ফরিদপুরে প্রথম ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যু
মামুনুর রশীদ/ফরিদপুর প্রতিনিধিঃ
ফরিদপুরে গত এক সপ্তাহ ধরে ডেঙ্গুর প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলায় ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলছে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে হাসপাতালগুলতে প্রতিনিয়ত ডেঙ্গুর রোগীদের ভর্তির পাওয়া যাচ্ছে।
এ জেলায় প্রথম বারের মত চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার (২১ জুলাই) ভোরে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে জাহানারা বেগম নামে একজন নারীর মৃত্যু হয়েছে এবং নতুন করে আরও ৫২ জন ডেঙ্গু রোগী জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে বলে জেলা সিভিল সার্জন অফিস কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে।
ডেঙ্গুতে মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক এনামুল হক সাংবাদিকদের জানান, শুক্রবার ভোরে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জাহানারা বেগমের মৃত্যু হয়েছে। এরআগে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিতে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে রাজবাড়ি জেলা সদরের দাদশী ইউনিয়নের আগমরী গ্রামের মো. ইউনুসের স্ত্রী জাহানারা বেগম ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ফরিদপুরে একজন রোগী এই প্রথম মারা গেলেন বলে তিনি জানান।
এদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরও ৫২ জন ডেঙ্গু রোগী ফরিদপুরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। বর্তমানে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ১৬৩ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় জেলার বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়েছেন ৩১ জন।
জেলা সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা গেছে, জেলায় এপর্যন্ত ৫০৯ জন ডেঙ্গু রোগী সনাক্ত হয়েছেন। এর মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়িতে ফিরেছেন ৩৪৫ জন। শুক্রবার (২১ জুলাই) এই প্রথম একজন মারা গেলেন। ডেঙ্গুতে আক্রান্তদের মধ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেই ভর্তি রোগীর সংখ্যা ১০২ জন। ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে ১০ জন, বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ছয়জন, ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ছয়জন, নগরকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আটজন, আলফাডাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সাতজন, সদরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তিনজন, মধুখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৯ জন ও চরভদ্রাসন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দুইজন রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। জেলার সালথা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কোনো ডেঙ্গু রোগী ভর্তি নেই। ডেঙ্গুর প্রকোপ বৃদ্ধি প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে ফরিদপুর পৌরসভার মেয়র অমিতাভ বোস বলেন, এডিস মশার লার্ভা নিধনে ফরিদপুর পৌরসভা থেকে ওষুধ স্প্রে করা হচ্ছে।
পৌরসভার কাউন্সিলরদের জনগণকে সচেতন করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মাইকিং ও লিফলেট প্রচারের মাধ্যমে জনগণের উদ্দেশ্যে কয়েকদিন ধরে সচেতন তামূলক পরামর্শ প্রচারণা করা হচ্ছে। এছাড়া মশা নিধনে ফগার মেশিন ব্যবহার করা হচ্ছে বলে জানান এ মেয়র।