ব্রিকসে যোগ দিতে আবেদন করেছে ১৯ দেশ
আস্থা ডেস্কঃ
ব্রিকসভুক্ত দেশগুলো নিজেদের মধ্যে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে মধ্যে ডলারের বিকল্প খুঁজতে শুরু করেছে। চীনা মুদ্রায় বিনিয়োগও চলছে কিছু দেশের মধ্যে। ফলে বিশ্বজুড়ে ডলারের যে আধিপত্য ছিল তা এখন হুমকির মুখে পড়েছে। এই জোটের নেতৃত্বে রয়েছে চীন-রাশিয়া। তাই ব্রিকসে যুক্ত হতে আবেদন করেছে ১৯ দেশ। ব্লুমবার্গ এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
জোটটির দক্ষিণ আফ্রিকার দূত অনিল সুকলাল বলেন, আমরা প্রতিদিনই জোটে যুক্ত হওয়ার জন্য বিভিন্ন দেশের অনুরোধ পাচ্ছি। এবারের সম্মেলনে আমরা ব্রিকস বড় করার বিষয়ে আলোচনা করবো। কীভাবে এটি সম্ভব হবে তাই হবে আলোচনার বিষয়। তিনি আরও নিশ্চিত করেন যে, আনুষ্ঠানিকভাবে ব্রিকসে যোগ দেয়ার আবেদন করেছে ১৯ দেশ।
নতুন সদস্য আসার আগেই ব্রিকসের জিডিপি জি৭ এর জিডিপিকে ছাড়িয়ে গেছে। অর্থাৎ, ব্রিকসভুক্ত দেশগুলোর মোট ক্রয় ক্ষমতা এখন জি৭ ভুক্ত দেশগুলোর থেকে বেশি। এ বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ ব্রিকস এখন নিজেদের মধ্যে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে মার্কিন ডলারের বিকল্প আনার কথা ভাবছে। নতুন একটি মুদ্রা তৈরির কথাও ভাবা হচ্ছে। রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে পশ্চিমাদের সরাসরি বিরোধ এই প্রক্রিয়াকে আরও ত্বরান্বিত করছে।
এই বছরের প্রথম থেকেই ‘ডি-ডলারাইজেশন’ নিয়ে তর্ক-বিতর্ক অব্যাহত আছে। যুক্তরাষ্ট্রের এখন ৩০ ট্রিলিয়ন ডলারেরও বেশি ঋণ আছে। ডলারের আধিপত্য থাকায় দেশটি নিজের প্রয়োজনমতো ডলার ছাপিয়ে অনেক সংকট সামাল দিতে পারে। কিন্তু বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতিগুলোর একটি অংশ যদি ডলারের রিজার্ভ রাখা বন্ধ করে দেয় তাহলে তা যুক্তরাষ্ট্রের সুপারপাওয়ার স্ট্যাটাসের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
এরইমধ্যে দেখা গেছে মধ্যপ্রাচ্যে ভিন্ন হাওয়া বইছে। ইরান ও সৌদি আরব বহু বছরের দ্বন্দ্ব ভুলে কাছে আসতে শুরু করেছে। আর এতে মধ্যস্ততা করেছে চীন। মধ্যপ্রাচ্য ক্রমশ শান্ত হয়ে আসার ইঙ্গিত মিলেছে নানা দিক থেকে। ফলে সেখানে মার্কিন প্রভাবও কমতে শুরু করেছে। সৌদি আরব চীনা মুদ্রায় বাণিজ্যের পথে হাটছে। আইএমএফ জানিয়েছে, দেশগুলো এখন আর ডলার রিজার্ভ করতে চায় না। ১৯৯০ এর দশকে বিশ্বজুড়ে দেশগুলোর রিজার্ভের ৭০ শতাংশই ছিল ডলার। অথচ সেটি এখন ৫৮.৪ শতাংশে নেমে এসেছে। চীন-রাশিয়া নতুন একটি বিশ্ব ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে। আর এর প্রথম পদক্ষেপ হতে চলেছে, বিশ্বে ডলারের আধিপত্য ধ্বংস করা।