ফুলবাড়িয়ায় রাঙ্গামাটিয়া ইউনিয়নে ভিজিডি দুস্থের কার্ড যাচ্ছে বিত্তবানদের হাতে
- আপডেট সময় : ০৫:৫৫:৪৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ অগাস্ট ২০২৫
- / ১২৫৭ বার পড়া হয়েছে
ফুলবাড়িয়ায় রাঙ্গামাটিয়া ইউনিয়নে ভিজিডি দুস্থের কার্ড যাচ্ছে বিত্তবানদের হাতে
মোঃ হাবিব/ফুলবাড়িয়া (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধিঃ
দুস্থ মহিলা উন্নয়ন কর্মসূচি সহায়তা হিসেবে ভিডব্লিউবি (ভিজিডি) প্রকল্পের আওতায় বিত্তবানদের নাম অন্তর্ভুক্ত করে অসচ্ছল হতদরিদ্রদের নাম তালিকায় প্রকাশ করা হয়েছে। এতে অনেক দরিদ্র, হতদরিদ্র, আবেদন করলেও নাম আসেনি তাদের।
ফুলবাড়ীয়া উপজেলার রাঙ্গামাটিয়া ইউনিয়ন ৫নং ওয়ার্ডে ২০২৫-২৬ইং অর্থবছরে (ভিডব্লিউবি) কার্যক্রমের অন্তর্ভুক্ত ভিজিডি কার্ড চুড়ান্ত তালিকায় ব্যাপক অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। সদ্য প্রকাশিত ভিজিডির চুড়ান্ত তালিকা তৈরীতে একাধিক নামের তালিকায় অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা ও স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে চুড়ান্ত তালিকা করে টাকার বিনিময়ে তালিকায় নাম সংযোজন করেন সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্য আব্দুল বারেক।
এতে বাদ পড়েছেন প্রকৃত দুস্থ, অসহায় ও পঙ্গুরা। প্রকৃত দুস্থ্যদের বঞ্চিত করে বিত্তবান লোকজনেরা তালিকায় ঠাই পেয়েছেন। অসচ্ছল, অসহায়দের পরিবর্তে ৫-৬ কাঠা জমি, পাঁকা দালান বাড়ি, গরুর খামার, মাছের ফিসারীর ব্যবসা করে এমন ব্যক্তিরাই টাকার বিনিময়ে ভিজিডি কার্ডের নামে তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
ভিজিডি কার্ডের নির্দেশনামূলক বিধিমালায় বলা হয়েছে তালিকায় ১ম অগ্রাধিকার পাবেন স্বামীহারা দুস্থ নারী, ২য় পরিবারের প্রধান নারী, যার অন্য কোন আয়ের উৎস নেই, ৩য় ১৫শতকের কম জমির মালিক, ৪র্থ বসত বাড়ির অবস্থান খারাপ বা দিন দিনমজুরি করে জীবিকা নির্বাহ করে এমন পরিবার। কোন অবস্থাতেই স্বচ্ছল পাকা বাড়ির মালিকের স্ত্রীর নাম অন্তর্ভুক্ত করা যাবেনা। সরকারি ওই নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে শুধুমাত্র ব্যক্তিগত স্বার্থ, দুনীতি, স্বেচ্ছাচারিতা ও স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে চুড়ান্ত তালিকায় স্বচ্ছল ব্যক্তিদের নাম অন্তর্ভুক্ত হয়েছে বলে জানান স্থানীয়রা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের বর্তমান ইউপি সদস্য আব্দুল বারেক এর ভাইয়ের বউ ইসরাত জাহান মিষ্টি এবং প্রবাসী ফেরত শফিকুল ইসলাম স্ত্রী আসমা আক্তারসহ দুইজনের নাম ভিজিডি কার্ডের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। তাদের প্রত্যেকের জমি জায়গাসহ পাকা দালান বাড়ি রয়েছে।
একই এলাকার মোছাঃ শিউলি আক্তার নিজেই প্রবাসী, কামরুন নাহারের স্বামী প্রবাসী, মোছাঃ জরিনা খাতুন (ধনী), জান্নাতুল ফেরদৌসের স্বামী চাকুরীজীবি, শরিফা স্বামী ব্যবসায়ী, বিলকিছ আক্তার (ধনী), উম্মে কুলছুমের স্বামীর ৬-৭ একর জমির মালিক এবং সাজিয়া আফরিন ৬নং ওয়ার্ডে থাকলেও ভিজিডি কার্ড ৫নং ওয়ার্ডের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। শুধুমাত্র ওই ৫নং ওয়ার্ডে নয় বরং ইউনিয়নের সকল ওয়ার্ডেই কার্ডের তালিকা একই অবস্থা জানান স্থানীয়রা।
৪,৭,৯,১২,১৩,১৫,১৮,২০,২২,২৩ ক্রমিকের সকলেই বিত্তবান ব্যক্তি। ভুক্তভোগী সাদিয়া খাতুন বলেন, আমরা গরীব মানুষ ভিজিডি কার্ডের আশায় অনলাইন করেছি, আমাদের নাম টেকে নাই, যারা টাকা দিয়েছে বড়লোক হলেও তাদের নাম টিকেছে। তাহলে আমাদের মত গরীব মানুষের কার্ড পাওয়ার অধিকার কি নাই।
এব্যাপারে বর্তমান ইউপি সদস্য আব্দুল বারেক এর মোবাইল ফোনে বার বার যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আরিফুল ইসলাম জানান, এ ব্যাপারে অভিযোগ পেয়েছি তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।