দেওয়ানগঞ্জ জামালপুর প্রতিনিধিঃ জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার বাহাদুরাবাদ ইউনিয়নের মাদারেরচর আব্দুল গণি ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপারের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ দাখিল করেছে। ৮ (অক্টোবর) মঙ্গলবার জামালপুর জেলা প্রশাসক ও দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ জাহিদ হাসান প্রিন্স বরাবর এ লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন চাকুরিচ্যুত সহকারি মৌলভী মো. নাদের হোসেন।
দাখিলকৃত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উক্ত মাদ্রাসার সুপার মো. হাসমত আলী ভুক্তভোগী মো. নাদের হোসেনকে ৬০ হাজার টাকার বিনিময়ে এনটিআরসি কর্তৃক শিক্ষক নিবন্ধন সনদ এনে দেন। উক্ত সনদ দিয়ে মো. নাদের হোসেনকে সহকারী মৌলভী পদে পদায়ন এবং এমপিওভুক্তি করানের সময় তার কাছ থেকে ৮ লক্ষ টাকা উৎকোচ নেয় সুপার মো. হাসমত আলী। যেহেতু মাদ্রাসা সুপার মো. হাসমত আলী জানতো সহকারী মৌলভী মো. নাদের হোসেনের শিক্ষক নিবন্ধন সনদ টি ভুয়া। এই দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে নিবন্ধন সনদ ভুয়া প্রমাণিত করে চাকুরিচ্যুত করেন সহকারী মৌলভী মো. নাদের হোসেনেকে।
মো. নাদের হোসেন তার দেওয়া টাকা ফেরত চাইতে গেলে ভুয়া নিবন্ধন সনদের মামলার ভয় দেখান সুপার।অদ্যাবধি উক্ত টাকা ফেরত পাননি মো. নাদের হোসেন। সুপার পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি না দিয়েই উৎকোচের মাধ্যমে মোছাঃ শারমিন আক্তার নামে অন্যজনকে নিয়োগ দেন।
অভিযোগে আরো উল্লেখ করা হয়েছে যে, একজন সহকারী মৌলভী, দুইজন জুনিয়র মৌলভী, একজন অফিস সহকারী ও একজন ল্যাব সহকারি পদের জন্য কোনরকম নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা ছাড়াই তাদের কাছ থেকে অর্থের বিনিময়ে তাদের নিয়োগ প্রদান করেন সুপার হাসমত আলী। কৃষি শিক্ষাসহ বেশ কয়েকটি পদে পত্রিকায় প্রকাশিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ভুয়া হওয়ায় উক্ত পদে নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকরা নানা বঞ্চনার শিকার হয়েছেন বলে জানা যায়। বিগত ৮ বছর ধরে শিক্ষকদের টিউশন ফি না দিয়ে আত্মসাৎ করার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। সুপারের এসব অনিয়ম ও দূর্নীতিতে সহকারী শিক্ষক মো. আলমগীর হোসেনের সম্পৃক্ততা আছে বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ রয়েছে।
উল্লেখ্য যে, বিগত আওয়ামীলীগের সাবেক সাংসদ আবুল কালাম আজাদের দোহাই দিয়ে সুপার এমন অনিয়ম ও দূর্নীতিতে যুক্ত ছিলেন বলে জানা যায়। তিনি মাদ্রাসায় নিয়মিত আসতেন না। মাসে একদিন এসে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে যেতেন। মাদ্রাসাটিকে আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় বানিয়ে ছিলেন সুপার মো. হাসমত। শুধু দলীয় কার্যালয় নয় তিনি এটাকে টাকার মেশিনে পরিণত করেছিলেন বিভিন্ন রকম নিয়োগ বাণিজ্য করে।
মাদ্রাসার শিক্ষক-কর্মচারীরা তার এ সকল অন্যায়- অপকর্মের বিরুদ্ধে কোন কথা বলার সাহস পেতেন না। আওয়ামী লীগের দলীয় ক্ষমতা ব্যবহার করে তাদের কে সবসময় কোণঠাসা করে রাখতেন তিনি। অভিযোগ আমলে নিয়ে সুপারের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের তদন্ত করলে সততা বেরিয়ে আসবে বলে আশাবাদী ভুক্তভোগী মো. নাদের হোসেন।