মনোহরদীতে নির্বাচনি চমক দেখাতে রাস্তা কেটে বানালো নদী
মনোহরদী প্রতিনিধিঃ
নরসিংদি জেলার মনোহরদীতে সাবেক এক ইউপি চেয়ারম্যানের ভুলে একটি রাস্তা খননের পর এখন সেটি বর্ষায় ভরা খালে পরিনত হয়েছে। ফলে ৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, কৃষিপণ্য বাজারজাতকারী কৃষক, ২০টি পোল্ট্রি খামার মালিক, রোগী ও প্রাত্যহিক চলাচলকারী লোকজনের মাঝে চরম দুরবস্থা বিরাজ করছে।
সরেজমিনে গিয়ে এলসকাবাসীর সাথে আলাপ কালে জানা যায়, প্রায় বছরাধিক সময় আগে মনোহরদী উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর দক্ষিন পাড়ার এ গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটি পাকাকরনের উদ্দেশ্যে ৩/৪ ফুট গভীর করে মাটি খনন করা হয়। অভিযোগে জানাযায়, কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের তৎকালীন চেয়ারম্যান এমদাদুল হক আকন্দ নির্বাচনী চমক দেখাতে সরকারী বরাদ্ধ ছাড়াই কৃষ্ণপুর গ্রামের মালেক ডিলারের বাড়ী থেকে শাহজাদা ভূইয়ার বাড়ী পর্যন্ত রাস্তাটির উন্নয়ন কাজে হাত দেন।
নির্বাচনে তিনি পরাজিত হলে সে উদ্যেগ থেমে যায়।। ফলে বছরাধিক সময় ধরে রাস্তাটি যান চলাচলের সম্পূর্ণ অযোগ্য হয়ে পড়ে। এমনকি বৃষ্টির পানিতে রাস্তাটি রীতিমতো একটি ভরা বর্ষার খালে পরিনত হয় বলেও অভিযোগ এলাকাবাসীর।
সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তা শহীদুল্লাহ কাজল (৬১) বলেন, প্রায় এক বছর আগে মসজিদে নামাজ পড়তে গিয়ে এ রাস্তার কাঁদায় পড়ে পা মচকেছে তার। এখনো ভালো হয়নি সেটি।
দোকানী হানিফা (৩৭) ও কাজল মিয়া (৫৫) বলেন, ঈদগাহ মসজিদে নামাজ পড়তে এসে পা পিছলে আহত হন তিনি। এতে দু’জনের কাঁধে ভর দিয়ে বাড়ী ফিরতে হয় তাকে।উৎপাদিত কৃষি পন্যাদি কিনতে বেপারী আসেন না এলাকায় রাস্তার এ অবস্থার জন্য। ফলে কৃষি পন্যের দর মেলে কম।
ব্যবসায়ী সুরুজ মিয়া (৫০) বলেন, খননকৃত রাস্তার ভাঙ্গনে তার দোকানে ভাঙ্গন শুরু হয়। সেটি মেরামত করতে ইট আনতে ১৫শ’ টাকার গাড়ীভাড়া ২৫শ’ টাকা গুনতে হয়েছে।
মুরগীর খামার গুলে প্রায় বন্ধ রয়েছে শুধুমাত্র এ রাস্তার কারনে বলে জানালেন সেখানকার ফরিদ (৬০),
আরেক ফরিদ( ৪০) ও লিটন (৩৮)সহ বেশ ক’জন পোল্ট্রি খামারী।
মনোহরদী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক পলাশ মাহমুদ এ ব্যাপারে তার ফেসবুক পেজে সড়ক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বরাবরে একটি খোলা চিঠি পোষ্ট করে বেশ আলোড়ন তুলেছেন।
এব্যাপারে অভিযুক্ত সাবেক চেয়ারম্যানের সাথে যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।
কৃষ্ণপুর ইউপি চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান দুলাল রাস্তাটির জন্য জনদুর্ভোগের কথা স্বীকার করে বলেন, সাবেক চেয়ারম্যান হঠাৎ করেই কোন বরাদ্ধ বা টেন্ডার ছাড়াই নির্বাচনের আগে রাস্তাটি খনন করান। নির্বাচনে তিনি পরাজিত হবার পর রাস্তাটি সেভাবেই পড়ে থাকে।এতে রাস্তার দু’ পাশের লোকজনসহ চলাচলকারীগন রীতিমতো অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন। সে কারনে সম্প্রতি তিনি এলাকার এমপি ও শিল্পমন্ত্রীর সহায়তায় রাস্তাটিকে উন্নয়ন পরিকল্পনার আওতায় এনে এটি পাকাকরনের ব্যবস্থা করেছেন।
মনোহরদী উপজেলা প্রকৌশলী মীর মাহিদুল ইসলাম বলেন, রাস্তাটি পাকাকরনে একটি প্রকল্প প্রনীত হয়েছে।জনদূর্ভোগ নিরসনে খুব দ্রুতই সেটির টেন্ডার হবার পর কাজ শুরু হবে বলে আশা করছি।