ফ্রান্সের নিস শহরের গির্জায় সন্ত্রাসী হামলার পর সহিংসতার পক্ষে গুণকীর্তনের মাধ্যমে নীতিমালা লঙ্ঘনের দায়ে মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদের এক টুইট বার্তা মুছে দিয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটার কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার নিস শহরের গির্জায় সন্ত্রাসী হামলায় অন্তত তিনজনের প্রাণহানি ঘটনার পর ওই টুইট করেছিলেন তিনি।
নিস হামলা ঘিরে মাহাথির মোহাম্মদের টুইটে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়। টুইটারের অনেক ব্যবহারকারী মালয়েশিয়ার এই প্রধানমন্ত্রীকে সামাজিক যোগাযোগের এই মাধ্যম থেকে সরিয়ে দেয়ারও দাবি করেন।
ফ্রান্সের ডিজিটাল শিল্পবিষয়ক মন্ত্রী সেড্রিক ও মাহাথিরের ওই টুইটের নিন্দা জানিয়েছেন। সেড্রিক ও বলেছেন, আমি ফ্রান্সে টুইটারের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সঙ্গে কথা বলেছি। আমি তাকে মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রীর টুইটার অ্যাকাউন্ট অবিলম্বে মুছে ফেলার আহ্বান জানিয়েছে।
13. Since you have blamed all Muslims and the Muslims’ religion for what was done by one angry person, the Muslims have a right to punish the French. The boycott cannot compensate the wrongs committed by the French all these years.https://t.co/ysZeXDrQ09
— Dr Mahathir Mohamad (@chedetofficial) October 29, 2020
তিনি বলেন, যদি এটা করা না হয়, তাহলে হত্যার একটি আনুষ্ঠানিক আহ্বানের সহযোগী হিসেবে টুইটারকে দায় নিতে হবে।
ইসলাম ধর্মের নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) কে নিয়ে ফ্রান্সে বিতর্কিত কার্টুন প্রদর্শনীর ঘটনায় মাহাথির মোহাম্মদ অন্তত ১৩টি ধারাবাহিক টুইট করেন। এসব টুইটে ফ্রান্সের ইসলাম ও মুসলিমবিরোধী অবস্থানের তীব্র সমালোচনা করেন।
এক টুইটে মাহাথির মোহাম্মদ স্কুল শিক্ষক স্যামুয়েল প্যাটি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে ইসলাম ও মুসলিমদের দায়ী করায় ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁকে অর্বাচীন বলে মন্তব্য করেন। একই সঙ্গে ক্ষুব্ধ একজনের জন্য সমগ্র মুসলিম জাতি এবং ইসলাম ধর্মকে দায়ী করা হলে মুসলিমদেরও ফরাসীদের শাস্তি দেয়ার অধিকার আছে বলে উল্লেখ করেন মাহাথির।
মাহাথিরের এই টুইট নীতিমালা লঙ্ঘন করেছে উল্লেখ করে প্রথমে লেবেল সাঁটিয়ে দেয় টুইটার কর্তৃপক্ষ। যদিও পরবর্তীতে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর টুইট বার্তাটি মুছে ফেলে টুইটার।
I just spoke with the MD of @TwitterFrance. The account of @chedetofficial must be immediately suspended. If not, @twitter would be an accomplice to a formal call for murder.
— Cédric O (@cedric_o) October 29, 2020
স্কুলের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বাক-স্বাধীনতার ব্যাপারে আলোচনা করতে গিয়ে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের উপকণ্ঠের একটি মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষক স্যামুয়েল প্যাটি হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর কার্টুন প্রদর্শন করেন। এ ঘটনার পর গত ১৬ অক্টোবর ১৮ বছর বয়সী এক চেচেন কিশোর স্যামুয়েলকে শিরশ্ছেদ করে হত্যা করেন।
স্যামুয়েল হত্যাকাণ্ডের পর ফরাসী প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ তার ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ড এবং হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর কার্টুন প্রদর্শনী অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন। এ নিয়ে মুসলিম বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে ফ্রান্সের সম্পর্কের টানাপড়েন তৈরি হয়েছে। এ ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই বৃহস্পতিবার নিস শহরের একটি গির্জায় হামলা চালায় তিউনিশিয়া থেকে ফ্রান্সে পাড়ি জমানো এক তরুণ।