রংপুরে মোটরসাইকেল চুরি চক্রের মূল হোতাসহ তার সহযোগীকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১৩। সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) রাত পৌনে ৯টার দিকে কুড়িগ্রাম জেলার রাজারহাট থানার গোবদা হতে মোঃ ইদুল মিয়া (৩৩) ও তার দেওয়া তথ্য মতে রংপুর কোতয়ালী থানাধীন পূর্ব শালবনের ভাড়া বাসা থেকে রাজু আহম্মেদকে (৩৭) গ্রেফতার করে র্যাব।
এসময় ভাড়া বাসার নিচতলা হতে চোরাই মোটরসাইকেলের পর্যাপ্ত আলামত, বি আরটিএ এর জাল সীলমোহর, মোটর সাইকেল লক খোলার মাস্টার কী, বিভিন্ন নামের জাতীয় পরিচয় পত্র, বিভিন্ন ব্যক্তির পাসপোর্ট সাইজের ছবি, বেনামী ব্যক্তির একাধিক সীম, এফিডেভিড সীল মোহর সম্বলিত বাইক বিক্রির তৈরীকৃত ভ‚য়া কাগজপত্র, মোটরসাইকেল এর জাল রেজিস্ট্রেশন কার্ড/স্মার্টকার্ড উদ্ধারসহ চুরি করা মোটরসাইকেল গুলোর মূল কাগজপত্র ও স্মার্টকার্ড উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) র্যাব-১৩ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মাহমুদ বশির আহমেদ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ খবর জানানো হয়। গ্রেফতারকৃত ইদুল মিয়া কুড়িগ্রামের রাজারহাট থানার গোবদা গ্রামের মৃত আমজাদ হোসেনের ছেলে ও রাজু আহম্মেদ রংপুরের কাউনিয়া থানার খোর্দ্দ ভূতছড়া গ্রামের মোঃ ইসহাক চৌধুরীর ছেলে। জানা যায়, গত এক মাসে রংপুর মহানগর ও এর আশেপাশের জেলায় বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল চুরি হয়। এ ধরনের মোটরসাইকেল চুরির সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়ে যাওয়ায় ঘটনাগুলো নিয়ে র্যাবসহ অন্যান্য আইন শৃঙ্খলা বাহিনী গোয়েন্দা তৎপরতা বৃদ্ধি করে। এমনি একজন ভিকটিম মোঃ সোহাগ হাসান (৩০) যার কষ্টার্জিত অর্থে কেনা মোটরসাইকেলটি মাত্র তিন মিনিটের ব্যবধানে কয়েকজন অজ্ঞাতনামা যুবক চুরি করে নিয়ে চলে যায়। মোটরসাইকেল স্টার্ট দেওয়ার শব্দ শুনে সে তৎক্ষণিক বাইরে আসে কিন্তু ততক্ষণে চোর চক্রটি মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে যায়। বিষয়টি নিয়ে পরবর্তীতে তিনি অজ্ঞাতনামা চোরদের আসামী করে হারাগাছ থানায় একটি মামলা দায়ের করে। এদিকে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মোঃ ইদুল মিয়া স্বীকার করে- সে ও তার অন্য এক সহযোগী তার গ্রামের মোঃ বাবুলের ছেলে আলম গত ১১ সেপ্টেম্বর দুপুর আড়াইটার দিকে সোহাগ হাসানের (৩০) মোটরসাইকেলটি তার বাড়ির সামনে থেকে চুরি করে। এরপর তাদের অন্য সহযোগী রাজু আহম্মেদের ভাড়া বাসায় গিয়ে বুঝিয়ে দিয়ে আসে। এছাড়াও সে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ি থানার জাকলাটারি গ্রামের মোঃ খবির আলীর ছেলে মোঃ আব্দুল হাকিম মিয়ার (৪০) কাছে বিভিন্ন সময় চোরাই মোটরসাইকেলগুলো বিক্রি করে থাকে। এর জন্য হাকিম মিয়া তাদেরকে ৩০ হাজার থেকে ৪০ হাজার টাকা প্রদান করতো। পরবর্তীতে চোরাই মোটরসাইকেল এর ইঞ্জিন নম্বর, চেসিস নম্বর টেম্পারিং এবং ভূয়া কাগজপত্র তৈরি করে মোটরসাইকেলের মালিক সেজে দ্বিতীয় পক্ষের কাছে বিক্রি করে দেয় হাকিম মিয়া। উল্লেখ্য, মোঃ ইদুল মিয়া ঢাকা জেলার আশুলিয়া থানায় একটি ডাকাতি মামলার ০১নং আসামী এবং নীলফামারী, কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাট জেলার সদর থানায় মোটরসাইকেল চুরি মামলাসহ সর্বমোট ১০ (দশ)টি মামলা রয়েছে। সম্প্রতি রংপুর মহানগরীতে যে বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল চুরির ঘটনা ঘটেছে তার মূল হোতা মোঃ ইদুল মিয়া (৩৩)। চুরি হওয়ার মোটরসাইকেলগুলোর বেশ কয়েকটি অন্যান্য আইন শৃঙ্খলা বাহিনী উদ্ধার করেছে কিন্তু মূল হোতা মোঃ ইদুল মিয়া (৩৩) ধরা ছোঁয়ার বাইরে ছিল। এদিকে, গ্রেফতারকৃত ইদুল মিয়া ও রাজু আহম্মেদসহ তাদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন, সংযুক্ত সীম, চোরাইকৃত একটি এপাচি (১৫০সিসি) নীল সাদা রংয়ের মোটরসাইকেল, মোটরসাইকেল চুরির সরঞ্জামসহ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য রংপুরের হারাগাছ থানায় হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
রিয়াজুল হক সাগর রংপুর/