প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, প্রাকৃতিক নানা দুর্যোগ মোকাবিলার পাশাপাশি তার সরকারকে ষড়যন্ত্রকারীদের সৃষ্ট মনুষ্য দুর্যোগও মোকাবিলা করতে হয়। শুক্রবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকালে জাতির পিতার জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে ভাষণ প্রদান দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক সভায় এ কথা বলেন তিনি। গণভবন থেকে ঐ আলোচনা সভায় ভিডিও কনফারেন্সে যোগ দেন তিনি।
তিনি বলেন, “৭৫ এর ১৫ আগস্ট যে ঘাতকের দল জাতির পিতাকে হত্যা করেছিলো, তার দোসর যারা, তারা এ দেশে কখনও স্থিতিশীল সরকার থাকুক তা তারা চায়নি, যার জন্য মাঝে মাঝেই চেষ্টা করে একটা অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করতে চায়। এ প্রচেষ্টা যখন চালায় তখন আমরা দেখি অগ্নিসংযোগ করে জীবন্ত মানুষকে হত্যা করা অথবা মানুষকে খুন করা অথবা নানাধরনের ঘটনা ঘটানো। আমাদের সব অবস্থাই মোকাবিলা করতে হয়।”
মানুষের আস্থা ও সমর্থন আছে বলেই এসব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করা সম্ভব হচ্ছে উল্লেখ করে প্রধান আরও বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ওপর এদেশের মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস আছে, যে কারণে তারা আমাদের বারবার নির্বাচিত করেছে বলেই তাদের সেবা করতে পেরেছি। দীর্ঘ সময় একটু ক্ষমতায় থাকতে পেরেছি বলেই উন্নয়নগুলো দৃশ্যমান হচ্ছে। উন্নয়নগুলো করতে পারছি যার সুফল দেশের মানুষ ভোগ করছে।
আলোচনায় ৪৬ বছর আগে জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে জাতির পিতা দেয়া ভাষণের বিভিন্নর দিক আলোকপাত করেন প্রধানমন্ত্রী। এতটা দিন পরও সমানভাবে প্রাসঙ্গিক জাতির পিতা ভাষণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, সে সময় যে কথাগুলো তিনি বলে গিয়েছিলেন, আমরা কিন্তু এখনও আন্তর্জাতিকভাবে সে ইস্যুগুলো নিয়েই কাজ করছি।
আরও পড়ুনঃ দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থাকায় সুফল পাচ্ছে দেশের মানুষ: প্রধানমন্ত্রী
তিনি পরিবেশের কথা বলেছেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগে মানুষের ক্ষতি কীভাবে মোকাবিলা করা যায় সেকথা বলেছেন, তিনি দরিদ্র মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের কথা বলেছেন, মানবাধিকারের কথা বলেছেন, ন্যায় বিচারের কথা বলেছেন, তিনি আর্থসামাজিক উন্নয়নের কথা বলে গেছেন, রোগ শোক নানা ধরনের দুর্যোগ মোকাবিলার আহ্বানও তিনি জানিয়ে গেছেন।
সকলের সাথে বন্ধুত্ব, কারও সাথে বৈরিতা নয়; জাতির পিতার দেখানো দেশের পররাষ্ট্রনীতির মূলনীতি এখনও তার সরকার অনুসরণ করে তার সরকার দেশের আর্থ সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন ঘটিয়ে চলেছেন যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।
কূটনীতিকদের উদ্দেশ্যে সরকারপ্রধান বলেন, কূটনীতিক মিশনের দায়িত্বও এখন পরিবর্তন হয়েছে। এখন শুধু রাজনৈতিক কূটনীতি না, অর্থনৈতিক কূটনীতিও। এখন কূটনীতিটা ইকোনমিক ডিপ্লোমেসি তে চলে গেছে। ব্যবসা বাণিজ্যে প্রসার ঘটানো, সকলের সঙ্গে মিশে কীভাবে অর্থনৈতিক স্বাবলম্বিতা অর্জন করা যায়। উন্নয়ন করা যায়, একে অপরকে কীভাবে সহযোগিতা করা যায়। একে অপরকে সহযোগিতা মধ্যে দিয়ে বিশ্বে শান্তি কীভাবে প্রতিষ্ঠা করা যায়, সেভাবেই আমাদের ডিপ্লোমেসি আমাদের চালাতে হবে।
অনুষ্ঠানে বৈশ্বিক মহামারি করোনা সংকট নিয়েও কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। করোনার কারণে যাতে সংকট না হয় সেজন্য খাদ্য উৎপাদন, বিতরণ ও দরিদ্র মানুষকে বিনা পয়সায় খাদ্য দেয়া কর্মসূচি বাড়ানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে সরকার যোগ করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি রমনার ইস্কাটনে নবনির্মিত ফরেন সার্ভস একাডেমীর ভবন উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। ফরেন সার্ভিস একাডেমীতে উপস্থিত ছিলেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, পররাষ্ট্রসচিবসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।