বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্দার লুকাশেংকোর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাজ্য ও কানাডা। ভোট জালিয়াতি এবং বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে বেলারুশ সরকারের সহিংসতার অভিযোগে গতকাল বুধবার এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। দেশ দুটি লুকাশেংকো ছাড়াও তাঁর ছেলে এবং অন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করাসহ তাঁদের সম্পদ জব্দ করেছে।
রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ মিত্র বেলারুশের চলমান সংকটে এই প্রথম দুই পশ্চিমা শক্তির নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়ন হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র তাৎক্ষণিকভাবে এ রকম কোনো পদক্ষেপের ঘোষণা দেয়নি। তবে তারা যুক্তরাজ্য ও কানাডার সঙ্গে সমন্বিতভাবে একটি যৌথ ঘোষণা দেওয়ার পরিকল্পনা গত সপ্তাহেই করছিল বলে শোনা গেছে।
বেলারুশে গত ৯ আগস্ট প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট গ্রহণের পর প্রায় ৮০ শতাংশ ভোট পেয়ে লুকাশেংকো ফের বিজয়ী হয়েছেন বলে ঘোষণা দেয় নির্বাচন কমিশন। বিরোধী দলগুলো ভোটের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে এবং ভোটের ফল প্রত্যাহার করে ওই দিন রাত থেকেই বিক্ষোভ শুরু করে। আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদলও ভোটে অস্বচ্ছতার প্রমাণ পাওয়ার কথা জানায়।
বাবরি মসজিদ মামলা: ভারতের আদালতের লজ্জাজনক রায়!
লুকাশেংকো সব অভিযোগই অস্বীকার করেছেন। ভোটের স্বচ্ছতা প্রশ্নে গণবিক্ষোভ কিংবা ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়ানোর আন্তর্জাতিক আহ্বান—সব উপেক্ষা করেই লুকাশেংকো টানা ষষ্ঠ মেয়াদের জন্য বেলারুশের প্রেসিডেন্ট হিসেবে নতুন করে শপথ নিয়েছেন। লুকাশেংকোর পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ করে আসা বিরোধীপক্ষ এই শপথ অবৈধ বলে নিন্দা জানিয়ে আরো বিক্ষোভের ডাক দেয়।
বিক্ষোভ দমনে শুরু থেকেই বল প্রয়োগ করে আসছে প্রশাসন। চলমান বিক্ষোভে এ পর্যন্ত ১২ হাজারের বেশি মানুষ গ্রেপ্তার হয়েছে। ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডমিনিক রাব বলেছেন, ‘আমরা যা দেখছি—এ ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘন ও জালিয়াতির নির্বাচনের জন্য লুকাশেংকোর মূল্য দেওয়া উচিত।’ এমন কর্মকাণ্ডের জন্য জবাবদিহি না করেই ছেড়ে দেওয়া হবে বলে লুকাশেংকো এমনকি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ধরে নেবেন—এমনটি হতে দেওয়া যায় না বলে মন্তব্য করেন রাব। তবে পুতিনের প্রসঙ্গ নিয়ে কথা বললেও রাশিয়ার সরকার কিংবা রুশ নাগরিকদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার কোনো পদক্ষেপের ঘোষণা দেননি তিনি।
সূত্র : রয়টার্স।