রাজনীতির হাওয়া যেকোনো সময় বদলে যেতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসক্ষচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ। রোববার (২৭ সেপ্টেম্বর) নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল আয়োজিত সিলেটে স্বামীকে আটকে রেখে গৃহবধূকে গণধর্ষণ এবং খাগড়াছড়িতে পাহাড়ি নারীকে ধর্ষণের প্রতিবাদে আয়োজিত মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
রিজভী বলেন, আমি বলবো দেখুন কখন যে রাজনীতির হাওয়া বদলে যায়। রাজনীতির হাওয়া কিন্তু দেখেশুনে আসে না। আবহাওয়ার যেমন নিশ্চয়তা নাই সকালে রোদ বিকেলে বৃষ্টি। রাজনীতির হাওয়া কিন্তু যেকোনো সময় বদলে যেতে পারে। সেই দিনের কথা চিন্তা করুন। আজকে আপনারা যে জঘন্য কাজগুলো করছেন এর কিন্তু প্রতিশোধ জনগণ একদিন ঠিকই নেবে।
আরও পড়ুনঃ এমসি কলেজে গণধর্ষণ: ঘটনা চাপা দেয়ার চেষ্টা করেন স্থানীয় আ.লীগ নেতারা!
তিনি বলেন, ‘সরকার তার অনাচারগুলো ঢাকার জন্য আর তাদের এই হালুয়া-রুটির সামান্য কিছু ভাগ পাওয়ার জন্য কিছু সাংস্কৃতিক পরজীবীরা একটি নাটক করেছে স্বাধীনতার ঘোষক এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে। বিকৃত রুচিসম্পন্ন একটি নাটক গতকাল আরটিভিতে প্রচারিত হয়েছে আমরা এটার প্রতিবাদ জানিয়েছি। আমরা বলেছি ইতিহাসকে বিকৃত করে সাংস্কৃতিক ব্যক্তির নামে কয়েকজন পরজীবী এই জঘন্য নোংরা কাজ করছে। শেখ হাসিনা আপনাকে বারবার বলেছি আপনার পদলেহনকারী ওইসব সাংস্কৃতিক ব্যক্তিদের ইতিহাস আর হাইকোর্টকে ধমক দিয়ে ইতিহাস সৃষ্টি এটা টিকবে না। আজকে আমি ছাত্র ভাইদেরকে সাক্ষী রেখে বলছি যারা এই সমস্ত জঘন্য বিকৃত ইতিহাস সৃষ্টি করছে তাদেরকে আমরা ব্ল্যাকলিস্ট করছি। তাদের জন্য কালো তালিকা করছি।’
সরকারের উদ্দেশ্যে বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ‘নিজেদের মনের মতো করে সাজানো আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে দিয়ে কতদিন নিজেদেরকে নিরাপদ রাখবেন? আমাদের সাথে জনগণ আছে আমাদের সাথে রিকশাওয়ালা আছে আমাদের সাথে শ্রমিক আছে আমাদের সাথে ছাত্র আছে আমাদের সাথে শিক্ষক আছে। এদের শক্তিতেই আমরা চলি। এই ‘ইনডিমিনিটি’ নামের যে নাটকটি রচনা করা হয়েছে এটা একটি মিথ্যাচারের নাটক। আমরা তার তীব্র প্রতিবাদ জানাই।’
রিজভী বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় কেন কারাগারে নেওয়া হয়েছে। কেন সাজা দেওয়া হয়েছে। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে কেন সাজা দেয়া হয়েছে। কারণ শেখ হাসিনা এমন একটি রাজত্ব কায়েম করতে চান যেখানে তার দলের ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা যখন মন চাইবে নারীদের সম্ভ্রম হরণ করবে। এই কারণে খালেদা জিয়াকে শাস্তি দেয়া হয়েছে, তারেক রহমানকে নির্যাতন করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের নেতারা টাকা পাচার করবে, ছাত্রলীগ নেতা দুই হাজার কোটি টাকা পাচারের দায়ে দোষী কেউ যাতে শব্দ করতে না পারে এই কারণে খালেদাকে জিয়া বন্দি, তারেক রহমানকে নির্যাতন। তোরা যে যা বলিস ভাই আমি আমার সোনার হরিণ চাই।’
বিএনপি ক্ষমতায় আসার জন্য অলিগলিতে পথ খুঁজছে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘ওবায়দুল কাদের সাহেব অলিগলিতে ঘুরে বেড়ায় যারা নারীর সম্ভ্রমহানি করে যারা ধর্ষক আর যারা টাকা পাচারকারী। আর এরা সবাই হচ্ছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী।’
ছাত্রলীগের অতীত ইতিহাস উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘১৯৭৩ সালে শহীদ মিনারে প্রথম ছাত্রীকে লাঞ্ছিত করেছে এই ছাত্রলীগ। এরপরে জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ নেতার ইতিহাস সাবই জানে। এগুলো তথ্যমন্ত্রীর মতো মনগড়া কথা নয় এগুলো ইতিহাস। ওরা (ছাত্রলীগ) মনে করে যার বাড়িতে সুন্দরী মেয়ে আছে সেইটা ছাত্রলীগের সম্পত্তি যখন ইচ্ছা তখন বের করে নেবে!’
ছাত্রদল সভাপতি ফজলুর রহমান খোকনের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামলের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, নির্বাহী কমিটির সদস্য আকরামুল হাসান মিন্টু, ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি কাজী শ্রাবণ, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল, সহ-সভাপতি আশরাফুল আলম লিঙ্কন, হাফিজুর রহমান হাফিজ, মামুন খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।