ধানমন্ডিতে ৩ সমন্বয়ককে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ
আস্থা ডেস্কঃ
রাজধানীর ধানমন্ডিতে মব সৃষ্টি করে এক প্রকাশককে স্বৈরাচারের দোসর আখ্যা দিয়ে তাঁর বাসার সামনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা তিন সমন্বয়ককে আটকের পর ছেড়ে দিয়েছে ধানমন্ডি থানা-পুলিশ।
আজ মঙ্গলবার (২০ মে/২০২৫ইং) বিকেলে জাতীয় নাগরিক কমিটির সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসুদের উপস্থিতিতে পরিবাবের জিম্মায় মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয় পুলিশ। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এই তথ্য জানান ধানমন্ডি মডেল থানার ওসি ক্যশৈনু।
ওসি ক্যশৈনু জানান, গতকাল সোমবার রাতে ধানমন্ডিতে মব সৃষ্টি করে হাক্কানী পাবলিশার্সের প্রকাশককে স্বৈরাচারের দোসর আখ্যা দিয়ে তাঁর বাসার সামনে বিশৃঙ্খলা করছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তিনজন। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে তাঁদের থানা হেফাজতে নিয়ে আসে। আজ জাতীয় নাগরিক কমিটির সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসুদের উপস্থিতিতে পরিবারের জিম্মায় মুচলেকা নিয়ে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
গতকাল সোমবার রাতে ঘটনাস্থল থেকে আটকের পর ছেড়ে দেওয়া সমন্বয়কেরা হলেন, মোহাম্মদপুর থানার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম রাব্বী।
বাকি দুজন হলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঢাকা মহানগর শাখার সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব আফারহান সরকার দিনার ও মোহাম্মদপুর কেন্দ্রীয় কলেজের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা ও ট্রাফিক সহায়ক মোহাম্মদ জিসান উল্লাহ।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা পরিচয়ে বিশৃঙ্খলা করার চেষ্টা ও পুলিশের সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়ানোর একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ওই ভিডিওতে দেখা যায়, ধানমন্ডি থানার ওসির উদ্দেশে এক তরুণ বলেন, ‘আপনি কেন এইখানে কথা বলতেছেন এইভাবে। আপনি ওসি, আপনি গ্রেপ্তার করলেন না কেন? আমি বলছি, আমি বলছি আপনি গ্রেপ্তার করেন। এরপরই ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশে তিনজনকে হেফাজতে নেয় ধানমন্ডি থানা-পুলিশ।
পুলিশ জানায়, গতকাল রাত ১১টার পর সিভিল পোশাক পরিহিত একদল লোক ধানমন্ডির ৪ নম্বর সড়কে হাক্কানী পাবলিশার্সের চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফার বাসার সামনে অবস্থান নিয়ে ‘আওয়ামী দোসরদের ঠাঁই নাই’ বলে নানা স্লোগান দেন। এরপর বাসার দারোয়ানকে ধাক্কা দিয়ে চতুর্থ তলার বাসায় ঢোকার চেষ্টা করেন তাঁরা।
পরে ৯৯৯-এ কল করে পরিস্থিতি জানিয়ে অভিযোগ করার পর ঘটনাস্থলে আসে ধানমন্ডি থানা-পুলিশ। ঘটনাস্থলে উপস্থিত বৈষম্যবিরোধী নেতারা সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়াই গোলাম মোস্তফাকে গ্রেপ্তার করতে বলেন। কিন্তু পুলিশের কাছে গোলাম মোস্তফা নিজেকে অসুস্থ দাবি করেন এবং রাতে দরজা খুলতে রাজি হননি।
এ ছাড়া মামলা না থাকায় পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার না করতে চাইলে পুলিশের সঙ্গে বিতর্কে জড়ান সেখানে থাকা উপস্থিত নেতারা। একপর্যায়ে তাঁরা পুলিশের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। পরে পরিস্থিতি বেগতিক দেখে ঘটনাস্থলে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ওই তিন নেতাকে হেফাজতে নিয়ে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
ঘটনার বিষয়ে হান্নান মাসুদকে জিজ্ঞেস করা হলে ধানমন্ডি থানায় উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, এমনি খোঁজখবর নিতে এসেছি। একটা ভুল-বোঝাবুঝি হয়েছিল, সেটা মীমাংসা করা হলো। এ ঘটনায় বাইরের অনেকেই জড়িত আছে। সেগুলো আমরা খতিয়ে দেখছি।