যশোরের ঝিকরগাছার সদর ইউনিয়নের লক্ষীপুর গ্রামের মাঠপাড়ার বাসিন্দা কোহিনুর বেগম। স্বামী বাদশা হোসেন ঢাকায় নরসুন্দরের কাজ করেন। গত সপ্তাহে তিনি বাড়িতে এসেছেন। তারপরও স্বামীকে মৃত বানিয়ে কোহিনুর বেগমকে বিধবা ভাতার কার্ড দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় মহিলা মেম্বার এ কাজ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, ঝিকরগাছা সদর ইউনিয়নে ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে ৫৫ জনকে অতিরিক্ত বিধবা ভাতাভোগীর তালিকা করা হয়। এতে কোহিনুর বেগমকে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ে তার নম্বর ৩৪১ ও হিসাব নম্বর ৪০১০২২৯২৪। একই তালিকায় মল্লিকপুর গ্রামের আনোয়ারা খাতুনের স্বামী আবু তালেবকেও মৃত দেখিয়ে বিধবা কার্ড দেওয়া হয়েছে। তার নম্বর ৩৩০, হিসাব নম্বর ৪০১০২২৯৪৪। এরা এক চালান ভাতার টাকাও পেয়েছেন।
সরেজমিনে কোহিনুর বেগমকে বাড়িতে পাওয়া যায়নি। তবে, তার ভাবি সালেহা খাতুন জানান, দুলাভাই ঢাকা থেকে এসেছে। বোন-দুলাভাই আত্মীয়ের বাড়ি গেছেন। মুঠোফোনে কোহিনুর বেগম জানান, স্বামী ঢাকায় থাকেন। অনেক দিন পরপর আসেন। তাই মেম্বাররা এ কার্ড করে দিয়েছেন।
আনোয়ারা বেগমের বাড়িতে গিয়ে দেখাগেছে, তার স্বামী প্রায় অর্ধযুগ ধরে বিছানাগত সে ঠিকমতো কথা বলতে পারেন না। তার ছেলে জালাল উদ্দীন জানান, ৭/৮ মাস আগে মাকে নিয়ে গিয়েছিলেন ইউনিয়ন পরিষদে বয়স্ক ভাতার কার্ড করার জন্য। কিন্তু জাতীয় পরিচয়পত্রে মার বয়স আমার বড়ো ভাইয়ের চেয়ে কম লেখা থাকায় তা আর হয়নি। পরে মার নামে বিধবা ভাতার কার্ড দেওয়া হয়েছে।
পরকীয়ার টানে ঘর ছেড়ে রাতভর ধর্ষণের শিকার গৃহবধূ
লক্ষীপুর গ্রামের মেম্বার তবিবুর রহমান উজ্জল জানান, ইউনিয়ন পরিষদ থেকে এ জাতীয় ভাতার দায়িত্ব মহিলা মেম্বারদের দেয়া হয়েছে। আমার ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা মেম্বার হিরা খাতুন ওই মহিলার স্বামী থাকা সত্বেও বিধবা ভাতার কার্ড করে দিয়েছেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মহিলা মেম্বার হিরা খাতুন জানান, তার স্বামী ঢাকায় থাকেন, তাছাড়া ওই মহিলার মার নামে বিধবা ভাতার কার্ড ছিল। মা মরে যাওয়ায় ওর নামে করে দিয়েছি।
ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আমির হোসেন জানান, স্বামী থাকার সত্বেও আনোয়ারা খাতুনের নামে বিধবা ভাতার যে কার্ড হয়েছে তা সমাজসেবা অফিস ভুল করে করেছে। এটা সংশোধনের জন্য অফিসকে বলা হয়েছে। তবে কোহিনুর বেগমের বিধবা কার্ড হওয়ার বিষয়টি তিনি জানেন না বলে দাবি করেন। আগামী সভায় এ বিষয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান তিনি।
এ বিষয় উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা এএফএম ওয়াহিদুজ্জামান জানান, ইউনিয়ন পরিষদ থেকে তালিকা পাঠানোর পর সময় না থাকায়, তা আর যাচাই-বাছাই করার সুযোগ হয়নি। তবে এ জাতীয় কার্ড সবই কর্তন ও সংশোধন করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরাফাত রহমান জানান, কোন অবস্থাতেই সধবাকে বিধবা ভাতার কার্ড দেয়া যাবে না। কেউ দিলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।