ঢাকা ০২:২১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৯ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মাদ্রাসাছাত্রী ধর্ষণের পর অন্তঃসত্ত্বা, জামায়াত কর্মী আটক

Astha DESK
  • আপডেট সময় : ১০:৪৫:৫৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • / ১০৪৬ বার পড়া হয়েছে

মাদ্রাসাছাত্রী ধর্ষণের পর অন্তঃসত্ত্বা, জামায়াত কর্মী আটক

পঞ্চগড় প্রতিনিধিঃ

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলায় মাদ্রাসাছাত্রীকে ধর্ষণ ও অপহরণের অভিযোগে জামাল উদ্দিন (৪৫) নামে এক ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ। আজ রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) বিকালে আইনি প্রক্রিয়া শেষে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

এর আগে গতকাল শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) রাতে ভুক্তভোগীর নানী বাদী হয়ে তেঁতুলিয়া মডেল থানায় জামাল উদ্দিনসহ ৪ জনকে আসামি করে অভিযোগ করা হয়েছে। মামলা করলে রাতেই উপজেলার তিরনইহাট ইউনিয়নে অভিযুক্তের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়। আটক জামাল উদ্দিন ওই এলাকার আলী হোসেনের ছেলে।

স্থানীয়রা বলছেন, আগে আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকলেও ৫ আগস্টের পর জামাল উদ্দিন জামায়াতে ইসলামীতে যোগ দেয়। পাশাপাশি ঠুনঠুনিয়া মসজিদের ক্যাশিয়ারের দায়িত্বেও ছিলেন তিনি। ঘটনার পর মসজিদের দায়িত্ব থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

এজাহার সূত্রে জানা যায়, মাদ্রাসার ওই ছাত্রী ছোট থেকেই নানীর বাড়িতে বসবাস করেন ও স্থানীয় একটি নুরানী মাদ্রাসায় লেখা পড়া করে। চলিত বছরের ১৭ জানুয়ারি সকালে ওই মাদ্রাসার ছাত্রী তার নানীর বাড়ির পাশে অভিযুক্ত জামাল উদ্দিনের বাড়িতে ফ্রিজ থেকে মুরগী মাংস আনতে যায়। এসময় বাড়ীতে লোকজন না থাকায় ওই ছাত্রীকে জামাল উদ্দিন খারাপ প্রস্তাব দেয়। এতে ওই মাদ্রাসার ছাত্রী অস্বীকৃতি জানালে জামাল উদ্দিন ক্ষিপ্ত হয়ে ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করেন৷ এভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শন কর দীর্ঘ দিন ধরে ধর্ষণ করার ফলে ওই ছাত্রী অন্তঃস্বত্বা হয়ে পড়েন৷

মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়, আসামি জামাল উদ্দিন ঘটনার দায় স্বীকার করলেও পরে তার স্ত্রী ও ভাইসহ অন্য আসামিদের সহযোগিতায় ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে।

অপর দিকে চলিত বছরের ১৪ জুন সকালে ভুক্তভোগীকে জোরপূর্বক একটি মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায়। মীমাংসার আশ্বাসে পরে তাকে উদ্ধার করে তার পরিবার। এ ঘটনায় ওই ছাত্রী বিচার না পাওয়ায় তার নানি মামলা করলে রাতেই পুলিশ আসামিকে আটক করে।

মামলার বাদী ও ওই ছাত্রীর নানী জানান, ভুক্তভোগী আমার ননদের নাতনি। ছোটবেলা থেকেই নাতনি (তার নানী) কাছে বড় হয়েছে। কয়েক মাস আগে তার নানী মারা গেলে নাতনির দায়িত্ব আমি ও আমার পরিবার নেই। অভিযুক্ত জামাল প্রথম দিকে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করলেও পরবর্তীতে তালবাহানা করেন। তাই বিচার না পেয়ে আমরা আইনে আশ্রয় নিয়েছি।

ওই এলাকার সমিজ উদ্দিন জানান, জামাল ৫ আগষ্টের পর জামায়াতে ইসলামীতে যোগ দিয়েছে। এ ঘটনা প্রকাশ হওয়ার পর তাকে সম্ভবত দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। অন্যদিকে গ্রামের মসজিদের দায়িত্ব থেকে তাকে বাদ দেওয়া হয়েছে।

তেঁতুলিয়া মডেল থানার ওসি মুসা মিয়া জানান, আসামি জামাল উদ্দিনকে আটক করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।

এদিকে মামলার বাদী ও ওই মাদ্রাসার ছাত্রীর নানী জানান,ভুক্তভোগী আমার ননদের নাতনি ।ছোটবেলা থেকে নাতনি তার আমার ননদ ( তার নানী) কাছে বড় হয়েছে। কয়েক মাস আগে তার নানী মারা গেলে নাতনির দায়িত্ব আমি ও আমার পরিবার নেই। অভিযুক্ত জামাল প্রথম দিকে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করলেও পরবর্তীতে তালবাহানা করেন। তাই বিচার না পেয়ে আমরা আইনে আশ্রয় নিয়েছি।

ট্যাগস :

মাদ্রাসাছাত্রী ধর্ষণের পর অন্তঃসত্ত্বা, জামায়াত কর্মী আটক

আপডেট সময় : ১০:৪৫:৫৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

মাদ্রাসাছাত্রী ধর্ষণের পর অন্তঃসত্ত্বা, জামায়াত কর্মী আটক

পঞ্চগড় প্রতিনিধিঃ

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলায় মাদ্রাসাছাত্রীকে ধর্ষণ ও অপহরণের অভিযোগে জামাল উদ্দিন (৪৫) নামে এক ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ। আজ রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) বিকালে আইনি প্রক্রিয়া শেষে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

এর আগে গতকাল শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) রাতে ভুক্তভোগীর নানী বাদী হয়ে তেঁতুলিয়া মডেল থানায় জামাল উদ্দিনসহ ৪ জনকে আসামি করে অভিযোগ করা হয়েছে। মামলা করলে রাতেই উপজেলার তিরনইহাট ইউনিয়নে অভিযুক্তের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়। আটক জামাল উদ্দিন ওই এলাকার আলী হোসেনের ছেলে।

স্থানীয়রা বলছেন, আগে আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকলেও ৫ আগস্টের পর জামাল উদ্দিন জামায়াতে ইসলামীতে যোগ দেয়। পাশাপাশি ঠুনঠুনিয়া মসজিদের ক্যাশিয়ারের দায়িত্বেও ছিলেন তিনি। ঘটনার পর মসজিদের দায়িত্ব থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

এজাহার সূত্রে জানা যায়, মাদ্রাসার ওই ছাত্রী ছোট থেকেই নানীর বাড়িতে বসবাস করেন ও স্থানীয় একটি নুরানী মাদ্রাসায় লেখা পড়া করে। চলিত বছরের ১৭ জানুয়ারি সকালে ওই মাদ্রাসার ছাত্রী তার নানীর বাড়ির পাশে অভিযুক্ত জামাল উদ্দিনের বাড়িতে ফ্রিজ থেকে মুরগী মাংস আনতে যায়। এসময় বাড়ীতে লোকজন না থাকায় ওই ছাত্রীকে জামাল উদ্দিন খারাপ প্রস্তাব দেয়। এতে ওই মাদ্রাসার ছাত্রী অস্বীকৃতি জানালে জামাল উদ্দিন ক্ষিপ্ত হয়ে ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করেন৷ এভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শন কর দীর্ঘ দিন ধরে ধর্ষণ করার ফলে ওই ছাত্রী অন্তঃস্বত্বা হয়ে পড়েন৷

মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়, আসামি জামাল উদ্দিন ঘটনার দায় স্বীকার করলেও পরে তার স্ত্রী ও ভাইসহ অন্য আসামিদের সহযোগিতায় ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে।

অপর দিকে চলিত বছরের ১৪ জুন সকালে ভুক্তভোগীকে জোরপূর্বক একটি মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায়। মীমাংসার আশ্বাসে পরে তাকে উদ্ধার করে তার পরিবার। এ ঘটনায় ওই ছাত্রী বিচার না পাওয়ায় তার নানি মামলা করলে রাতেই পুলিশ আসামিকে আটক করে।

মামলার বাদী ও ওই ছাত্রীর নানী জানান, ভুক্তভোগী আমার ননদের নাতনি। ছোটবেলা থেকেই নাতনি (তার নানী) কাছে বড় হয়েছে। কয়েক মাস আগে তার নানী মারা গেলে নাতনির দায়িত্ব আমি ও আমার পরিবার নেই। অভিযুক্ত জামাল প্রথম দিকে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করলেও পরবর্তীতে তালবাহানা করেন। তাই বিচার না পেয়ে আমরা আইনে আশ্রয় নিয়েছি।

ওই এলাকার সমিজ উদ্দিন জানান, জামাল ৫ আগষ্টের পর জামায়াতে ইসলামীতে যোগ দিয়েছে। এ ঘটনা প্রকাশ হওয়ার পর তাকে সম্ভবত দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। অন্যদিকে গ্রামের মসজিদের দায়িত্ব থেকে তাকে বাদ দেওয়া হয়েছে।

তেঁতুলিয়া মডেল থানার ওসি মুসা মিয়া জানান, আসামি জামাল উদ্দিনকে আটক করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।

এদিকে মামলার বাদী ও ওই মাদ্রাসার ছাত্রীর নানী জানান,ভুক্তভোগী আমার ননদের নাতনি ।ছোটবেলা থেকে নাতনি তার আমার ননদ ( তার নানী) কাছে বড় হয়েছে। কয়েক মাস আগে তার নানী মারা গেলে নাতনির দায়িত্ব আমি ও আমার পরিবার নেই। অভিযুক্ত জামাল প্রথম দিকে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করলেও পরবর্তীতে তালবাহানা করেন। তাই বিচার না পেয়ে আমরা আইনে আশ্রয় নিয়েছি।