অনলাইন ডেস্কঃ
রাজধানী কয়েকটি কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে অধিকাংশ নিত্যপণ্য চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। সপ্তাহের বাজার কিনতে এসে অনেক ধারণ মাষুষ তাদের হতাশার প্রকাশ করছেন।
মাছের মধ্যে রুই-কাতল প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ৩০০ টাকায়। চিংড়ি ৫৫০ থেকে ৫৮০ ও পাঙ্গাশ ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ইলিশ প্রতি কেজি (এক কেজি ওজনের) বিক্রি হচ্ছে ১১০০ টাকায়। এক কেজির কম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৯০০ টাকা কেজিতে।
এছাড়া লাল ফার্মের ডিম প্রতি ডজন ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, এছাড়া হাঁসের ডিম ১৮০ এবং দেশি মুরগির ডিম ২৪০ টাকায় প্রতি ডজন বিক্রি হচ্ছে।
খাসির মাংস প্রতি কেজি ৮৫০ ও গরুর মাংস ৫৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকায়। গত সপ্তাহে বিক্রি হয় ১৭০ টাকায়। সোনালি মুরগি প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ৩০০ টাকায়। লেয়ার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২২০ টাকায়।
বোতলজাত সোয়াবিন তেল ১৪০ টাকা প্রতি লিটার। এছাড়া খোলা তেল বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকায়।
বাজারে সব কিছুর এতো চড়া দাম মনির নামে একজন ক্রেতা তার হতাশার কথা বলেছেন। তিনি জানান, ৫০ টাকার নিচে কোনো তারকারি নেই। একটা লেবু ২০ টাকা। এতো দাম হলে সাধারণ মানুষ আর লেবু কিনতে পারবে না।
কাঁচাবাজারের ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন জানান, রমজানে বেশি দামে বিক্রির আশায় এখন বাজারে লেবুর সর্বরাহ কম। আজ প্রতি হালি ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
খুচরা সবজি ব্যবসায়ী রমজান আলী বলেন, পাইকারি বাজারে সব কিছু বাড়তি। যেকারণে আমরা সামান্য লাভে সবজি বিক্রি করছি। বাড়তি দামের কারণে মানুষ এখন অল্প করে বাজার করছে। তাই আমাদের ব্যবসাও খারাপ যাচ্ছে।
এদিকে খোলাবাজারে পণ্য বিক্রির দ্বিতীয় ধাপে দাম কিছুটা বাড়িয়ে নিধারণ করেছে টিসিবি। এতে প্রতি কেজি তেলের দাম ১০ টাকা বেড়ে ১০০ টাকা হয়েছে। ডাল চিনির দাম ৫ টাকা আগের থেকে বেড়েছে। আর নতুন করে প্রতি কেজি ছোলার দাম ৫৫ টাকা ও খেজুরের দাম ৮০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে খেজুরের বিক্রি এখনও শুরু হয়নি।
জানা গেছে, রমজান উপলক্ষে ৫০০ ট্রাকসেলে পণ্য বিক্রি হচ্ছে। এর মধ্যে রাজধানীতে পণ্য বিক্রি করবে ১০০ ট্রাক। এসব পণ্য আজ থেকে ই-কমার্সের মাধ্যমেও বিক্রি শুরু হয়েছে।
এদিকে করোনাকালে আয়-রোজগার কম নিম্ন আয়ের মানুষের। তার মধ্যে বাজারে নিত্যপণ্যের দামও বাড়তি। তাই সরকারি সংস্থা টিসিবির ভ্রাম্যমাণ ট্রাক থেকে বাজারের চেয়ে কম দামে পণ্য কিনতে বাড়ছে মানুষের লাইন। গত কয়েক দিনে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে টিসিবির পণ্য বিক্রি কার্যক্রম বেড়েছে। সেখানে মানুষের দীর্ঘ লাইন লক্ষ্য করা গেছে।
এ বছর নিত্যপণ্যের দামও বাড়তি থাকায় পণ্য বিক্রি কার্যক্রম বাড়িয়েছে টিসিবি। রমজানে যেসব পণ্যের বেশি চাহিদা থাকে, সেগুলোর ১০ থেকে ১২ শতাংশ টিসিবির মজুত রয়েছে। রমজান উপলক্ষে সংস্থাটি সাশ্রয়ী মূল্যে ২৬ হাজার ৫০০ টন ভোজ্যতেল, ১৮ হাজার টন চিনি, ১২ হাজার টন মসুর ডাল, ৮ হাজার টন ছোলা, ৬ হাজার টন পেয়াজ বিক্রি করবে বলে জানা গেছে।
টিসিবি জানিয়েছে, পহেলা এপ্রিল থেকে ট্রাকসেলে একজন ক্রেতা দিনে ৫৫ টাকা কেজি দরে সর্বোচ্চ ৪ কেজি চিনি, ৫৫ টাকা কেজি দরে ২ কেজি মসুর ডাল, ১০০ টাকা দরে ৫ লিটার সয়াবিন তেল এবং ২০ টাকা দরে ৫ কেজি পেঁয়াজ কিনতে পারবেন। এছাড়া ২ কেজি ছোলা ৫৫ টাকা দরে এবং রমজানের প্রথম দিন থেকে এক কেজি খেজুর ৮০ টাকা দরে পাবেন।
টিসিবি ডিলার জানিয়েছে, বিক্রির জন্য তারা প্রতিদিন এক টন তেল, ৭০০ কেজি করে চিনি ও ডাল এবং ৪০০ কেজি ছোলা বরাদ্দ পাচ্ছেন।