অধিকাংশ লোকই যৌনাঙ্গপ্রেমি।
নইলে ধর্ষণ শব্দটা শুধুমাত্র যৌনাঙ্গ নির্ভর হতো না।
এই যে এতগুলা ভদ্রলোক ধর্ষণের ভিডিওটা গুগলে-ইউটিউবে হন্যে হয়ে খুঁজছিলো।
কেন খুঁজছিলো?
রিসার্চ করার জন্য?
না কি নিজেদের অবদমিত যৌনাকাঙ্ক্ষা মেটানোর জন্য! আসলে, এই ভদ্রলোকগুলার মধ্যেও খুব গোপনে একজন ধর্ষক ঘাপটি মেরে বসে আছে।
ধর্ষণের জন্য নারী ও পুরুষ লাগে। যৌনাঙ্গের সম্পর্কও লাগে। এই যে দুনিয়াজুড়ে এতগুলো মানুষ ধর্ষণের এমন একটা মানে দাঁড় করালো যে, যৌনাঙ্গের সম্পর্ক না থাকলে লোকে সেটা’কে ধর্ষণ বলে না। বলে কি?
সম্মিলিতভাবে ধর্ষণের প্রতিবাদ করা হয়। কেন করা হয়? কারণ এটা যৌন নির্যাতন। এখানে শরীর জড়িত বলেই কি সবার এত আগ্রহ!
ধর্ষণ মূলতঃ দুর্বলের উপর সবলের নির্যাতন। এই নির্যাতন শুধুমাত্র শারীরিক নয়, অনেকভাবেই তা হতে পারে। এই নির্যাতন যে শুধুমাত্র পুরুষই করে তা নয়, একজন নারীও একজন পুরুষকে নির্যাতন করতে পারে।
এই ‘পৃথিবী’ নামের গ্রহটাকে, এই গ্রহের মাটি,বায়ু, পানি সহ প্রতিটি প্রাণের অস্তিত্বকে বিলীন করার যে মহোৎসব চলছে, তা’কে লোকে ধর্ষণ বলে না। কেননা সেখানে যৌনাঙ্গের সম্পর্ক নেই।
যারা সবুজ পৃথিবীর বুকের নরম জমিন খাবলে খাচ্ছে, যারা তোমার বিষাইছে বায়ু-জল, সেইসব আন্তর্জাতিক ধর্ষক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধেও আমাদের কোনো ডাইরেক্ট অ্যাকশান নেই।
যৌনধর্ষণ ছাড়াও আরো অনেক রকম ধর্ষণ রয়েছে; সামাজিক ধর্ষণ,রাষ্ট্রীয় ধর্ষণ, ধর্মীয় ধর্ষণ, রাজনৈতিক ধর্ষণ, সাংস্কৃতিক ধর্ষণ, অর্থনৈতিক ধর্ষণ, মাটি ধর্ষণ, পানি ধর্ষণ ও বায়ু ধর্ষণ।
যৌনধর্ষণ সহ সব রকমের ধর্ষণের প্রতিকারের জন্য তীব্র প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ গড়ে তোলা প্রয়োজন। অথচ, যৌনধর্ষণে সবাইকে যতটা মুখর দেখা যায়, অন্য সকল ধর্ষণের ক্ষেত্রে সবাইকে অতোটা নিরব দেখা যায় কেন জানি না!
প্রতিকারের জন্য যে কোন নির্যাতনেরই প্রতিবাদ করা উচিত। শুধুমাত্র যৌন নির্যাতনে নয়, যে কোনো অপ্রাণবিকতার প্রতিবাদে দুনিয়াটা একবার কাঁপায়া দেওয়া দরকার।
বর্তমান বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের অধিকাংশই ইয়াবায় আসক্ত। শুনেছি, ইয়াবা না কি যৌন উত্তেজক হিসেবেও কাজ করে থাকে।
তবে, বিপুলসংখ্যক তরুণদের হাতে এই ইয়াবা তুলে দিয়ে ধর্ষণ থামাবেন কী করে?
মাদকাসক্ত তরুণ-যুবকরা যৌনধর্ষণের সাথে জড়িত থাকার খবর বেশি পাওয়া যাচ্ছে। মাদকসেবনে তারা হারিয়েছে হিতাহিতজ্ঞান।
তাই, অবক্ষয় রোধে রুখে দাঁড়াতে হবে মাদকের বিরুদ্ধে। রুখে দাঁড়াতে হবে নিজের ভিতরে ঘাপটি মেরে থাকা ধর্ষকের বিরুদ্ধেও।
প্রয়োজন আত্মিক শুদ্ধতা। প্রয়োজন আত্মিক শুদ্ধতার ধারাবাহিক একাডেমিক চর্চা।
তবেই আমরা মানুষ হবো।
নয়তো, আয়নায় তাকাও।
লিখেছেন: শামসুল আজম মুন্না
প্রধান সমন্বয়ক- “মাদকমুক্ত তারুণ্য চাই”