নাঈম হত্যা মামলায় মূল পরিকল্পনাকারী স্বামী-স্ত্রী আটক
মোঃ জয়নাল আবেদীন জয়/জয়পুরহাট প্রতিনিধিঃ
জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার ধরঞ্জীতে গ্রামে লাউ গাছের নিচে মাটি খুড়তে গিয়ে নাঈম নামে এক যুবকের হাড়গোড় উদ্ধারের ঘটনায় হত্যাকারী স্বামী-স্ত্রীকে বগুড়া সদর উপজেলার পীরগাছা এলাকা থেকে আটক করেছে র্যাব।
আজ বুধবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাতে র্যাব-৫ ও র্যাব-১২ যৌথ অভিযানে তাদের আটক করা হয়।
আটককৃরা হলো, বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার গোপিনাথপুর গ্রামের মোজাম্মেল আলীর ছেলে রেজ্জাকুল ও তার স্ত্রী সাবিনা খাতুন। তারা পাঁচবিবির ধরঞ্জী গ্রামে ভাড়া বাসায় থাকতেন।
জয়পুরহাট র্যাব ক্যাম্পের ভারপ্রাপ্ত কোম্পানি কমান্ডার রফিকুল ইসলাম বলেন, গত ২২ এপ্রিল ঈদের দিন সন্ধ্যায় পাঁচবিবি উপজেলার ধরঞ্জী গ্রামের মাসুদ রানার ছেলে নাঈম বাড়ি থেকে বের হয়ে যান। এরপর তাকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি।
পরে ২৫ এপ্রিল থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন নাঈমের পরিবার। এরপর গত ৯ সেপ্টেম্বর ধরঞ্জী গ্রামের সামছুল ইসলামের বাড়িতে রাজমিস্ত্রীরা নতুন টয়লেট নির্মাণের জন্য মাটি খনন করতে গেলে দুর্গন্ধ বের হলে পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ এসে সেখানের মাটি খুঁড়ে একটি প্যান্ট ও মাথার খুলিসহ হাড় উদ্ধার করে। এ ঘটনায় নাঈমের মা ১০ সেপ্টেম্বর বাড়ির মালিকসহ তিনজনের নামে মামলা করেন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, সাবিনার সঙ্গে নাঈমের পরকীয়া সম্পর্ক ছিল। সেই পরকীয়া সম্পর্কের জেরে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী নাঈমকে হত্যা করে লাশ মাটি চাপা দেয় তারা।
পাঁচবিবি থানার ওসি জাহিদুল হক বলেন, লাশের প্যান্ট, বেল্ট দেখে পরিচয় নিশ্চিত হয়ে নিহতের মা গোলাপী বানু বাদী হয়ে থানায় হত্যা মামলা করেছেন। মামলায় পরকীয়ার জেরে হত্যার হয়েছে বলে উল্লেখ রয়েছে। ঘটনার পর বাড়ির মালিক সামছুল ইসলামকে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়েছিল। পরে তাকে আটক দেখানো হয়েছে। সামছুলের বাড়ির ভাড়াটিয়া এক দম্পতি রেজ্জাকুল ওরফে রাজ্জাক ও তার স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন পলাতক ছিলেন। তাদেরকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ভাড়াটিয়া রাজ্জাকের স্ত্রী সাবিনার সঙ্গে পরকীয়ার কারণে নাঈম হোসেনকে হত্যার পর লাশ গুম করতে মাটি খুঁড়ে পুতে রাখা হয়। আসামীদের বুধবার আদালতে পাঠানো হয়েছে এবং রিমান্ড চাওয়া হবে।
পারিবাড়িক সূত্রে জানা যায় চলতি বছরের ২২ এপ্রিল রাত ৮টার দিকে ধরঞ্জী বাজারে যাওয়ার কথা বলে বাইরে বের হয়ে বাড়ি ফেরেননি। অনেক খোঁজাখুঁজি করে তাকে না পেয়ে ওই মাসের ২৫ এপ্রিল পাঁচবিবি থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন তার মামা ওহেদুল ইসলাম। জিডির পর নিখোঁজ নাঈমের সন্ধানে পুলিশ তৎপর থাকলেও তার সন্ধান পাওয়া যায়নি। অবশেষে সাড়ে চার মাস পর তার লাশ পাওয়া যায়।