জেলা প্রতিনিধি, নওগাঁ : নওগাঁয় স্বামীর দেওয়া আগুনে দগ্ধ গৃহবধূ ফজিলাতুন নেছা (২৪) টানা ৮ দিন মৃত্যুর সাথে লড়াই করে মারা গেছেন।
২৭ আগস্ট মঙ্গলবার সকালে নওগাঁ সদর উপজেলার ভবানীপুর গ্রামে শ্বশুর বাড়িতে স্বামীর দেয়া আগুনে দগ্ধ হোন ফজিলাতুন নেছা। ৩ সেপ্টেম্বর শনিবার সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তার মৃত্যুর বিষয়টি স্বজনরা নিশ্চিত করেছেন।
ফজিলাতুন নেছা নওগাঁ সদর উপজেলার কোমইগাড়ী সাকিদার পাড়ার ফজলুল হোসেনের মেয়ে। প্রায় ৪ বছর আগে ভবানীপুর গ্রামের আতোয়ার রহমানের ছেলে গোলাম রাব্বানীর সাথে তার বিয়ে হয়েছিলো।
ফজিলাতুন নেছার বাবা ফজলুল হোসেন বলেন, পারিবারিক ভাবে গোলাম রাব্বানীর সাথে বিয়ে হয় ফজিলাতুন নেছাকে বিয়ে দেয়া হয়। কিন্তু এর কিছুদন পরই পরকিয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়ে গোলাম রাব্বানী। বিষয়টি ফজিলাতুন নেছা জানতে পেয়ে নিষেধ করলে যৌতুক বাবদ সাড়ে ৩ লাখ টাকা দাবি করেন। এ নিয়ে কলহ দেখা দেয়।
রব্বানীর পরকীয়ায় বাধা দেয়া ও যৌতুক নিয়ে কলহে ফজিলাতুন নেছাকে শারীরিক ও মানষিক নির্যাতন করে আসছিলেন তার স্বামী ও পরিবারের সদস্যরা। এ অবস্থায় গত মঙ্গলবার ২৭ আগস্ট সকালে আবারো ঝগড়া বাধে। এসময় স্ত্রীকে লাঠি দিয়ে শরীরে বিভিন্ন জায়গায় এলোপাতাড়ি মারপিট করে গোলাম রাব্বানী। একপর্যায়ে জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়লে রব্বানী কেরোসিন ঢেলে স্ত্রীর শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়।
ঘটনার জানতে পেয়ে প্রতিবেশীরা গৃহবধূকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য নওগাঁ সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ডাক্তারদের পরামর্শে প্রথমে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাকে ভর্তি করানো হয়। আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৮ দিন পর মৃত্যু মারা যান ফজিলাতুন নেছা।
এদিকে এ ঘটনায় গৃহবধূর বাবা ফজলুল হোসেন বাদী হয়ে জামাই গোলাম রাব্বানীসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে থানায় একটি মামলা করলে পুলিশ গোলাম রাব্বানীকে গ্রেফতার করে।
নওগাঁ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল হক বলেন, গৃহবধূ ফজিলাতুন নেছা মারা যাওয়ার বিষয়টি আমরা শুনেছি। থানায় দায়ের করা মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তর হয়ে যাবে। তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে। মামলায় অন্য আসামীরা পলাতক আছে। তাদেরকে গ্রেফতার করার চেষ্টা চলছে।