কোলন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে প্রায় ১০ মাস চিকিৎসাধীন থাকার পর ২০১২ সালের ১৯শে জুলাই নিউইয়র্কের একটি হাসপাতালে মারা যান দেশের জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ।
এরইমধ্যে গুঞ্জন ওঠে- অন্য প্রকাশের স্বত্বাধিকারী মাজহারুল ইসলামের সঙ্গে হুমায়ূন আহমেদের স্ত্রী অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওনের প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে।
বিষয়টিকে এতোদিন কর্ণপাত না করলেও এবার মুখ খুললেন অভিনেত্রী শাওন।
মাজহারের জন্মদিনে এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে তাদের দুজনের মধ্যে সম্পর্ক কেমন সে বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন শাওন।
শাওন লিখেছেন, ‘এই মানুষটার (মাজহার) সঙ্গে আমাকে নিয়ে একটা কথা টুকটাক শোনা যায়। কথাটা বেশ অস্বস্তিকর। তার স্ত্রী আর আমি বিষয়টা নিয়ে চরম খুনসুটি আর হাসাহাসি করলেও আমাদের সঙ্গে নতুন বন্ধুত্ব হওয়া কেউ কেউ একটু ইতং বিতং করে প্রসঙ্গটা তোলেন আর অপ্রস্তুত হয়ে বলেন ‘আহা! বাইরে থেকে কি ভুল ধারণা নিয়েই না ছিলাম!’ বলছিলাম আমার সবচাইতে কাছের প্রতিবেশী, হুমায়ূন আহমেদের পুত্রসম বন্ধু প্রকাশক মাজহারুল ইসলাম ভাইয়ের কথা।’
এরপর শাওন লিখেছেন, ‘মাজহার ভাইয়ের স্ত্রী তানজিনা রহমান স্বর্ণা ভাবি আমার সবচেয়ে কাছের সহচর। দিনের মধ্যে ৩/৪ বার দেখা করে সারাদিনের প্যাঁচাল নিয়ে বকরবকর না করলে আমাদের পেটের ভাত হজম হয় না। এই করোনাবন্দি সময়ে আমাদের আরেকটি অভ্যাস হলো ছাদে একসঙ্গে কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করা। তারপর বিছানায় আধশোয়া হয়ে অনেকক্ষণ চুপ করে থেকে দীর্ঘশ্বাস ছাড়তে ছাড়তে বলা- ‘ভাল্লাগে না… এই অসাধারণ মানুষটির (স্বর্ণা) স্বামীর সঙ্গে নাকি আমার প্রেম! হ্যাঁ….. তার সাথে আমার প্রেম।’
এবার সেই প্রেমের ব্যাখ্যা দেন হুমায়ূনপত্মী।
শাওন লিখেন, ‘আমার কিশোরী বেলায় প্রণয়ের সময় আমি যখন হুমায়ূন আহমেদের সঙ্গে ছেলেমানুষী রাগ করতাম তখন তিনি বড় ভাইয়ের মতো আমার ভুল ভাবনাগুলো ধরিয়ে দিয়ে আমাকে শান্ত করতেন। উনি আমার আরেক মায়ের গর্ভে জন্ম নেয়া বড়ভাই। তার সাথে আমার ভাইয়ের মতো প্রেম। কর্কট রোগের চিকিৎসা চলাকালীন সময় হুমায়ূন আহমেদের আপন ভাইদের যে দায়িত্ব ছিল সেই দায়িত্ব তিনিই পালন করেছেন। কখনো বাজার করে আনা তো কখনো তার হুমায়ূন ভাইয়ের পছন্দের খাবারটা রান্না করে ফেলা যেন কেমোথেরাপির পর তিনি একটু খেতে পারেন। প্রায়ই রাতের বেলা এক বছরের নিনিতকে কোলে নিয়ে হেঁটে ঘুম পাড়াতেন যাতে করে আমি একটু বিশ্রাম পাই। হাসপাতালে হুমায়ূনের বিছানার পাশে একরাত আমি জাগি তো আরেক রাত তিনি জাগেন, আমার মতো করেই হুমায়ূন আহমেদের পা টিপে তাকে ঘুম পাড়িয়ে দেন। রক্তের সম্পর্ক না থেকেও তিনি হুমায়ূন আহমেদের ছোট ভাই। আমি ওনাকে দেবরের মতো ভালোবাসি। নিনিত, নিষাদ আর আমার ছোট্ট পরিবারটি ছাড়া তাদের পরিবারের কোনো উৎসবই পূর্ণ হয় না! তাদের সব আনন্দের ভাগ যেন আমাদের না দিলেই নয়! তাদের ছেলে দু’টিও বড়ভাইয়ের মতোই আগলে রেখেছে আমার নিনিত-নিষাদকে। নিনিত, নিষাদ আর আমি- আমরা ৩ জনই তাদের পরিবারের সব্বাইকে অনেক অনেক ভালোবাসি…’