বিএনপির নেতার বিরুদ্ধে রাজশাহীর বাঘায় ভোগদখলে থাকা সম্পত্তিতে সাইনবোর্ড টাঙিয়ে জবরদখল করে জমির গাছপালা-ফসলাদি কেটে বিক্রিসহ প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
আজ রবিবার (১৫ জুন) সকাল সাড়ে ১১ টায় বাঘা প্রেস ক্লাব কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেছেন উপজেলার বাউসা ইউনিয়নের বাউসা পূর্বপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আসলাম হোসেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আসলাম হোসেন বলেন, বাউসা মৌজায় তিন দাগে মোট ৯৮ শতাংশ জমি আমার নিজের ও আমার বাবার খরিদমূলেপ্রাপ্ত সম্পত্তি। যা ৪৫ বছর ধরে ভোগদখল করে আসছি।
দেশের পট পরিবর্তনের পর, বাউসা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. রেজাউল করিমসহ তার সাঙ্গপাঙ্গরা খরিদকৃত সম্পত্তি আড়ানির জোতরঘু গ্রামের জামাল উদ্দীন জুমন গংদের ওয়ারিশ সত্ত্ব দাবি করে ২৭ শতাংশ জমির ১০টি আমগাছ কেটে বিক্রি করে। ৪৫ শতাংশ জমি জবর দখল করে আবাদ করা ভুট্টা কেটে নিয়ে যায়।
তিনি বলেন, সবশেষ গত ১২ জুন ২৬ শতাংশের একটি জমিতে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দখলে নেয়। সেই সাইনবোর্ডে লেখা হয়েছে এই জমির মালিক মরিয়ম বেগম ও জাহিদুল ইসলাম (খালেক)।
১৩ জুন সকাল আনুমানিক সাড়ে ৭টার দিকে বিএনপি নেতা রেজাউল করিমের নেতৃত্বে জুমন, জুয়েল, মিজান ও আরাফাতসহ ১০/১২ জন আমাকে হত্যার উদ্দেশে লৌহার রড়, হাতুড়ি ও হাসুয়া নিয়ে বাড়ির গেট ভাঙচুরের চেষ্টা করে। আমি বাড়ির মফস্বল দরজা দিয়ে পালিয়ে আত্মরক্ষা করি। পরে তারা বাড়ির পাশে একটি জমির ফসলাদি কেটে জমি দখলে নেয়। বাধা দিতে গেলে তারা রামদা নিয়ে হত্যাচেষ্টা করে।
আমি পালিয়ে বাড়িতে এসে ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে বিষয়টি অবগত করলে তারা থানায় অভিযোগ দিতে বলেন। তাদের পরামর্শে থানায় অভিযোগ করি। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে স্ত্রী সকেনা বেগমের সঙ্গে কথা বলে সাক্ষীদের নাম দিতে বলে। কিন্তু রেজাউল করিমের ভয়ে কেউ সাক্ষী দিতে রাজি হয়নি।
সংবাদ সম্মেলনে আসলাম বলেন, খরিদ করা .৪৫ শতাংশ ও .২৭ শতাংশ জমির শর্ত নিয়ে আমার বাবা আমির উদ্দীন বাদী হয়ে একরাম গংদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন।
সেই মামলার রায়ে বাদী ডিগ্রি পায়।
তিনি বলেন, দেশের পট পরিবর্তনের এক মাস পর থেকে ক্ষমতার প্রভাব বিস্তার করে খরিদকৃত সেইসব সম্পত্তি জবর দখল করে নেয়। কিন্তু রেজাউল করিম কোনোভাবেই জমির মালিক নয়। তিনি (রেজাউল) জমি বিক্রেতাদের পক্ষে ওয়ারিশ সত্ত্ব দাবি করে জমি জবর দখল করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে আসলাম আরো বলেন, নিরাপত্তাহীনতার অভাবে বাড়িতে থাকতে পারছি না। ক্রয়কৃত সম্পত্তি জবরদখল থেকে নিজ দখলে নেওয়ার জন্য আইনি সহায়তা কামনা করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে আসলামের সঙ্গে ছিলেন তার স্ত্রী সকেনা বেগম ও ছেলে জাহিদ হাসান।
এ বিষয়ে রেজাউল করিম বলেন, মিজান নামের একজন দাবি করেছেন, ওয়ারিশ সত্ত্বে তিনি জমি পাওনাদার।
বাঘা থানার ওসি আ ফ ম আছাদুজ্জামান জানান, জমিজমা জবরদখল ও ভয়ভীতির অভিযোগ করেছেন আসলাম হোসেন। এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে।