নির্বাচনের পর বিদ্যুতের দাম বাড়াতে চায় সরকার
স্টাফ রিপোর্টারঃ
বিদ্যুখাতে ক্যাপাসিটি চার্জের পাশাপাশি উৎপাদন ব্যয় ও ভর্তুকি কমাতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) চাপ থাকলেও আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে দাম বাড়াতে চাচ্ছেনা সরকার। এতে আইএমএফ’র ঋণ পেতে সরকারকে কঠিন অবস্থার মুখোমুখি হতে হচ্ছে।
রিজার্ভ সঙ্কটে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল হতে ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ নিচ্ছে বাংলাদেশ। ইতোমধ্যে গত ফেব্রুয়ারিতে ঋণের প্রথম কিস্তি বুঝে পেয়েছে বাংলাদেশ। আগামী নভেম্বরে দ্বিতীয় কিস্তি গ্রহণের সম্ভাবনা রয়েছে। আর ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে আইএমএফ বেশ কয়েকটি শর্ত দিয়েছিল। এর মধ্যে একটি ছিল ভর্তুকি হ্রাস করার জন্য বিদ্যুতের দাম বাড়ানো।
ক্যাপাসিটি চার্জের পাশাপাশি বিদ্যুতের উৎপাদন ব্যয় ও আয়, এ খাতের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন বিষয় ভুর্তকি হ্রাসসহ বর্তমান অবস্থা নিয়ে বৃহস্পতিবার সকালে সচিবালয়ে বিদ্যুৎ বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. হাবিবুর রহমানের সঙ্গে ঢাকায় সফররত আইএমএফের একটি প্রতিনিধিদলের বৈঠক হয়। এ সময় বিদ্যুৎ বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আইএমএফের বাংলাদেশের মিশন প্রধান রাহুল আনন্দের নেতৃত্বে দলটি ১৫ দিনের সফরে গত ৪ অক্টোবর ঢাকায় আসে। বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও তাদের সহযোগী সংস্থার সঙ্গে তারা ধারাবাহিক বৈঠক করবে। এরপর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারের ঋণের দ্বিতীয় ধাপ মুক্তির বিষয়ে আলোচনার পর তারা ফিরে যাবে।
গত রবিবার প্রতিনিধিদলটি জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের সচিবের সঙ্গে এবং গত বুধবার পেট্রোবাংলা ও বিপিসির চেয়ারম্যানের সঙ্গে বৈঠক করে জ্বালানি খাতের সামগ্রিক বিষয় সম্পর্কে জানতে চেয়েছে। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ভর্তুকি কমানোর তাগিদ দিচ্ছে সংস্থাটি। তবে ভর্তুকি কমাতে গেলে দাম বাড়াতে হবে। কিন্তু নির্বাচনের আগে তেল-বিদ্যুৎ-গ্যাসের দাম বৃদ্ধি করা হলে ভোটের রাজনীতি তলানিতে পৌছানোর আশঙ্কা সরকারের। যে কারনে নির্বাচনের পর দাম বাড়ানোর পরিকল্পনা সরকারের।
২০২২ সালে বিদ্যুৎ খাত ২৭ হাজার ৪৭৭ কোটি টাকাা ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে, যা ২০১৮ সালে ছিলো ৬ হাজার ২০০ কোটি টাকা। সরকারের ইমপ্লিমেন্টেশন মনিটরিং অ্যান্ড ইভাল্যুয়েশন ডিভিশনের (আইএমইডি) সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে মোট ক্ষতি হতে পারে ১ লাখ ১৩ হাজার ৫৩২ কোটি টাকা। গড়ে বার্ষিক ক্ষতি হবে ৫৬ হাজার ৭৬৬ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের (বিপিডিবি) একজন কর্মকর্তা বলেন, বিপিডিবি প্রতি ইউনিটে প্রায় ৫ টাকা লোকসান গুনছে। সরকার ভর্তুকি দিয়ে উৎপাদন খরচ ও বিক্রয় হারের ব্যবধান মেটাচ্ছে।
মুদ্রা তহবিলের শর্ত অনুযায়ী, সরকার বাল্ক বিদ্যুতের শুল্ক প্রায় ১৯ দশমিক ৯২ শতাংশ বাড়িয়ে ৫ টাকা ১৭ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৬ টাকা ২০ পয়সা প্রতি কিলোওয়াট ঘণ্টা (প্রতি ইউনিট) করে। তারপরও বিপিডিবি ব্যাপক লোকসান গুনছে।