মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) দুপুরে নিজ কার্যালয়ে এক আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত তথ্য জানান তিনি।
তিনি বলেন, মামলার তদন্তের স্বার্থেই পরীমনিকে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করা হয়। পরীমনির দেওয়া তথ্যে বেশ কিছু অসংগতি পাওয়া গিয়েছিল। এসব তথ্য যাচাই–বাছাইয়ের জন্য পুনরায় পরীমনিকে রিমান্ডে নিতে আবেদন করা হয়।
মাহবুবুর রহমান বলেন, চিত্রনায়িকা পরীমনি, হেলেনা জাহাঙ্গীরসহ বেশ কয়েজনের ১৫টি মামলার তদন্ত করছে সিআইডি। তদন্ত কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। আসামি ও সাক্ষীদেরও জিজ্ঞাসাবাদ শেষ পর্যায়ে। ফরেনসিক রিপোর্ট হাতে পেলে আগামী এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে পুলিশ রিপোর্ট জমা দেবে সিআইডি।
তিনি বলেন, আমরা ১৫টি মামলার তদন্ত করছি। প্রতিটি মামলার মোটিভ, গতি-প্রকৃতি আলাদা। মামলার প্রাথমিক পর্যায়ের কাজ সাক্ষী-আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ করা, আলামত সংগ্রহ ও তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করা। তবে মাদক মামলার কিছু কিছু ক্ষেত্রে ফরেনসিক ও কেমিক্যাল পরীক্ষার প্রয়োজন ছিল। সেগুলো আমি করতে দিয়েছি। আসামি ও সাক্ষীদের জিজ্ঞাসাবাদ প্রায় শেষ পর্যায়ে।
সিআইডি প্রধান বলেন, ফরেনসিক প্রতিবেদন পেলেই এ ১৫ মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল শুরু করতে পারব। আমরা আশা করছি, আগামী এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে পুলিশি প্রতিবেদন দাখিল করা শুরু হবে।
পরীমনি বা পিয়াসাদের বাসায় মাদক মজুত ও সংগ্রহ করার বিষয়ে কী ধরনের তথ্য পেয়েছে সিআইডি এমন প্রশ্নের জবাবে অতিরিক্ত আইজিপি মাহবুবুর রহমান বলেন, মাদক মামলার আলামত তো পজিশনেই পাওয়া গেছে। সেগুলো আদৌ মাদক কি না তা জানতে ক্যামিকেল ও ফরেনসিক পরীক্ষা করা হচ্ছে।
জব্দ মাদকের উৎস সম্পর্ক সিআইডি কোনো তথ্য পেয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, অনেকেই অনেক রকম তথ্য দিয়েছেন। কেউ বলেছেন বিদেশ থেকে নিয়ে এসেছেন, কেউ বলেছেন বিমানবন্দর থেকে কিনেছেন, কেউ নানা উপায়ে সংগ্রহ করেছেন। কিন্তু যেখান থেকেই সংগ্রহ করা হোক না কেনো, এসব মাদক সংগ্রহে রাখা বা মজুত রাখা আইনত অপরাধ।
এসব আসামির বিরুদ্ধে ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইমের তথ্য উপাত্ত পেয়েছেন কি না জানতে চাইলে সিআইডি প্রধান বলেন, তদন্তের এ পর্যায়ে আমরা মানি লন্ডারিংয়ের তথ্য উপাত্ত ইনকোয়ারি পর্যায়ে আছি। মানি লন্ডারিং মামলার ক্ষেত্রে দুটি পর্যায়। একটি যাচাই বাছাই, আরেকটি ইনকোয়ারি। প্রায় ২২টি জায়গা থেকে রিপোর্ট পেতে হয়। সব রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর যদি মনে হয় মানি লন্ডারিং হয়েছে তাহলে আমরা তদন্ত করব।
রোববার (২২ আগস্ট) পরীমনির আইনজীবী মো. মজিবুর রহমান রাজধানীর বনানী থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় চিত্রনায়িকা পরীমনির জামিন চেয়ে আবেদন করেছেন।
গত ৪ আগস্ট রাজধানীর বনানীর বাসা থেকে পরীমনিকে আটক করে র্যাব। সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে তার বাসায় অভিযান চালায় র্যাব। অভিযানে পরীমনির বাসা থেকে বিপুল পরিমাণ মাদক পাওয়ার দাবি করে র্যাব। ৫ আগস্ট র্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মাদকে আসক্ত হওয়ার কথা স্বীকার করেন পরীমনি, দাবি র্যাবের।
গত বুধবার (১৮ আগস্ট) রাজধানীর গুলশান থানায় দায়ের করা মাদকসহ বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত নেত্রী হেলেনা জাহাঙ্গীর আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
এর আগে গত ২৯ জুলাই রাতে হেলেনা জাহাঙ্গীরের বাসা থেকে বিপুল পরিমাণ বিদেশি মদ, ক্যাসিনো খেলার সরঞ্জাম, ওয়াকিটকি ও বিদেশি চাকু উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানায় র্যাব। ওইদিন রাতে মিরপুরে হেলেনার জয়যাত্রা ফাউন্ডেশন এবং জয়যাত্রা আইপি টিভি ভবনেও অভিযান চলানো হয়।
বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।