মুরাদনগরে নারীকে ধর্ষণ ও ভিডিও ভাইরাল করার ঘটনায় আটক-৫
কুমিল্লা প্রতিনিধিঃ
কুমিল্লার মুরাদনগরে এক নারীকে তার বাবার বাড়িতে ধর্ষণ ও সাঙ্গপাঙ্গ দিয়ে বিবস্ত্র করে ভিডিও করার ঘটনায় দায়ের করা মামলার একমাত্র আসামি ফজর আলীসহ ৫ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
রোববার ভোরে রাজধানীর সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল এলাকা থেকে ফজর আলীকে আটক করা হয়। তিনি একই উপজেলার বাহেরচর গ্রামের সহিদ মিয়ার ছেলে।
এর আগে রাতভর অভিযান চালিয়ে ওই নারীকে মারধর ও নগ্ন ভিডিও ধারণ করে ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে আরও ৪ জনকে আটক করে পুলিশ।
আটককৃতরা হলো, একই এলাকার আবদুল হান্নানের ছেলে সুমন, জাফর আলীর ছেলে রমজান, মোঃ আলমের ছেলে মোঃ আরিফ ও তালেম হোসেনের ছেলে মোঃ অনিক।
গত বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) রাতে উপজেলার বাহেরচর পাঁচকিত্তা গ্রামে ধর্ষণের এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী ওই নারীর অভিযোগ, ঘটনার রাতে তার বাবা-মা বাড়িতে ছিলেন না। এ সময় ফজর আলী ঘরের দরজা ভেঙে প্রবেশ করে তাকে ধর্ষণ করে।
এদিকে স্থানীয় একাধিক সূত্র বলছে, ঘটনার সময় আশপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে এসে ভুক্তভোগী নারীকে বিবস্ত্র অবস্থায় দেখে জোরপূর্বক তার ভিডিও ধারণ করে এবং শনিবার রাতে তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়। এ সময় মারধরের শিকার হয়ে ফজর আলী পালিয়ে যায়। ঘটনার পরদিন ভুক্তভোগী নারী বাদী হয়ে মুরাদনগর থানায় মামলা দায়ের করেন। ভুক্তভোগী ওই নারীর স্বামী গত পাঁচ বছর ধরে প্রবাসে রয়েছেন এবং তাদের দুটি সন্তান রয়েছে।
এদিকে ওই নারীকে নির্যাতনের ৫১ সেকেন্ডের একটি ভিডিও শনিবার রাত থেকে ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়লে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, ১০/১২ জন যুবক বিবস্ত্র অবস্থায় ওই নারীকে মারধর করছে। এসময় ওই নারী বাঁচার জন্য চিৎকার করলেও কেউ তাকে রক্ষা করেনি।
মুরাদনগর থানার ওসি জাহিদুর রহমান বলেন, ওই নারী ধর্ষণের অভিযোগে ফজর আলীকে অভিযুক্ত করে মামলা দায়ের করলেও তাকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ঘটনা পুলিশকে বলেনি। তবে ভিডিও ধারণ ও ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ায় জড়িতদের শনাক্ত করে ৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
কুমিল্লা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নাজির আহমেদ খাঁন বলেন, ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি ফজর আলীকে আহত অবস্থায় আটক করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ভিডিও ছড়ানোয় জড়িত চারজনকে কুমিল্লার বিভিন্ন স্থান থেকে আটক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।