মেয়ে সেজে যৌনতার ফাঁদে ফেলে কলেজছাত্রের প্রতারণা
জেলা প্রতিনিধিঃ ছেলে হয়েও সাইবার দুনিয়ায় মেয়ে সেজে যৌনতার মোহে ফেলতেন অনেককে। অনলাইন চ্যাটিংয়ে গোপন ছবি ও ভিডিও সংগ্রহ করে দিতেন ছড়ানোর হুমকি। লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়া কলেজছাত্র অবশেষে ধরা পড়েছে গোয়েন্দা জালে।
বাস্তবে ছেলে, অনলাইনে মেয়ে। একুশ-বাইশ বছরের এই কলেজ শিক্ষার্থীর আসল নাম এরশাদ মিয়া। ফেইসবুক অ্যাকউন্টে তার নাম মোরশেদা রহমান মিতু কিংবা রিমা।
ফেইসবুকে তার টার্গেট অর্থনৈতিক স্বচ্ছল বয়স্ক পুরুষ। পর্যালোচনা করে বাছাই ব্যক্তিদের জানাতেন বন্ধুত্বের আহ্বান। সাড়াও দিতেন প্রায় সকলেই। মেসেঞ্জারে স্বাভাবিক আলাপ রূপ নেয় যৌনতায়। ডার্ক সাইট থেকে রগরগে ছবি-ভিডিও নামিয়ে টার্গেট ব্যক্তিকে পাঠিয়ে অল্প সময়েই গড়ে তোলেন ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। কৌশলে টার্গেট ব্যক্তির আবেগঘন মুহূর্তের ভিডিও ও ছবি সংগ্রহ করে নিতেন। এরপর সেগুলো ছড়িয়ে দেয়ার ভয়-ভীতি দেখিয়ে হাতিয়ে নিতেন টাকা।
কেউ বাস্তবে কথা বলতে চাইলে মোবাইল ফোনে কণ্ঠ পরিবর্তন করে মেয়ে সেজে আলাপ করতেন এরশাদ। এরশাদের যৌনতার আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে ফেঁসে যাওয়া পুরুষদের বেশিরভাগই বিবাহিত। সমাজে প্রতিষ্ঠিতও।
সমাজবিজ্ঞানীদের পর্যবেক্ষণ, যৌনকাতর পুরুষদের টার্গেট করে দেশে সংঘবদ্ধ অপরাধ দিন দিন বাড়ছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সালমা আক্তার বলেন, এসব অপরাধে যাদের ছবি ব্যবহার করা হচ্ছে তারা কিন্তু তৃতীয় পক্ষ। তারা কিন্তু জানেও না তাদের এসব ছবি কে কারা কোথায় কি উদ্দেশ্যে ব্যবহার করছে। এতে তাদেরও সম্মানহানী হচ্ছে সমাজে।
সাইবার দুনিয়ায় প্রতারিত হলে নাগরিকদের নীরব না থেকে অভিযোগ জানানোর আহ্বান পুলিশের। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (উত্তর) যুগ্ম কমিশনার হারুন অর রশীদ বলেন, কোন মেয়ে ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট পাঠালে বা মেয়ে কন্ঠে কথা বললেই কেউ যেন তাদের উপর আসক্ত না হয়।
আমাদের আরও সতর্কভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যবহার করা উচিত। আমরা এখন পর্যন্ত এমন অনেকগুলা প্রতারক চক্রকে শনাক্ত করেছি যারা এসব অপরাধ করে থাকে।
এরশাদের সহযোগীদের ধরতে অভিযান চলছে বলে জানিয়েছে সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ।