সততার দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন পাবনার চাটমোহর উপজেলার বাহাদুরপুর গ্রামের স্বপ্না খাতুন নামে এক নারী। অন্যের বাড়িতে অযত্নে-অবহেলায় পড়ে থাকা প্রায় দুই কেজি ওজনের একটি ‘কষ্টিপাথর’ উদ্ধার করে পুলিশের হাতে তুলে দেন তিনি।
শনিবার দুপুরে সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (চাটমোহর সার্কেল) সজীব শাহরীনের হাতে পাথরটি তুলে দেন। স্বপ্না মথুরাপুর ইউনিয়নের বাহাদুরপুর গ্রামের গোলজার শেখের মেয়ে।
স্বপ্না খাতুন জানান, কয়েক বছর ধরে একই গ্রামের সাজু হোসেনের স্ত্রী বেবী খাতুন একটি কালোপাথর শিল-নোড়া হিসেবে ব্যবহার করছিলেন। পাথরটি কোনো স্বাভাবিক পাথর নয়, এমন ভেবে কৌতুহল হয় স্বপ্না খাতুনের।
তিনি ১ হাজার টাকা দেয়ার কথা বলে বেবী খাতুনের কাছ থেকে ওই পাথর নিয়ে সরাসরি পৌর শহরের মির্জা মার্কেট এলাকায় রোজি কুটির শিল্প নামে একটি সোনার দোকান যান। সেখানে পরীক্ষা করে ওই সোনার দোকানি পাথরটি মূল্যবান ‘কষ্টিপাথর’ বলে জানান।
কিন্তু তার কথায় বিশ্বাস না হওয়ায় পুনরায় দোলবেদীতলা এলাকার রায় জুয়েলার্সের মালিক রনি রায়কে পাথরটি দেখান। সেখানে ওই পাথরের ওপর সোনা ঘষে এবং অ্যাসিড-ছাই দিয়ে পরীক্ষা করে পাথরটি ‘কষ্টিপাথর’ বলা হয়।
এরপর তিনি মূল্যবান ওই পাথরটি এএসপি সজীব শাহরীনের হাতে তুলে দেন। এদিকে সততার দৃষ্টান্ত দেখানোয় স্থানীয়দের প্রশংসায় ভাসছেন স্বপ্না খাতুন।
এমসি কলেজে গণধর্ষণ: গাড়িটি ধুয়ে ধর্ষণের আলামত নষ্ট করতে চেয়েছিল তারা
স্বপ্না খাতুন যুগান্তরকে বলেন, দেখেই মনে হয়েছিল পাথরটি মূল্যবান। পরীক্ষা করে নিশ্চিত হওয়ার পর সেটি (কষ্টিপাথর) এএসপি স্যারের কাছে দিয়েছি।
সততার জন্য সরকারিভাবে পুরস্কৃত করা হলে নেবেন কিনা- জবাবে তিনি বলেন, ওই নারীকে (বেবী খাতুন) টাকা দিতে চেয়েছিলাম। আমি গরিব মানুষ। এখন টাকা দেব কোথা থেকে? তবে সরকারিভাবে সহযোগিতা করলে উপকৃত হতাম।
এ ব্যাপারে সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (চাটমোহর সার্কেল) সজীব শাহরীন বলেন, স্বপ্না খাতুন নামে ওই নারী এসে আমার কাছে একটি কালো পাথর দিয়েছেন। স্থানীয় স্বর্ণকাররা পাথরটি কষ্টিপাথর বলে জানিয়েছেন। পাথরটি থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে। তবে সেটি কষ্টিপাথর কিনা সেটা পরবর্তীতে যাচাই করে নিশ্চিত হওয়া যাবে। তবে ওই নারীর উদ্দেশ্য সৎ ছিল বলে জানান তিনি।
চাটমোহর থানার ওসি আমিনুল ইসলাম বলেন, স্বপ্না থাতুন নামে ওই নারী থানায় এসে একটি পাথর জমা দিয়েছেন। তবে সেটি সত্যিই কষ্টিপাথর কিনা পরীক্ষা করার জন্য প্রত্নতত্ত্ব দফতরে পাঠানো হবে। নিশ্চিত না হয়ে কোনো কিছু বলা সম্ভব না।