ঢাকা ১১:১১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম:
Logo চাঁদা না দেওয়ায় বাড়ি নির্মাণে বাধা, ভূমি দখলচেষ্টা ও হত্যার হুমকির Logo ইকরা গার্মেন্টসের উদ্যোগে শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ Logo আবার মাইনাস তৎপরতায় ডিপ স্টেট: মাসুদ কামাল Logo বেগম খালেদা জিয়া, তারেক রহমান ও বিএনপি নিয়ে নতুন ষড়যন্ত্র Logo পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি বাস্তবায়নের দাবিতে খাগড়াছড়িতে সংবাদ সম্মেলন Logo পানছড়িতে অবৈধ কাঠ আটক করেছে বিজিবি Logo পানছড়িতে সেনাবাহিনীর মতবিনিময়, উপহার ও চিকিৎসা সেবা প্রদান Logo কিশোরগঞ্জে রওজা মনি হত্যার বিচার দাবিতে গ্রামবাসীর মানববন্ধন Logo ধানের শীষ প্রতীকের পক্ষে রেজাউল করিম খান চুন্নুর সমর্থকদের গণমিছিল Logo পানছড়িতে শিক্ষার্থীর হাতে ওয়াদুদ ভূঁইয়া ফাউন্ডেশনের অনুদান তুলে দিলো স্বেচ্ছা সেবক দল

যমুনা-তিস্তা-ধরলা: বন্যা-ভাঙনে দিশেহারা মানুষ

News Editor
  • আপডেট সময় : ০৯:৪২:২৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২০
  • / ১০৬৮ বার পড়া হয়েছে

বন্যা ও ভাঙনের পর তাদের ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা নস্যাৎ হয়ে যাচ্ছে নতুন বন্যার আঘাতে। রাস্তাঘাট ভাঙছে, বসতভিটা নদীতে বিলীন হচ্ছে, ফসলি জমি তলিয়ে যাচ্ছে, সঙ্গে খাবারের সংকট-সব মিলিয়ে একটা কঠিন সময় পার করছে যমুনা, তিস্তা ও ধরলার তীরবর্তী মানুষ।

আবহাওয়ার পূর্বাভাসও স্বস্তিদায়ক নয়। কয়েক দিন ধরে দেশের বিভিন্ন এলাকায় যে ভারি বৃষ্টিপাত হচ্ছে, তা আজ শনিবারও অব্যাহত থাকতে পারে। ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে উপকূলীয় এলাকা ও সমুদ্রবন্দরগুলোর ওপর দিয়ে। তাই দেশের সব সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর সতর্কতা সংকেত বহাল রাখা হয়েছে। এ ছাড়া গতকাল দেশের ১৯টি জেলার ওপর দিয়ে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছিল আবহাওয়া অফিস। এই ১৯টি জেলা হলো—রংপুর, রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, ঢাকা, ফরিদপুর, মাদারীপুর, যশোর, কুষ্টিয়া, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও সিলেট।

ছয় দিন পর যমুনার দুটি পয়েন্টে আবার পানি বাড়তে শুরু করেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে পানি বেড়েছে ৮ সেন্টিমিটার, কাজিপুর পয়েন্টে বেড়েছে ১৪ সেন্টিমিটার। নদীতীরবর্তী পাঁচটি উপজেলার মানুষের মধ্যে নতুন করে বন্যা আর ভাঙনের আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, গতকাল সকালে সিরাজগঞ্জ পয়েন্টের পানি বিপৎসীমার ২১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে ও কাজিপুর পয়েন্টের পানি বিপত্সীমার ৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এদিকে যমুনার পানি বাড়তে থাকায় ভাঙনের কবলে পড়েছে চৌহালি উপজেলার নদীতীরবর্তী এলাকার মানুষ। ক্রমে বিলীন হচ্ছে দক্ষিণ চৌহালির বিস্তীর্ণ অঞ্চল।

এমসি কলেজে গণধর্ষণ: অভিযুক্ত ছাত্রলীগ কর্মীদের ধরতে অভিযান

সারিয়াকান্দি উপজেলার দুটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় যেকোনো সময় ভেঙে পড়তে পারে। এর মধ্যে উপজেলার চরগোদাগাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বাঙ্গালী নদীর ভাঙনে এবং চরদিঘাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় যমুনা নদীর ভাঙনে হুমকির মুখে পড়েছে।

গুরুদাসপুর (নাটোর) প্রতিনিধি জানান, কয়েক দিনের বৃষ্টিতে আমন ধান ও আগাম সবজির অনেক জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল করিম জানান, উপজেলার পাঁচ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে আমনের চারা লাগানো হয়েছিল। বন্যা ও বর্ষণে ৩৫ হেক্টর জমির বীজতলা নষ্ট হয়ে গেছে। 

ভারি বৃষ্টি ও উজানের ঢলে কুড়িগ্রামের ধরলা, তিস্তাসহ সব নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। ধরলা নদীর পানি গতকাল সকালে বিপৎসীমার ৪৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। বিপত্সীমার কাছাকাছি রয়েছে তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্রের পানিও। ফলে পঞ্চম দফা বন্যায় কুড়িগ্রাম সদর, রাজারহাট, ফুলবাড়ী ও উলিপুর উপজেলার শতাধিক চর নতুন করে প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ। ডুবে গেছে গ্রামীণ সড়ক ও আবাদি জমি।

ভারি বর্ষণ আর উজান থেকে আসা ঢলে রংপুরের তিস্তাপারে ফের বন্যা দেখা দিয়েছে। ডুবে গেছে রোপা আমনসহ ফসলের ক্ষেত। নদীভাঙন তীব্র আকার ধারণ করায় গত পাঁচ দিনে শতাধিক ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে।

সেখানে তিস্তার পানি কিছুটা কমেছে। গতকাল বিকেলে তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টের পানি বিপত্সীমার ৩০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। আগের দিন সকালে প্রবাহিত হচ্ছিল বিপৎসীমার ২৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে।

সেখানে চতুর্থ দফা বন্যার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। গত তিন দিনে মেঘালয়ের পাহাড়ি ঢল ও বর্ষণে সুনামগঞ্জের প্রধান নদী সুরমার পানি বিপত্সীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, গত ৪৮ ঘণ্টায় চেরাপুঞ্জিতে প্রায় ৪৫০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এই পানি এসে নামছে ভাটির জনপদ সুনামগঞ্জে।

টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে দুর্ভোগে পড়েছেন নালিতাবাড়ীর কৃষকরা। ভোগাই নদীর ভাঙা বাঁধ দিয়ে পানি প্রবেশ করায় বন্যাকবলিত হয়ে পড়ছে নালিতাবাড়ী শহরের নিচপাড়া, জেলখানা রোড, মরিচপুরান ইউনিয়নের ফকিরপাড়া, দক্ষিণ কোন্নগরসহ কয়েকটি গ্রাম। 

যমুনা-তিস্তা-ধরলা: বন্যা-ভাঙনে দিশেহারা মানুষ

আপডেট সময় : ০৯:৪২:২৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২০

বন্যা ও ভাঙনের পর তাদের ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা নস্যাৎ হয়ে যাচ্ছে নতুন বন্যার আঘাতে। রাস্তাঘাট ভাঙছে, বসতভিটা নদীতে বিলীন হচ্ছে, ফসলি জমি তলিয়ে যাচ্ছে, সঙ্গে খাবারের সংকট-সব মিলিয়ে একটা কঠিন সময় পার করছে যমুনা, তিস্তা ও ধরলার তীরবর্তী মানুষ।

আবহাওয়ার পূর্বাভাসও স্বস্তিদায়ক নয়। কয়েক দিন ধরে দেশের বিভিন্ন এলাকায় যে ভারি বৃষ্টিপাত হচ্ছে, তা আজ শনিবারও অব্যাহত থাকতে পারে। ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে উপকূলীয় এলাকা ও সমুদ্রবন্দরগুলোর ওপর দিয়ে। তাই দেশের সব সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর সতর্কতা সংকেত বহাল রাখা হয়েছে। এ ছাড়া গতকাল দেশের ১৯টি জেলার ওপর দিয়ে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছিল আবহাওয়া অফিস। এই ১৯টি জেলা হলো—রংপুর, রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, ঢাকা, ফরিদপুর, মাদারীপুর, যশোর, কুষ্টিয়া, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও সিলেট।

ছয় দিন পর যমুনার দুটি পয়েন্টে আবার পানি বাড়তে শুরু করেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে পানি বেড়েছে ৮ সেন্টিমিটার, কাজিপুর পয়েন্টে বেড়েছে ১৪ সেন্টিমিটার। নদীতীরবর্তী পাঁচটি উপজেলার মানুষের মধ্যে নতুন করে বন্যা আর ভাঙনের আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, গতকাল সকালে সিরাজগঞ্জ পয়েন্টের পানি বিপৎসীমার ২১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে ও কাজিপুর পয়েন্টের পানি বিপত্সীমার ৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এদিকে যমুনার পানি বাড়তে থাকায় ভাঙনের কবলে পড়েছে চৌহালি উপজেলার নদীতীরবর্তী এলাকার মানুষ। ক্রমে বিলীন হচ্ছে দক্ষিণ চৌহালির বিস্তীর্ণ অঞ্চল।

এমসি কলেজে গণধর্ষণ: অভিযুক্ত ছাত্রলীগ কর্মীদের ধরতে অভিযান

সারিয়াকান্দি উপজেলার দুটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় যেকোনো সময় ভেঙে পড়তে পারে। এর মধ্যে উপজেলার চরগোদাগাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বাঙ্গালী নদীর ভাঙনে এবং চরদিঘাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় যমুনা নদীর ভাঙনে হুমকির মুখে পড়েছে।

গুরুদাসপুর (নাটোর) প্রতিনিধি জানান, কয়েক দিনের বৃষ্টিতে আমন ধান ও আগাম সবজির অনেক জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল করিম জানান, উপজেলার পাঁচ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে আমনের চারা লাগানো হয়েছিল। বন্যা ও বর্ষণে ৩৫ হেক্টর জমির বীজতলা নষ্ট হয়ে গেছে। 

ভারি বৃষ্টি ও উজানের ঢলে কুড়িগ্রামের ধরলা, তিস্তাসহ সব নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। ধরলা নদীর পানি গতকাল সকালে বিপৎসীমার ৪৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। বিপত্সীমার কাছাকাছি রয়েছে তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্রের পানিও। ফলে পঞ্চম দফা বন্যায় কুড়িগ্রাম সদর, রাজারহাট, ফুলবাড়ী ও উলিপুর উপজেলার শতাধিক চর নতুন করে প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ। ডুবে গেছে গ্রামীণ সড়ক ও আবাদি জমি।

ভারি বর্ষণ আর উজান থেকে আসা ঢলে রংপুরের তিস্তাপারে ফের বন্যা দেখা দিয়েছে। ডুবে গেছে রোপা আমনসহ ফসলের ক্ষেত। নদীভাঙন তীব্র আকার ধারণ করায় গত পাঁচ দিনে শতাধিক ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে।

সেখানে তিস্তার পানি কিছুটা কমেছে। গতকাল বিকেলে তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টের পানি বিপত্সীমার ৩০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। আগের দিন সকালে প্রবাহিত হচ্ছিল বিপৎসীমার ২৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে।

সেখানে চতুর্থ দফা বন্যার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। গত তিন দিনে মেঘালয়ের পাহাড়ি ঢল ও বর্ষণে সুনামগঞ্জের প্রধান নদী সুরমার পানি বিপত্সীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, গত ৪৮ ঘণ্টায় চেরাপুঞ্জিতে প্রায় ৪৫০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এই পানি এসে নামছে ভাটির জনপদ সুনামগঞ্জে।

টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে দুর্ভোগে পড়েছেন নালিতাবাড়ীর কৃষকরা। ভোগাই নদীর ভাঙা বাঁধ দিয়ে পানি প্রবেশ করায় বন্যাকবলিত হয়ে পড়ছে নালিতাবাড়ী শহরের নিচপাড়া, জেলখানা রোড, মরিচপুরান ইউনিয়নের ফকিরপাড়া, দক্ষিণ কোন্নগরসহ কয়েকটি গ্রাম।