বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) সরকারি বাসভবন ভাঙচুর ও পুলিশের ওপর হামলায় গ্রেপ্তার আওয়ামী লীগের ১২ জনের জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (২ সেপ্টেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বরিশাল অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. মাসুম বিল্লাহ তাদের জামিন মঞ্জুর করেন।
আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট তালুকদার মো. ইউনুস জানান, আদালত পৃথক মামলায় পুলিশ প্রতিবেদন জমা দেওয়ার আগ পর্যন্ত জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি গোলাম মাসউদ বাবলু ও (আসামিপক্ষের আইনজীবী) সাবেক সভাপতি তালুকদার মো. ইউনুসের জিন্মায় ১০ হাজার টাকার বন্ডে তাদের জামিন মঞ্জুর করেন। আদালতের আদেশে সন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি।
এর আগে গত ২৫ আগস্ট অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাসুম বিল্লাহর আদালতে তাদের জামিনের আবেদন করা হলে আদালত জামিন মঞ্জুর করেন। ওইদিন ২১ জনের জন্য আজ জামিনের আবেদন করা হয়েছিল।
উল্লেখ্য, গত ১৮ আগস্ট রাতে বরিশাল সদর উপজেলা পরিষদ চত্বরে অবৈধ বিলবোর্ড, ব্যানার, ফেস্টুন উচ্ছেদ করতে অভিযান চালায় বরিশাল সিটি করপোরেশনের কর্মীরা। কিন্তু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাদের অভিযান বন্ধ করে সকালে অভিযান চালাতে বলেন। তা না মেনে ইউএনওর সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন সিটি করপোরেশনের কর্মী এবং আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
একপর্যায়ে তারা ইউএনওর বাসভবনে হামলা চালান। এ সময় ইউএনওর নিরাপত্তায় আনসার সদস্যরা গুলি চালালে বেশ কয়েকজন আহত হন। খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে গেলে পুলিশের সঙ্গেও হামলাকারীদের সংঘর্ষ হয়। এতে বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্যও আহত হন।
ঘটনায় পরদিন ইউএনও এবং পুলিশ বাদী হয়ে সিটি মেয়র সাদিক আবদুল্লাহসহ আওয়ামী লীগের ৬০২ জন নেতাকমীর বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেন কোতোয়ালি মডেল থানায়। দুই মামলায় পুলিশ এ পর্যন্ত ২৩ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করে। তাদের মধ্যে চোখে গুলিবিদ্ধ তানভীর হাসান এবং মনিরুজ্জামান মনির নামে দুই আসামি গ্রেপ্তার অবস্থায় ঢাকার জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ওই ২ জন বাদে বরিশাল কারাগারে থাকা ২১ আসামির মধ্যে গত ২৫ আগস্ট ৯ জন নেতাকর্মীর জামিন মঞ্জুর করেন অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন আদালত।
২৯ আগস্ট ফের কারাগারে থাকা ১২ আসামির জামিন আবেদন করেন তাদের আইনজীবীরা। আদালত ২ সেপ্টেম্বর তাদের জামিন শুনানির দিন ধার্য করেন। আজ ধার্য দিনে শুনানি শেষে তাদের সবার জামিন মঞ্জুর করেন আদালত।
সরকারের উচ্চ মহলের নির্দেশে ওই দিনই রাতে বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার মো. সাইফুল হাসান বাদলের বাসভবনে বিভাগীয় ও জেলা এবং পুলিশ প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে সিটি মেয়রসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের এক সমঝোতা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে উভয়পক্ষের মামলা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত হয়।
ওই বৈঠকের সুফল হিসেবে গত ২৫ আগস্ট প্রথম দফায় ৯ নেতাকর্মীর জামিনের পর আজ দ্বিতীয় দফায় আরও ১২ জন নেতাকর্মীর জামিন হয়েছে বলে মনে করেন তাদের আইনজীবীরা।
বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।