দৈনিক আস্থায় সংবাদ প্রকাশ ভাঙ্গায় অবরুদ্ধ প্রবাসী পরিবার অবমুক্ত
মামুনুর রশীদ/ফরিদপুর প্রতিনিধিঃ
অবেশে ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা উপজেলার আলগী ইউনিয়নের ছোট খারদিয়া গ্রামের প্রবাসী পরিবারকে অবরুদ্ধর হাত থেকে অবমুক্ত করলেন ভাঙ্গা উপজেলা প্রশাসন।
আজ সোমবার দুপুরে ভাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আজিম উদ্দীন রুবেল, ভাঙ্গা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাসুদূর রহমান ও ওসি জিয়ারুল ইসলাম তিনজনের সমন্বয়ে টিম সরজমিনে ঘতনাস্থলে গিয়ে তদন্ত করার পর তারকাটার বেড়া কেটে প্রবাসী লোকমান মোল্লা পরিবারকে অবরুদ্ধর হাত থেকে অবমুক্ত করেন উপজেলা প্রশাসন।
এর আগে রোববার (১৩আগষ্ট) দৈনিক আস্থায় ফরিদপুর প্রতিনিধি মামুনুর রশীদ প্রেরিত ‘কাঁটাতারের বেড়ায় অবরুদ্ধ প্রবাসী পরিবার” শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদটি উপজেলা আইনশৃঙ্খলা সভায় সোমবার সকালে উঠলে গোঁটা বিষয়টি নজরে আসে ভাঙ্গা উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের। এরপর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এসএম হাবিবুর রহমান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সহকারী কমিশনার ভূমি ও ওসি তাৎক্ষনিকভাবে আইনশৃঙ্খলা পরিপন্থী এহেন কাজের বিষয়টি জরুরীভাবে দেখভাল করার পর আলগী ইউনিয়ন পরিষদ মম সিদ্দিক মিয়াকে সাথে নিয়ে সামাজিকভাবে সমাধান করতে সচেষ্ট হন।
ভাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আজীম উদ্দীন রুবেল বলেন, অনলাইন আস্থা নিউজ পোর্টালে প্রকাশিত সংবাদটি উপজেলা প্রশাসনের নজরে আসার পর ভাঙ্গা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ভাঙ্গা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও ভাঙ্গা থানার ওসির সমন্বয় করে সরজমিনে দেখার সিদ্ধান্ত গৃহীত হলে দুপুরে ঘটনাস্থলে গিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও গ্রামবাসীর উপস্থিতিতে সকলের সম্মতিতে প্রবাসী পরিবারের বাড়ির উপর প্রতিপক্ষের কাঁটাতারের বেড়া কেটে পরিবারটিকে অবরুদ্ধের হাত থেকে অবমুক্ত করা হয়।
ইউপি চেয়ারম্যান মম সিদ্দিক মিয়া বলেন, কোন এক অজগায়ে প্রভাবশালীরা প্রবাসী পরিবারকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে নিউজ পোর্টালের অনুসন্ধানী সাহসী প্রতিবেদন প্রকাশের পর বিষয়টি প্রশাসনসহ সকলের নজরে আনার ভুমিকায় ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। ঘটনাটি তার নিজের ইউনিয়ন হলেও এ বিষয়ে তার জানা ছিল না বলে উল্লেখ করে ভাঙ্গা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এসএম হাবিবুর রহমান ও উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানান।
প্রবাসী লোকমান মোল্লার মা হাসিনা বেগম কথা বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। কিছুটা শান্ত হয়ে বলেন, আমার স্বামী নেই। তিনটি সন্তান। দুজন মালয়শিয়া প্রবাসী। অন্য ছেলেকে (নয়ন মোল্লা মানসিক প্রতিবন্ধি) প্রতিপক্ষ করে হত্যা মামলায় আসামী করেছে। ছেলেটা আমার ফেরারী হয়ে বেড়াচ্ছে। তিন ছেলের বউকে নিয়ে সব সময় আতঙ্কে থাকতে হয়। যে স্যারেরা আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন তাদের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করছি।
উল্লেখ্য ওই এলাকায় জমির ধানকাঁটার ঘটনায় দুদল গ্রামবাসীর সংঘাতে আলমগীর মাতুব্বর নামে এলাকার একজন কৃষক নিহত হন। ভাঙ্গা থানায় নিহতের পরিবার থেকে একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। কিন্ত বাদী পরিবারের গ্রাম্য দলাদলির লোকজন প্রবাসী লোকমান মোল্লার এক ভাইকে আসামী করার পাশাপাশি তাদের বিরুদ্ধে প্রবাস থেকে হত্যার ইন্দনদাতা হিসেবে অভিযোগ আনার পর থেকে বিভিন্নভাবে হয়রানী করে আসছিল।
সেই সূত্রতায় প্রতিপক্ষের লোকজন প্রবাসীর মা হাসিনা বেগম, লোকমান মোল্লার স্ত্রী সায়মা বেগম ও তার ভাই হায়দার মোল্লার স্ত্রী সাহানুর বেগমকে বাড়ীর সীমানায় কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে গত তিনদিন অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। এসময় ওই পরিবারের হাঁটবাজার বন্ধসহ বাড়ির পাশে নদী থাকায় তারা গৃহবন্দী হয়ে পড়েন।