শিরোনাম:
নদীর বুকে পানি নেই, কর্মহীন শত শত মাঝি
Iftekhar Ahamed
- আপডেট সময় : ০৫:০৩:৩০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২২ মার্চ ২০২১
- / ১০৫৩ বার পড়া হয়েছে
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ
হাঁটু পানি, কোথাও কোথাও পানি শুকিয়ে চর জেগে উঠেছে। ঘাটে নৌকা সারি সারি করে বাঁধা। অলস সময় পার করছেন মাঝি। নদীতে চর জেগে ওঠা ও পানি না থাকায় ঠিকমতো নৌকা চালাতে পারছেন না মাঝিরা। উপার্জন বন্ধ হওয়ায় পরিবার-পরিজন নিয়ে বিপাকে আছেন তারা।
কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নের ব্রহ্মপুত্র নদের পদ্মার চর নৌকা ঘাটে গিয়ে জানা গেছে, নদীতে পানি না থাকায় কর্মহীন হয়ে পড়েছে মাঝিরা। জীবনধারণের তাগিদে অনেকে কম দামে নৌকা বিক্রি করে পাড়ি দিচ্ছেন রাজধানী ঢাকাসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে।
জানা যায়, জেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তিস্তা, দুধকুমার ও ফুলকুমারসহ ১৬টি নদ-নদীর অববাহিকায় সাড়ে ৪ শতাধিক চরাঞ্চলের বেশির ভাগ মানুষ নৌকায় যাতায়াত করেন। কিন্তু অনেক নদীতে পানি না থাকায় এসব চর ও দ্বীপচরের প্রায় ৫ লক্ষাধিক মানুষের চলাচলের ভোগান্তি বেড়ে গেছে।
পদ্মার চর নৌকা ঘাট থেকে যেতে হয় জেলার চিলমারী, মোগল বাসা, নুন খাওয়া, যাত্রাপুর, রৌমারী, রাজিবপুর, সাহেবের আলগা, ঘোগাদহ, কালির আলগা, মাদারগঞ্জ, কালীগঞ্জ ও দই খাওয়াসহ আরও অনেক স্থানে। কিন্তু বড় সমস্যা হচ্ছে নদীর অনেক স্থানে চর জেগে ওঠায় যাত্রী ও মালামাল পরিবহন করতে নানা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন মাঝিরা।
পদ্মার চর ঘাটের মাঝি সাঈদুর রহমান বলেন, এখানে প্রায় ২০০-২৫০টি নৌকা আছে। নদীতে পানি না থাকায় আমরা ঠিকমতো নৌকা নিয়ে যেতে পারি না। জায়গায় জায়গায় নৌকা আটকে যায়। সময়মতো যাত্রাপুর হাটসহ জেলা শহরে যেতে পারি না। নদীটি যদি খনন করা যেত তাহলে আমাদের নৌকা চালাতে কোনো সমস্যা হতো না।
ঘাটের মাঝি রেজাউল করিম, আক্কাস ও মোস্তাকিন জানান, আমাদের নৌকা চালাতে খুবই সমস্যা হচ্ছে। নদীতে পানি নেই। ৪০ মিনিট পথ যেতে দেড় থেকে দুই ঘণ্টা সময় লাগে। এ ছাড়াও বিভিন্ন জায়গায় চর জেগে ওঠায় নৌকার যাত্রী নেই বললেই চলে।
নারায়ণপুর ইউনিয়নের শমসের ও লিয়াকত আলী জানান, জেলা শহরের সঙ্গে আমাদের দূরত্ব মাত্র ২৫-৩০ কিলোমিটার। তারপরও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে আছি। আজ রাতে কাজের সন্ধানে ঢাকা যাব।
নারায়ণপুর ইউনিয়নের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. মজিবর রহমান বলেন, আমাদের বালাহাট বর্ডার ও পদ্মার চর থেকে কুড়িগ্রামের যাত্রাপুর ঘাট পর্যন্ত অনেক ছোট ছোট নদী। নদীগুলোর ড্রেজিং হলে এখানকার মানুষ খুবই উপকৃত হবে। কারণ নদী খনন হলে ছোট ছোট নদীগুলো আর থাকবে না।
কৃষকরা তখন এখানে আবাদ করতে পারবে। তিনি আরও বলেন, চরের মানুষ ও স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের একমাত্র ভরসা নৌকা। রাস্তা বা অন্য কোনো বাহন না থাকায় এ অঞ্চলের মানুষ জরুরি প্রয়োজনে এমনকি রোগী নিয়ে নৌকায় যাতায়াত করেন।