ফরিদপুরে ঢিলেঢালা হরতাল, আটক-৩৫, আওয়ামীলীগের হরতাল বিরোধী বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ।
মামুনুর রশীদ/ফরিদপুর প্রতিনিধিঃ
ফরিদপুরে ঢিলেঢালা হরতাল পালিত হয়েছে। তবে হরতালচলাকালীন সময়ে সাধারণ মানুষের জীবন যাত্রায় তেমন কোন প্রভাব ফেলতে পারেনি। নিত্যদিনের মত স্বাভাবিক ছিল সকল কিছু। অফিস আদালত ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা ছিল। রাস্তায় দূরপাল্লার গাড়ি চলাচল করেছে। স্থানীয় যানবাহন অটোরিক্সা, রিকশা, ছোট পিকআপ ,ট্রাক ও ভ্যান চলাচল করেছে। দুরপাল্লার পরিবহন গাড়ি গুলো চলাচল করলেও নিরাপত্তাজনিত কারণে যাত্রীছিল কম।
শহরের গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলোতে পুলিশ ও প্রশাসন মোতায়েন করা ছিল। যাতে করে অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে পারে। পুলিশ ও প্রশাসনের কর্মকর্তা ও সদস্যরা বাজার , কোর্টপাড় , বাসস্টান্ড ও রাস্তাসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোকে কঠোর নজরদারি ছিল দৃশ্যমান। হরতাল সমর্থনকারী বিএনপি ও তার অঙ্গ সংগঠনের নেতা কর্মীদের কোথাও হরতাল পালন করতে দেখা যায়নি।
হরতালের আতঙ্ক সৃষ্টি করতে রাতে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি সম্বলিত আওয়ামীলীগের একাধিক ব্যানারে আগুন দিয়ে পুড়িয়েছে দুর্বৃত্তরা। সেখান থেকে অবিস্ফোরিত ২টি ককটেল উদ্ধার করে পুলিশ। শনিবার দিবাগত রাত পৌনে ২ টার দিকে শহরের গোয়ালচামট মাইক্রোস্ট্যান্ডের সামনে এঘটনা ঘটে।
ফরিদপুরের কোতোয়ালি থানার ওসি এম. এ জলিল বলেন, রবিবারের হরতালে বিএনপি-জামাত আতঙ্ক বিরাজ করতে কিছু সন্ত্রাসী আওয়ামীলীগের একাধিক ব্যানারে আগুন ধরিয়ে দেয়। পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনা স্থলে পৌছালে সন্ত্রাসীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল মারে। পুলিশ ৩ রাউন্ড শট গানের গুলি ছুড়লে তারা পালিয়ে যায়। পরে সেখান থেকে দুটি অবিস্ফোরিত ককটেল উদ্ধার করা হয়।
অপরাধীদের ধরতে অভিযান চলছে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, ফায়ার সার্ভিস এসে রাস্তার পাশের ব্যানারের আগুন নেভায়। তিনি আরও বলেন, হরতালের জন্য যে কোন ধরণের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে প্রস্তুত ছিল পুলিশ কোন দলের নেতা কর্মী বা কেউ যদি কোন ধরণের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে তা কঠোরভাবে প্রতিহত করার সকল পদক্ষেপ হরতালের জন্য রাখা ছিল।
এছাড়া হরতাল নাশকতা সন্দেহে ৫ বিএনপি ও যুবদল নেতাসহ ৩৫ জনকে আটক করেছে পুলিশ। শনিবার রাতে তাদেরকে আটক করা হয় বলে নিশ্চিত করেছেন ভাঙ্গা থানার পুলিশ।রোববার বিকেলে আটককৃতদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ জানায় বিএনপির হরতালে ভাঙ্গা পৌরসভার বটতলা এলাকায় ভোররাতে দুর্বৃত্তরা একটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে উপস্থিত হয়ে দুর্বৃত্তরা পুলিশের উপস্থিতি আঁচ করতে পেরে পালিয়ে যায়। এসময় অবিস্ফোরিত দুটি ককটেল উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া হরতাল চলাকালীন সময়ে ভাঙ্গায় কোন ধরনের অপ্রিতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। মানুষের জীবন যাত্রা ছিল স্বাভাবিক।
ভাঙ্গা থানার ওসি জিয়ারুল ইসলাম বলেন, হরতাল নাশকতা সন্দেহ ভাঙ্গা বিএনপি নেতা সাবেক চেয়ারম্যান নাসিমুল হক মিলন, মণি মুনশী, যুবদল নেতা প্রিন্স ও ওয়াদুদসহ ৩৫ জনকে আটক করেছে পুলিশ। তাদের মধ্যে শনিবার রাতে ভাঙ্গা পৌরসভার সামনের থেকে ঢাকা থেকে ছেঁড়ে আসা একটি যাত্রীবাহী বাসে তল্লাশি চালিয়ে ৩০ জনকে আটক করা হয়েছে। এরা ঢাকা থেকে বিক্ষোভ সমাবেশে যোগ দিয়ে বাড়িতে ফিরছিল। গতকাল বিকেলে তাদেরকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
আওয়ামীলীগের হরতাল বিরোধী বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশঃ-
এদিকে জেলার ভাঙ্গায় হরতাল বিরোধী বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ ভাঙ্গা উপজেলা শাখার নেতৃবৃন্দ। আজ রবিবার বিকেলে ৫ টার দিকে ভাঙ্গা পৌরসভার নতুন ভবন এলাকার আওয়ামীলীগ কার্যালয় থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করার পর উপজেলা পরিষদের সামনে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মিলিত হয়।
এতে বক্তব্য রাখেন, ভাঙ্গা উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি খন্দকার সাইফুল ইসলাম মিরন, সাধারণ সম্পাদক আকরামুজ্জামান রাজা, সাংগঠনিক সম্পাদক শরীফুজ্জামান, যুবলীগ নেতা শেক শাহিন, জাকারিয়া মাতুব্বর, জিতু মুনশী, ছাত্রলীগ নেতা আবীর মুনশী বিতু প্রমুখ।