DoinikAstha Epaper Version
ঢাকাশনিবার ৩০শে নভেম্বর ২০২৪
ঢাকাশনিবার ৩০শে নভেম্বর ২০২৪

আজকের সর্বশেষ সবখবর

ফেরেশতারা যে সহজ শর্তে মানুষের জন্য ক্ষমা প্রার্থনায় নিয়োজিত থাকে

News Editor
অক্টোবর ৭, ২০২০ ৯:১০ অপরাহ্ণ
Link Copied!

মানবীয় দুর্বলতা, ক্লান্তি, কামনা-বাসনা থেকে মুক্ত আল্লাহর অনন্য সৃষ্টি ফেরেশতা। তারা সবসময় বিরতিহীনভাবে মহান আল্লাহর হুকুম পালন ও প্রশংসায় নিয়োজিত থাকেন। আবার মানুষের জন্য সহজ শর্তে ক্ষমা প্রার্থনা ও জাহান্নাম থেকে মুক্তির দোয়া করতে থাকেন। কী সেই সহজ শর্ত?

কুরআনুল কারিমে আল্লাহ তাআলা ফেরেশতাদের পরিচয় এবং মুমিন মুসলমানের সে সহজ শর্ত তুলে ধরেছেন। যে কারণে ফেরেশতাদের মধ্যে এমন অনেকে রয়েছেন, যারা মানুষের জন্য ক্ষমা প্রার্থনায় নিয়োজিত থাকে। আল্লাহ তাআলা বলেন-

যারা আরশ বহন করে এবং যারা তার চারপাশে আছেতারা তাদের পালনকর্তার প্রশংসা ও পবিত্রতা বর্ণনা করে। তার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে এবং মুমিনদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে বলেন- ‘হে আমাদের পালনকর্তা! আপনার রহমত ও জ্ঞান সবকিছুতে পরিব্যাপ্ত। অতএব যারা তওবা করে এবং আপনার পথে চলেতাদের ক্ষমা করুন এবং জাহান্নামের আজাব থেকে রক্ষা করুন।’ (সুরা মুমিন : আয়াত ৭)

মুমিন মুসলমানের উচিত, মহান আল্লাহর কাছে বেশি বেশি তাওবাহ ইসতেগফার করা। নিজেদের গোনাহের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা। আল্লাহ তাআলার বিধি-নিষেধগুলো মেনে জীবন পরিচালনা করা। কেননা মানুষের তাওবাহ তথা ক্ষমা প্রার্থনায় ফেরেশতারাও ওইসব বান্দার জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন।

মুমিনের তাওবাহ-ইসতেগফার ও দোয়া

– أَستَغْفِرُ اللهَ

উচ্চারণ : ‘আস্তাগফিরুল্লাহ।’

অর্থ : আমি আল্লাহর ক্ষমা প্রার্থনা করছি।

নিয়ম : প্রতি ওয়াক্ত ফরজ নামাজের সালাম ফেরানোর পর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ ইসতেগফারটি তিনবার পড়তেন।’ (মিশকাত)

– أَسْتَغْفِرُ اللهَ وَأَتُوْبُ إِلَيْهِ

উচ্চারণ : ‘আস্তাগফিরুল্লাহা ওয়া আতুবু ইলাইহি।‘

অর্থ : আমি আল্লাহর ক্ষমা প্রার্থনা করছি এবং তাঁর দিকেই ফিরে আসছি।

নিয়ম : এ ইসতেগফারটি প্রতিদিন ৭০-১০০ বার পড়া। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রতিদিন ৭০ বারের অধিক তাওবাহ ও ইসতেগফার করতেন।’ (বুখারি)

– رَبِّ اغْفِرْ لِيْ وَتُبْ عَلَيَّ إِنَّكَ (أنْتَ) التَّوَّابُ الرَّحِيْمُ

উচ্চারণ : রাব্বিগ্ ফিরলি ওয়া তুব আলাইয়্যা ইন্নাকা (আংতাত) তাওয়্যাবুর রাহিম।

অর্থ : ‘হে আমার প্রভু! আপনি আমাকে ক্ষমা করুন এবং আমার তাওবাহ কবুল করুন। নিশ্চয় আপনি মহান তাওবা কবুলকারী করুণাময়।’

নিয়ম : রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মসজিদে বসে এক বৈঠকেই এ দোয়া ১০০ বার পড়েছেন।’ (আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ, তিরমিজি, মিশকাত)

– أَسْتَغْفِرُ اللَّهَ الَّذِي لاَ إِلَهَ إِلاَّ هُوَ الْحَىُّ الْقَيُّومُ وَأَتُوبُ إِلَيْهِ

উচ্চারণ : আস্‌তাগফিরুল্লা হাল্লাজি লা ইলাহা ইল্লা হুওয়াল হাইয়্যুল কইয়্যুমু ওয়া আতুবু ইলায়হি।

অর্থ : ‘আমি ওই আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই, যিনি ছাড়া প্রকৃতপক্ষে কোনো মাবুদ নেই, তিনি চিরঞ্জীব, চিরস্থায়ী এবং তাঁর কাছেই (তাওবাহ করে) ফিরে আসি।’

নিয়ম : দিনের যে কোনো ইবাদত-বন্দেগি তথা ক্ষমা প্রার্থনার সময় এভাবে তাওবাহ-ইসতেগফার করা। হাদিসে এসেছে, এভাবে তাওবাহ-ইসতেগফার করলে আল্লাহ তাআলা তাকে ক্ষমা করে দেবেন, যদিও সে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পলায়নকারী হয়।’ (আবু দাউদ, তিরমিজি, মিশকাত)

– সাইয়েদুল ইসতেগফার পড়া

اللَّهُمَّ أَنْتَ رَبِّي لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ خَلَقْتَنِي وَأَنَا عَبْدُكَ وَأَنَا عَلَى عَهْدِكَ وَوَعْدِكَ مَا اسْتَطَعْتُ أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا صَنَعْتُ أَبُوءُ لَكَ بِنِعْمَتِكَ عَلَيَّ وَأَبُوءُ لَكَ بِذَنْبِي فَاغْفِرْ لِي فَإِنَّهُ لَا يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلَّا أَنْتَ

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা আংতা রাব্বি লা ইলাহা ইল্লা আংতা খালাক্কতানি ওয়া আনা আবদুকা ওয়া আনা আলা আহ্দিকা ওয়া ওয়াদিকা মাসতাতাতু আউজুবিকা মিন শাররি মা সানাতু আবুউলাকা বিনিমাতিকা আলাইয়্যা ওয়া আবুউলাকা বিজাম্বি ফাগ্ফিরলি ফা-ইন্নাহু লা ইয়াগফিরুজ জুনুবা ইল্লা আংতা।

অর্থ : ‘হে আল্লাহ! তুমিই আমার প্রতিপালক। তুমি ছাড়া কোনো ইলাহ নেই। তুমিই আমাকে সৃষ্টি করেছ। আমি তোমারই বান্দা আমি যথাসাধ্য তোমার সঙ্গে প্রতিজ্ঞা ও অঙ্গীকারের ওপর আছি। আমি আমার সব কৃতকর্মের কুফল থেকে তোমার কাছে আশ্রয় চাই। তুমি আমার প্রতি তোমার যে নেয়ামত দিয়েছ তা স্বীকার করছি। আর আমার কৃত গোনাহের কথাও স্বীকার করছি। তুমি আমাকে ক্ষমা করে দাও। কারণ তুমি ছাড়া কেউ গোনাহ ক্ষমা করতে পারবে না।’

নিয়ম : সকালে ও সন্ধ্যায় এ ইসতেগফার করা। ফজর ও মাগরিবের নামাজের পর এ ইসতেগফার পড়তে ভুল না করা। কেননা হাদিসে এসেছে, যে ব্যক্তি এ ইসতেগফার সকালে পড়ে আর সন্ধ্যার আগে মারা যায় কিংবা সন্ধ্যায় পড়ে সকাল হওয়ার আগে মারা যায়, তবে সে জান্নাতে যাবে।’ (বুখারি)

– দুনিয়া ও পরকালে কল্যাণ লাভ এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তি লাভে এ দোয়া বেশি বেশি পড়া-

رَبَّنَا آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الآخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ

উচ্চারণ : ‘রাব্বানা আতিনা ফিদদুনইয়া হাসানাতাও ওয়া ফিল আখিরাতি হাসানাতাও ওয়া ক্বিনা আজাবান্নার।’

অর্থ : হে আমাদের প্রভু! আমাদের দুনিয়ার কল্যাণ দান কর এবং আখিরাতের কল্যাণ দান কর। আর আগুনের (জাহান্নামের) আজাব থেকে বাঁচাও।’

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে কুরআনের নির্দেশনা অনুযায়ী তাওবাহ-ইসতেগফার ও জাহান্নামের আজাব থেকে মুক্তির প্রার্থনা করার তাওফিক দান করুন। ফেরেশতাদের ক্ষমা প্রার্থনা লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন।

বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।
সেহরির শেষ সময় - ভোর ৫:০০
ইফতার শুরু - সন্ধ্যা ৫:১৪
  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৫:০৫
  • ১১:৪৯
  • ৩:৩৫
  • ৫:১৪
  • ৬:৩১
  • ৬:২০