মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের পর হত্যা,
রংপুর জেলা প্রতিনিধিঃ রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার গোপীনাথপুরে মোবাইল ফোনে রাতে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের পর আয়মনা বেগম (৩০) নামে এক নারীকে হত্যা করা হয়েছে।
এ ঘটনায় গ্রেপ্তার তহিদার রহমান (৩২) ধর্ষণ ও হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। সোমবার (২৭ জুলাই) রাতে তাকে উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়ন থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর মঙ্গলবার দুপুরে বদরগঞ্জ আমলি আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দেন ঘাতক।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বদরগঞ্জ থানার ওসি হাবিবুর রহমান। তিনি বলেন, নিহত আয়মনার পূর্ব পরিচিত ছিল গ্রেফতার তহিদার রহমান। মূলত তার অপর দুই বন্ধু মিলে ধর্ষণের পর হত্যা করেছে বলে সে বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে তার অপর দুই সহযোগিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালানো হচ্ছে ।
জানা গেছে, গত শনিবার উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়নের বরকতপুর ডাঙ্গাপাড়া এলাকায় ঈদে নানীর বাড়ি বেড়াতে এসে রহস্যজনক হত্যার শিকার হন আয়মনা বেগম নামে ওই নারী। ওই সময় আয়মনার মৃত্যু রহস্যজনক বলে এলাকাবাসী ধারণা করলেও তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। এদিকে তদন্তের স্বার্থে হত্যাকাণ্ডে জড়িত অপর দুই ঘাতকের নাম পুলিশ প্রকাশ করতে রাজি হয়নি।
আয়মনা বেগম একই এলাকার আবেদ আলীর মেয়ে। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বদরগঞ্জ উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়নের বরকতপুর ডাঙ্গাপাড়া এলাকার দুই সন্তানের জননী আয়মনার সঙ্গে তার স্বামী রাশেদুলের প্রায় দুই বছর আগে ছাড়াছাড়ি হয়। এরপর নানীর বাড়ি এলাকার পূর্ব পরিচিত তহিদার রহমানের (আটক) সঙ্গে তার সখ্য গড়ে ওঠে। ওই সম্পর্কের জেরে গত শনিবার রাতে তহিদার রহমান মোবাইলে ফোন করে আয়মনাকে নানীর বাড়ি থেকে বাইরে ডেকে নেন।
সেখানে আগে থেকে ওৎ পেতে ছিল তহিদারের অপর দুই বন্ধু। এক পর্যায়ে আয়মনাকে জোর করে সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণ করে তারা। ধর্ষণের বিষয়টি সালিস ডেকে তাদের নাম প্রকাশ করার কথা বললে আয়মনাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন ঘাতকরা। বাড়ির পাশে একটি নির্জন বাঁশ ঝাড়ে নিয়ে শ্বাসরোধ করে আয়মনাকে হত্যা করা হয়।
পরে গলায় রশি বেধে বাঁশ ঝাড়ের ভেতরে একটি সজিনা গাছের ডালে তাকে ঝুলিয়ে দেওয়া হলে রশি ছিঁড়ে মরদেহটি মাটিতে পড়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। এ ঘটনায় আয়মনার ভাই জাইদুল ইসলাম বাদী হয়ে বদরগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন। পুলিশ তদন্ত করে তিনজনের জড়িত থাকার কথা জানতে পেরে একই এলাকার আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে তহিদার রহমানকে গ্রেফতার করে।