নির্বাচনের ইঙ্গিত দিয়েছে, সুস্পষ্ট সময় এখনো বলেনি-জামায়াতের আমির
স্টাফ রিপোর্টারঃ
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ইঙ্গিত দিয়েছে, সুস্পষ্ট সময় এখনো বলেনি, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সুস্পষ্ট ঘোষণা দিন। সংস্কারকে দ্রুত এগিয়ে নিন। ক্রমান্বয়ে সুস্পষ্ট ঘোষণাটাও দিয়ে দিন। ঘোষণাটা হলে মানুষের মধ্যে একটি আস্থা তৈরি হবে। এ সরকারের কেউ যদি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত হতে চান, তাহলে তাঁদের এ সরকার থেকে চলে যান।
আজ শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) সকালে ঢাকা জেলা জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে কেরানীগঞ্জের ইকুরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান এসব কথা বলেন।
শফিকুর রহমান বলেন, আমরা প্রতিবেশীদের প্রতি অন্যায়ের হাত বাড়াতে চাই না, প্রতিবেশীরাও আমাদের প্রতি হাত বাড়ালে বরদাশত করা হবে না, চাঁদাবাজি বন্ধ করা ও বাজার সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়ার জন্য তিনি সরকারের প্রতি আহবান জানান।
ঢাকা জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসাইনের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি মাওলানা আফজাল হোসাইনের পরিচালিত সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা আবদুল মান্নান, আইনজীবী মশিউল আলম,
নারায়ণগঞ্জ মহানগর আমির আবদুল জাব্বার, নরসিংদী জেলা আমির মাওলানা মোছলেহ উদ্দিন, মুন্সিগঞ্জ জেলা আমির আজম রুহুল কুদ্দুস, ঢাকা জেলা নায়েবে আমির অধ্যক্ষ শাহিনুল ইসলাম, ঢাকা জেলা জামায়াত নেতা অধ্যক্ষ কামাল হোসাইন, মোঃ শাহাদাত হোসাইন, কবিরুজ্জামান, হাসান মাহবুব, অধ্যক্ষ হারুন অর রশীদ, আবদুর রহিম মজুমদার, মাহবুবুর রহমান, আবু সুফিয়ান, ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম প্রমুখ।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির বলেন, স্বৈরাচার শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে গেলেও তাঁর ষড়যন্ত্র এখনো শেষ হয়নি, তিনি বাংলাদেশের প্রতিটি সেক্টরে বসিয়ে রাখা দোসরদের কাজে লাগিয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র করছেন, স্বৈরাচার হাসিনার ষড়যন্ত্র রুখতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। স্বৈরাচারের পরিণতি দেখে আমি এবং আমরা সবাই যেন শিক্ষা নিই।
তিনি আরো বলেন, গত সাড়ে ১৫ বছর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ওপর যে রকম জুলুম করা হয়েছে, বাংলাদেশের অন্য কোনো দলের ওপর সে পরিমাণ জুলুম করা হয়নি। কিন্তু আমরা আগেই বলেছি, আল্লাহ তাআলা আমাদের ক্ষমতায় আনলে আমরা কারও ওপর প্রতিশোধ নেব না, আমরা বৈষম্যহীন ও শোষণমুক্ত একটি কল্যাণরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চাই। স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকার থেকে সবাইকে শিক্ষা নিতে হবে। যে–ই এ পথে হাঁটবে, তাদের জন্য ধ্বংস ও অপমান অনিবার্য।
শফিকুর রহমান আরও বলেন, স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের সময় আমরা দেখেছি ৭-৮ বছরের শিশু পথে নেমে এসেছিল হাতে ইট নিয়ে। তাকে জিজ্ঞেস করা হলো, কেন নেমে এসেছ? সে বলেছিল, স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে নেমে এসেছি। ৭-৮ বছরের শিশু স্বৈরাচারকে চিনতে পারল, তারা নিজেদের চিনতে পারল না। জালিম সরকার জামায়াতে ইসলামীর ১১ জন শীর্ষ নেতাকে হত্যা করেছে। শাপলা চত্বরে হাজার হাজার আলেম ওলামাকে হত্যা করেছে।
শফিকুর রহমান বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে আওয়ামী লীগ গণহত্যা চালিয়েছে। আমরা শান্তি চাই, দেশের মানুষকে শান্তিতে রাখতে চাই। আমরা লুট ও দখলের রাজনীতি করতে চাই না। আল্লাহ তাআলা যদি আমাদের ক্ষমতায় আনেন, তাহলে আমরা ইসলাম ও কোরআনের আলোকে দেশ চালাব।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সাইফুল আলম খান বলেন, অন্যায়-অবিচার বন্ধ করতে চাইলে ন্যায়ভিত্তিক সমাজ কায়েম করতে হবে। ন্যায়ভিত্তিক সমাজ কায়েম করতে পারে একমাত্র ইসলাম। সব তন্ত্রমন্ত্র ব্যর্থ হয়েছে। এ দেশের মানুষের ঘুম ভাঙে আজানের শব্দে। তারা কোরআনের শাসন চায়। কোরআনের শাসন কায়েম হলে মানুষ মুক্তি পাবে। নারীরা তাঁদের অধিকার ফিরে পাবেন। এখনো স্বৈরাচার তাদের হাল ছেড়ে দেয়নি।