আমিনুল জুয়েল, নওগাঁ প্রতিনিধি
হুট করেই নওগাঁর বিভিন্ন চালের মোকামগুলোতে কেজি প্রতি ৪ থেকে ৫ টাকা দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। এর প্রভাব পরেছে শহরের খুচরা ও পাইকারী বাজারেও। ফলে বিপাকে পরেছে নিম্নবিত্ত ও খেটে খাওয়া মানুষেরা। দাম বেশি হওয়ায় অনেক ক্রেতাই প্রয়োজনের চেয়ে কম চাল কিনছেন। আবার কেউ চাল না কিনেই বাড়ি ফিরছেন।গত রবিবার খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার চালের মজুতকারী ও অযথা দাম বৃদ্ধিকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা এবং হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করেন।
এর দুই দিনের মাথায় নওগাঁয় চালের দাম বেড়েছে।চাল ব্যবসায়ীরা জানান, মিলাররা চাল মজুদ করে রাখায় দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। তারা কম টাকায় চাল কিনে মজুদ রাখে। দাম বেশি হলেই বাজারে বিক্রি শুরু করে।যেহেতু আমরাই বেশি দামে চাল কিনি। তাই ব্রিক্রির সময়ও বেশি দাম রাখতে হয়। এছাড়াও, ধানের দাম বাড়ায় বাজারে চালের দাম কেজিতে চার-পাঁচ টাকা বেড়েছে।
গেল সপ্তাহে প্রকারভেদে কাটারি চাল বিক্রি হয়েছিল কেজি প্রতি ৪৪ টাকা। সেই চাল এখন ৫০-৫২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। জিরা ছিল ৪৬ টাকা বিক্রি ৫০ টাকায়, আটাশ ৪২ টাকা, বিক্রি ৪৬ টাকা, আতপ ৯০ থেকে বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়।এছাড়াও, বাজারে সরবরাহ না থাকায় চাহিদা বেড়েছে মোটা জাতের (হাইব্রীট) চালের। প্রতি কেজিতে বেড়েছে প্রায় ৬ টাকা।এদিকে, পাইকারী বাজারে মিনিকেট ৫০ কেজির বস্তা চালের দাম গত সপ্তাহে ২৩০০ টাকা ছিল যা বেড়ে হয়েছে ২৫০০ টাকা। আর পারিজা চাল ২০০০ টাকা থেকে দাম বৃদ্ধি পেয়ে বিক্রি হচ্ছে ২১০০ টাকায়। কাটারি চালভেদে ২২০০ টাকা থেকে বেড়ে ২৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।বাজার ঘুড়ে দেখা গেছে চালের প্রকারভেদে ৫ থেকে ৬ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে।
নওগাঁ পৌর চাল ব্যবসায়ীরা জানান, চাল বাজারের দাম দফায় দফায় বৃদ্ধির কারন হল কিছু কলো টাকার মালিক, মজুদদার ও অসাধু মিল মালিকরা। করোনার সময় অনেকে পুজির অভাবে হাসকিং মিলের কার্যক্রম বন্ধ রেখেছে। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে এসব কালো টাকার মালিকরা এসব বন্ধ মিলের গুডাউন ভাড়া নেয়। পরে ধান মজুদ রেখে ধানের বাজারে এক প্রকার সিন্ডিকেট করে দাম বাড়াচ্ছে। যার প্রভাব পরছে চালের বাজারে। ব্যবসায়ীদের দাবি, চাল মজুদ করা গুডাউন ও মিল চিহিৃত করে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করলে চালের বাজার হয়তো নিয়ন্ত্রনে আসবে।
নওগাঁ পৌর চাল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক উত্তম সরকার বলেন, খুচরা বাজারে গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতিকেজি চালের দাম ৪ হতে ৫ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। আমরাও চাল বেশি টাকায় কিনে অল্প লাভে তা বিক্রি করছি।নওগাঁ জেলা চাল কল মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ হোসেন চকদার বলেন, গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে নওগাঁ পাইকারী বাজারে চালের দাম সামান্য কিছু বেড়েছে। তবে মোটা চালের দাম একটু বেশী।
ধানের দাম বাড়লে চালের দাম একটু বাড়ে।চালের দাম বৃদ্ধির ব্যাপারে নওগাঁ খাদ্য নিয়ন্ত্রক জিএম ফারুক হোসেন পাটোয়ারী জানান, ‘চালের দাম বৃদ্ধিতে আমরাও উদ্বিগ্ন। তবে এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষ যথাযথ ব্যবস্থা নিবেন। চালের বাজার ঠিক রাখতে জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসক ও খাদ্য বিভাগ নিরলস কাজ করে যাচ্ছে।শিগগির চালের বাজার স্বাভাবিক হবে বলে আশা করছি।