অনলাইন ডেস্কঃ
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের দলীয় নেতা-কর্মীদের স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, দলের সভাপতি শেখ হাসিনা দলীয় শৃঙ্খলা বিষয়ে অত্যন্ত কঠোর অবস্থানে রয়েছেন। দল করলে দলীয় শৃঙ্খলা মানতে হবে। দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করলে তিনি যত বড়ই নেতা হউক কেন তাঁকে ছাড় দেওয়া হবে না। দলের মধ্যে যাঁরা অপকর্ম, অনিয়ম- দুর্নীতি করছে আমাদের নেত্রী কাউকেই ছাড় দিচ্ছেন না।
আওয়ামী লীগের জনপ্রতিধিরাও দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হচ্ছে। এখানে কোনো প্রকার হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে না। প্রশাসন ও দুর্নীতি দমন কমিশনকে বলে দেওয়া হয়েছে সরকার কোনো হস্তক্ষেপ করবে না। কে কার কোন পরিচয়ের সেটা দেখবে না। যাঁরা অনিয়ম-দুর্নীতি করবে প্রশাসনিক ও সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আজ বৃহস্পতিবার জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বাষিক সম্মেলনে ভার্চুয়ালে সংযুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সকাল দশটায় আক্কেলপুর মুজিবুর রহমান ডিগ্রি সরকারি কলেজ মাঠে এই সম্মেলন শুরু হয়। জয়পুরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান রকেট সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।
আক্কেলপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোকছেদ আলী মাস্টারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্যে দেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক, জয়পুরহাট-২ আসনের সাংসদ, হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, রাজশাহী বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস, এম কামাল হোসেন, কেন্দ্রীয় কমিটির স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডাঃ রোকেয়া সুলতানা, জয়পুরহাট-১ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট সামছুল আলম দুদু, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আরিফুর রহমান রকেট, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন মন্ডল।
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের প্রসঙ্গে টেনে সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, কোম্পানীগঞ্জে কিছুদিন ধরে যে বিশৃঙ্খলা চলছিল। সেই বিশৃঙ্খলার ব্যাপারেও সরকার ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে। সেখানে অভিযান শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে সেখানে একশ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যাঁরা জড়িত কাউতে ছাড় দেওয়া হবে না। এই অভিযান অব্যহত থাকবে। সাংগঠনিক তদন্তও চলছে। জড়িতদের বিরুদ্ধে অচিরেই সাংগঠনিক ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে।
জনগণের সঙ্গে নেতা-কর্মীদের ভালো আচরণ করার পরার্মশ দিয়ে তিনি বলেন, আমারা যদি জনগণের সঙ্গে ভালো আচরণ না করি তাহলে শেখ হাসিনার সকল উন্নয়ন ম্লান হয়ে যাবে। আপনারা জনগণকে আচরণ দিয়ে খুশি রাখবেন এটি শেখ হাসিনার বার্তা। আমি আপনাদের সেই বার্তাটি পৌঁছে দিচ্ছি। জনগণই আমাদের শক্তি। কাজেই জনগণকে জিম্মি করে কোনো কর্মসূচি দেবেন না। জনগণকে কষ্টে হয় এমন কোনো কর্মসূচি নেওয়া যাবে না। দলের ত্যাগী নেতা-কর্মীদের মূল্যয়ন করতে হবে। বির্তকিত ব্যক্তি দলে টেনে ত্যাগী নেতাদের উপেক্ষিত করবেন না। সুসময়ে যাঁরা দলে আসছে তাঁরা বসন্তের কোকিল। দলের দুঃসময়ে এই বসন্তের কোকিলদের দেখা যাবে না। তখন তাঁরা সরে যাবে খুঁজে পাওয়া যাবে না।
আওয়ামী লীগ বাঁচাতে হলে আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতা-কর্মীদের বাঁচাতে হবে। তাঁদের যোগ্যতার আসনে বসাতে হবে। কোনো সুবিধাবাদীকে নয়। খারাপ লোকদের দলে টেনে দল ভারী ও গ্রুপ ভারী করার চেষ্টা করবেন না। বির্তকিত ব্যক্তিদের সর্ম্পকে সজাগ থাকতে হবে। জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমা-ার হিসেবে পালন করেছিলেন। কিন্তু স্বাধীনতা পরবর্তীকালে তিনি তাঁর ভূমিকা নিজেই মুক্তিযোদ্ধা কাছে প্রশ্নবিদ্ধ করেছিলেন। তিনি স্বাধীনতা বিরোধীদের পুনবার্সন করেছিলেন। জিয়াউর রহমান রক্তেমূল্যে অর্জিত স্বাধীন দেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ভূন্ঠিত করে সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীকে রাজনীতি করার সুযোগ দিয়েছেন। দিয়েছিলেন ক্ষমতার স্বাদ।
মুক্তিযুদ্ধে একজন সেক্টর কমা-ারের এমন মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী অপশক্তি, প্রসার নীতিতে ইতিহাস নিজেই তাঁকে ইতিহাসের কাঠগড়ার দাঁড় করিয়েছে। নিজেদের ব্যথতার দায় অন্যের ঘাড়ে চাপাতে বিএনপি সিদ্ধহস্ত। তাঁরা আন্দোলনে ব্যথ হয়ে হয়ে প্রতিপক্ষ হিসেবে জনগণ ও পুলিশকে দাঁড় করিয়েছে। নির্বাচনে জনগণ দ্বারা প্রত্যাখ্যত হয়ে নির্বাচনকে প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড় করিয়েছে। তাঁরা নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তাহলে বিএনপি বিভিন্ন পৌরসভায় জয়ী হয় কিভাবে। বিএনপি অব্যাহত ব্যর্থতা আর ক্ষমতার রাজনীতি থেকে ছিটকে পড়ে দিশেহারা হয়েছে।