পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি ও উন্নয়নে সেনাবাহিনী-৩
- আপডেট সময় : ০১:৪১:০২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ অগাস্ট ২০২৫
- / ১২২১ বার পড়া হয়েছে
পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি ও উন্নয়নে সেনাবাহিনী-৩
মোফাজ্জল হোসেন ইলিয়াছঃ
সাপ্তাহিক বাজারের দিনগুলোতে সেনাবাহিনীর চিকিৎসকের মাধ্যমে দুর্গম এলাকায় বসবাসকারী পীড়িত উপজাতি ও বাঙালিদের বিনামূল্যে চিকিৎসা ও ওষুধ প্রদানের ব্যবস্থা করা হয়। জন্মকালীন মৃত্যুরোধে সেনাবাহিনী কর্তৃক ধাত্রী প্রশিক্ষণ প্রদানের আয়োজন পার্বত্য তিন জেলায় মা ও শিশু মৃত্যুর হার অনেক কমিয়ে দিয়েছে, যা ‘মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোল’ অর্জনে বিশেষভাবে সহায়ক হয়েছে।
করোনায় যখন সারাদেশের মানুষ নিজের জীবন বাঁচাতে ব্যস্ত ঠিক তখনই খাগড়াছড়ি, বান্দরবান এবং রাঙ্গামাটির দুর্গম অঞ্চলের মানুষকে হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়া, বিভিন্ন প্রকার চিকিৎসাসেবা প্রদান এবং জনস্বার্থমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে সেনাবাহিনী।
পার্বত্য চট্টগ্রামে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের চিকিৎসাসেবায় সেনাবাহিনীর এই সহায়তা সব সময় চলমান রয়েছে এবং ভবিষ্যতেও চলমান থাকবে।
সরকারের নির্দেশনায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পাহাড়ের অন্ধকারাচ্ছন্ন মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে হাতে নিয়েছে নানা পরিকল্পনা। সেনাবাহিনীর সদস্যরা পার্বত্যাঞ্চলে দিনরাত পরিশ্রম করে রাতারাতি সেখানে যোগাযোগ ব্যবস্থায় বিশাল পরিবর্তন ঘটিয়েছে।
সেনাবাহিনী এ পর্যন্ত সমগ্র পার্বত্য চট্টগ্রামে ১৫৩২ কিমি নতুন রাস্তা তৈরি, ভূমিধস বা অত্যধিক বৃষ্টিতে ভেঙে পড়া রাস্তা মেরামত, যাতায়াতের সুবিধার্থে ছোট ছোট নদী ও খালের ওপর সেতু ও সাঁকো তৈরিতে অগ্রণী ভূমিকা রেখে চলেছে।
বাংলাদেশের সর্বাধিক উচ্চতাবিশিষ্ট থানচি-আলীকদম সড়ক, বাঙ্গালহালিয়া-রাজস্থলী সড়ক, বাঘাইহাট-সাজেক সড়ক, বান্দরবান-বাঙ্গালহালিয়া-চন্দ্রঘোনা-ঘাগড়া সড়ক প্রকল্পটি বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কর্তৃক নির্মাণ করা হয়েছে। রাজস্থলী-ফারুয়া-বিলাইছড়ি-জুরাছড়ি-বরকল সড়কটিও সেনাবাহিনী কর্তৃক নির্মাণ করা হয়েছে।
তিন পার্বত্য জেলার অরক্ষিত সীমান্ত এলাকাকে নজরদারির আওতায় আনা ও অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার জন্য দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চল ও উপজাতি সন্ত্রাসীদের প্রতিকূল অবস্থান মোকাবিলা করে ১০৩৬ কিমি দীর্ঘ সীমান্ত সড়ক (খাগড়াছড়ির রামগড়ের ফেনী নদীর কূল হতে রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ির সাজেক, বরকল, বিলাইছড়ি হয়ে বান্দরবানের রুমা, থানচি, আলীকদম, নাইক্ষংছড়ির ঘুমধুম, টেকনাফ) নির্মাণে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী নিবেদিতপ্রাণ হয়ে দায়িত্ব পালন করছে।
পার্বত্যাঞ্চলের উপরোক্ত সীমান্ত সড়কপ্রকল্প বাস্তবায়ন হলে পার্বত্য জেলাগুলোর সীমান্ত নিরাপত্তা নিশ্চিতের সঙ্গে সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা ও পর্যটন শিল্পের ব্যাপক উন্নয়ন হবে। এছাড়াও ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার, সীমান্ত এলাকার কৃষিপণ্য দেশের মূল ভূখন্ডে পরিবহনের মাধ্যমে এই অঞ্চলের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন, শিল্প, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, তথ্যপ্রযুক্তি ও জীবনমানের ব্যাপক পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।