রিয়াজুল হক সাগর: রংপুর জেলা প্রতিনিধিঃ রংপুর : এবারে গায়ে কাফনের কাপড় জড়িয়ে সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেছেন রংপুরের নর্দান (প্রা:) মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থীরা। কলেজ কর্তৃপক্ষের প্রতারণার প্রতিবাদসহ মাইগ্রেশনের দাবিতে তারা আজ বুধবার দুপুর ১টা থেকে বিকেল সোয়া ৩টা পর্যন্ত রংপুর মেডিক্যাল মোড়ে রংপুর-দিনাজপুর সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন।
এ সময় সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষ। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, রংপুরের নর্দান (প্রা:) মেডিক্যাল কলেজে কোনো হাসপাতাল নেই, নেই শিক্ষক। বিএমডিসি এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন অনুমোদনও নেই। তার পরেও নেপাল থেকে আসা ৩২জনসহ তিন শতাধিক শিক্ষার্থী এখানে ভর্তি হয়ে লেখাপড়া করে আসছেন। কর্তৃপক্ষ বার বার আশ্বাস দেওয়ার পরেও কোর্স পরিচালনায় কোন অনুমোদন আনতে পারেনি তারা। এমনকি যারা শেষ বর্ষ পাশ করেছেন তাদের ইন্টার্নশীপের কোন ব্যবস্থা করতে পারেনি কলেজ কর্তৃপক্ষ।
ধার করা রোগী ও শিক্ষক দিয়ে ক্লাস করিয়ে তাদের সঙ্গে প্রতারণার মাধ্যমে শিক্ষা জীবন ধ্বংস করা হয়েছে। এক মাসেরও বেশি সময় ধরে কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানানোসহ রাজধানীতে গিয়ে মানববন্ধন ও রংপুরে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে ঘেরাও করে বিক্ষোভ-মানববন্ধন করলেও কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে না।
তাই দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা। ওই প্রতিষ্ঠানের দশম ব্যাচের শিক্ষার্থী আশরাফুল ইসলাম জানান, ধার করা রোগী ও শিক্ষক দিয়ে ক্লাস করিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে তাদের শিক্ষা জীবন ধ্বংস করছে কর্তৃপক্ষ, হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা।
এ সমস্যা নিরসনে অন্য মেডিক্যাল কলেজে মাইগ্রেশনের সুযোগ দেওয়ার দাবি জানিয়ে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন চালিয়ে আসছেন। শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধিদল তাদের দাবি নিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যাবেন বলেও জানান তিনি।
খবর পেয়ে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদ হাসান মৃধাসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সড়ক ছেড়ে দেওয়ার আহ্বান জানান। প্রায় সোয়া দুই ঘণ্টা পর আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেন শিক্ষার্থীরা।
এতে সড়কের উভয়পাশে প্রায় তিন কিলোমিটার জুড়ে বিভিন্ন যান আটকা পড়ে দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়। রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী কমিশনার (কোতোয়ালি জোন) আলতাফ হোসেন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন চালিয়ে আসছে।
মাইগ্রেশনের প্রক্রিয়ার বিষয়টি নিয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করা হচ্ছে। আপাতত শিক্ষার্থীরা সড়ক ছেড়ে দিয়েছেন। যান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।
বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।