DoinikAstha Epaper Version
ঢাকাশনিবার ২৩শে নভেম্বর ২০২৪
ঢাকাশনিবার ২৩শে নভেম্বর ২০২৪

আজকের সর্বশেষ সবখবর

ফরিদপুরে কৃষকের উন্নয়নে ক্ষুদ্র কৃষক উন্নয়ন ফাউন্ডেশন

Ellias Hossain
আগস্ট ১৯, ২০২৩ ৭:৩০ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ফরিদপুরে কৃষকের উন্নয়নে ক্ষুদ্র কৃষক উন্নয়ন ফাউন্ডেশন

মামুনুর রশীদ/ফরিদপুর প্রতিনিধিঃ

গ্রামীণ বাংলার কৃষক পরিবারের জন্য কিছু কিছু সরকারী প্রতিষ্ঠান দারুণ উদ্দীপনা নিয়ে কাজ করছেন। কিন্ত সেই প্রতিষ্ঠানগুলো সহসায় নিজেদেরকে প্রচারের মাধ্যেমে উম্মেচন না করলেও প্রতিনিয়ত উপকৃত হচ্ছেন বাংলাদেশের শত শত কৃষক পরিবার। কৃষকদের উন্নয়ন নিয়ে নিরলসভাবে যে সকল প্রতিষ্ঠান কাজ করে যাচ্ছেন তাদের মধ্যে ঠিক আড়ালে থাকা প্রতিষ্ঠানের নাম ক্ষুদ্র কৃষক উন্নয়ন ফাউন্ডেশন ।

মূলত প্রতিষ্ঠানের মিশন এবং ভিশনই হচ্ছে একমাত্র কৃষকদের উন্নয়ন। কৃষকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে ভর্তুকিতে তাদের হাতে পৌছে দিচ্ছে বীজ সার ও কৃষি পন্য । এছাড়া যাদের কৃষি কাজ করতে আর্থিক সাহায্য দরকার বিনা সুদে বিনা জামানতে নামমাত্র সার্ভিস চার্জে তাদের হাতে পৌঁছে দিচ্ছেন কৃষি ঋণ। একাজের জন্য বাড়ি বাড়ি গিয়ে উঠান বৈঠকের মাধ্যমে আয়বর্ধনমুলক বসতভিটায় শাক সবজি চাষ,পুকুরে মাছ চাষ,গবাদিপশু পালনের ব্যবস্থাসহ প্রতি সপ্তাহে তদারকির ব্যবস্থা। উপকার ভোগীদের ছেলেমেয়েরা যেন লেখাপড়া করতে পারে তার জন্য বিশেষ ঋণের ব্যবস্থা করার পাশাপাশি সকল কৃষক যেন আদর্শ স্মার্ট কৃষকেই পরিনত হতে পারে বিভিন্ন রকম প্রকল্প হাতে নিয়েছে ক্ষুদ্র কৃষক উন্নয়ন ফাউন্ডেশন।

বিশেষ করে কৃষকের সংসারের সকল খাদ্য পন্য নিজেই উৎপাদন করা। বাড়িতে সকল ধরনের দেশীয় ফল গাছ রোপন করা। বাড়িতে বাধ্যতামুলক তালগাছসহ কমপক্ষে ৩/৪ টি গাছ রোপন নিশ্চিত করাসহ বাল্যবিবাহ রোধ, প্রাথমিক স্বাস্থ্য নিশ্চিত করাসহ স্মার্ট কৃষক পরিবার গঠনে অগ্রণী ভুমিকা পালন করছে প্রতিষ্ঠানটি। বাংলাদেশে ২০০ টি উপজেলায় ক্ষুদ্র কৃষক উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের কার্যক্রম চালু রয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলায় বেশ সফলতা ও সুনামের সাথে কার্যক্রম চালু রয়েছে।

ভাঙ্গা উপজেলা কৃষক উন্নয়ন উন্নয়ন অফিস সুত্র জানায়, কৃষি হচ্ছে গ্রামীণ সমাজের মহান ও আদি পেশা। বলতে গেলে বর্তমানে বিভিন্ন কারনে অধুনা বিলুপ্তির পথে আমাদের কৃষি পেশা। কিন্তু এই পেশা বিলুপ্তি হলে জনগণ কি খেয়ে জীবন ধারণ করবে এটাই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। আমাদের সকলের উচিত এই পেশা নিয়ে কাজ করার। কারন সবার আগে কৃষকের উন্নয়ন দরকার। কৃষক পরিবারের সার্বিক উন্নয়নের কথা ভেবেই বাংলাদেশ সরকার ২০১৪ সাল থেকে ক্ষুদ্র কৃষক উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের মাধ্যেমে সারাদেশে একটি প্রকল্প নিয়ে কাজ শুরু হয়।

পরবর্তীতে ২০১৮ সালে প্রজেক্ট থেক উন্নীত করা হয় আর্থিক উন্নয়নের খাতে। ভাঙ্গা উপজেলায় প্রাথমিকভাবে ক্ষুদ্র কৃষক উন্নয়ন ফাউন্ডেশন ১২টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। বর্তমানে ৬০০ সদস্য বিশিষ্ট সমিতির মাধ্যেমে কাজ করে যাচ্ছেন। সমিতির ৩০ সদস্য বিশিষ্ট সদস্যদের ঋণ প্রদাব করা হয় সুদ্মুক্ত। সে হিসেবে ভাঙ্গায় এ পর্যন্ত ক্ষুদ্র কৃষক উন্নয়ন ফাউন্ডেশন ৬০০ সদস্যদের মাঝে এক কোটি ৫৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা ঋণ বিতরণ করেছেন। ঋণ বিতরণের বিপরীতে ঋণ আদায়ের কাজ সন্তোষজনভাবে উঠে আসছে বলে ক্ষুদ্র কৃষক উন্নয়ন ফাউন্ডেশন ভাঙ্গা অফিস সূত্র জানায়।

উপজেলার আলগী ইউনিয়নের আরুয়াকান্দির উপকারভোগি গঞ্জর শেখ বলেন, কৃষকদের নিয়ে সত্যিকার অর্থে যদি সরকারী কোন প্রতিষ্ঠান কিছু করে থাকেন এর মধ্যে সবার আগে বলবো ক্ষুদ্র কৃষক উন্নয়ন অফিসের কথা। তার মতে, কৃষকদের উন্নয়ন সবাই ভাবে কিন্তু কেউ করে না। ভাঙ্গা ক্ষুদ্র কৃষক উন্নয়ন ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠান কৃষকদের নিয়ে যেমন ভাবে বাস্তবে ঠিক তেমনি করেন আমাদের কৃষকদের জন্য।

চুমুরদি ইউনিয়নেরপুর্ব সদরদী গ্রামের এনায়েত শেখ বলেন, আমি পরিকল্পনাবিহীন একটি সময়ে চাষাবাদ করতাম। ফসল পেলেও পরিবারে অভাব লেগেই থাকতো। এলাকার একজন শুভাকাঙ্ক্ষীর কথায় প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়েপরিকল্পনামাফিক চাষাবাদ শুরু করি। ক্ষুদ্র কৃষক উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের সহযোগিতা নিয়ে ভাল আছি। আমার সংসার বেশ সচ্ছলতায় ভোরে উঠেছে। সরকারি প্রতিষ্ঠানটি শুধু প্রশিক্ষনই দেয় না পাশাপাশি পরিবারের উন্নয়নে সকল ধরনের পরামর্শসহ তদারকি করে। কৃষক পরিবারের আর্থিকসংকট দেখা দিলে তারা ঋনের ও ব্যবস্থা করে থাকেন বলে তিনি ধন্যবাদ জানান বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। দেশের কৃষকদের জন্য তিনি ক্ষুদ্র কৃষক উন্নয়ন ফাউন্ডেশন করার মধ্যে দিয়ে শত শত কৃষক পরিবারের ভাগ্যর উন্নয়নে অপরিসীম ভূমিকা রাখছেন বলে।

ভাঙ্গা ক্ষুদ্র কৃষক উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা শাহ আলম জানান, কৃষকদের সাথে কাজ করতে গিয়ে যে বিষয়টি উপলব্ধি অর্জিত হয়েছে রাষ্ট্রের প্রেসিন্ডেন্ট থেকে শুরু করে পথের সাধারণ মানুষ সকলের খাবার যোগান দেন যে কৃষক পরিবার গুলো তারা কিন্তু আজ অনেকেই ভালো নেই। সরকার ছাড়া তাদের খবর কেউ না রাখায় তাদের ফলানো ফসল থেকে বছরের পর বছর লাভের মুখ না দেখেও তার বপন করা প্রতিটি বীজে সারা জীবন ধরে সফলতার আশা খুজতে থাকে।

পরিবার পরিজনের পেশা হিসেবে তাদের সন্তানেরাও কৃষক পরিচয় দিতে লজ্জা বোধ করছে। কৃষিকাজের সাথে জড়িত অধিকাংশ পেশার মানুষ আজকাল ভ্যান অটো, পোশাক বিভিন্ন কারখানায় চাকরি নিচ্ছে। নিরুপায় হয়ে কেউ কেউ এই পেশা চালিয়ে গেলেও তাদের ছেলেমেয়েদের এই পেশায় আনতে চাচ্ছেন না কেউ। ফলে দিন দিন কৃষকের সংখ্যা কমে যাচ্ছে ।

তিনি আরও বলেন, অন্যদিকে জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে ভোক্তার সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে। ফলে খাদ্য পন্যর দাম বাড়ার সাথে খাদ্যে ভেজাল ও বাড়ছে। এভাবে যদি চলতে থাকে তাহলে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের হাতে হয়তো অর্থ থাকবে কিন্তু খাবার থাকবে না। যদি খাবার থাকে তাহলে নিরাপদ খাদ্য থাকবে না। অতীত ইতিহাস আমাদের গোলাভরা ধান ছিল গোয়ালভরা গরু ছিল। পুকুর ভরা মাছ ছিল। কোন কিছুরই তাদের অভাব ছিল না। আজকাল ফসল ফলাতে ভয় পায় কৃষক পরিবারে। কারন জমির কাজে শ্রমিক সংকট, সঠিক কৃষি পন্য, বীজ ও সার পানির অভাবের কথা ভেবে কৃষি কাজের থেকে প্রান্তিক কৃষক পরিবারগুলো। বাংলাদেশ সরকার গ্রামীণ বাংলার কৃষক পরিবার বাঁচাতে ক্ষুদ্র কৃষক উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের মাধ্যেমে সারাদেশের কৃষক পরিবারের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন বলে জানান।

বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।
সেহরির শেষ সময় - ভোর ৪:৫৭
ইফতার শুরু - সন্ধ্যা ৫:১৫
  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৫:০২
  • ১১:৪৭
  • ৩:৩৬
  • ৫:১৫
  • ৬:৩১
  • ৬:১৬