বাইরেই থাকুক।

এ দায়সারা দায়িত্ব নেওয়ার জন্য অভ্যুত্থান-পরবর্তী একটি সরকার কাজ করতে পারে না। তাঁরা এত শহীদ, রক্তের ওপরে দাঁড়িয়ে ওখানে (সরকারে) আছেন। তাঁরা যদি এমনটা করে থাকেন, তাহলে দেশের মানুষের সামনে মুখ দেখাতে পারবেন না। যাঁরা এ ধরনের চিন্তা করেন তাঁদের জন্য মৃত্যু ছাড়া কোনো সেফ এক্সিট নেই। পৃথিবীর যে প্রান্তে যাক বাংলাদেশের মানুষ তাঁদের ধরবে।

এনসিপির পক্ষ থেকে অন্তর্বর্তী সরকার জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে বলে মন্তব্য করা হচ্ছে। পাশাপাশি কয়েকজন উপদেষ্টার বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের তির ছোড়া হয়েছে। সরকারের ভূমিকায় অনেকটা হতাশ তাঁরা। সেইফ এক্সিটের কথা বলা হয়েছে।

রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক নুরুল আমিন বেপারী বলেন, ইউনূস সরকারের অনেক ভুল রয়েছে। এসব ভুলের কারণে চব্বিশের গণ অভ্যুত্থানের ফসল জনগণ পায়নি। এ কারণে নির্বাচনের আগে উপদেষ্টাদের সেফ এক্সিটের কথা আসছে।

অধ্যাপক নুরুল আমিন বেপারী বলেন, প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস সাহেব হচ্ছেন ব্যক্তিগতভাবে সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্যক্তি। কিন্তু উনি সবচেয়ে বেশি বোকামি করেছেন অভিজ্ঞ ও নিরপেক্ষ রাজনীতিবিদদের সরকারে যুক্ত করেননি। উনি সরকারে নিয়েছেন এনজিও ব্যক্তিত্বদের। আঞ্চলিক পর্যায়ের লোকদের গুরুত্ব দিয়েছেন।

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পাটির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, আমার ধারণা, নাহিদরা যেভাবে চেয়েছিলেন উপদেষ্টাদের একটা অংশ সেভাবে কাজ করেননি। সরকার একটা বা দুইটা দলকে সমর্থন করতে গিয়ে তাদের নিরপেক্ষতা হারিয়েছে।