রাজবাড়ীতে দিন দিন কমছে পান চাষ
আবুল কালাম আজাদ, রাজবাড়ী :
রাজবাড়ীতে গত বছর থেকে পানের চাষ কমেছে ৪ হেক্টর জমিতে,ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না চাষিরা ফলেই এই চাষের প্রতি অনিহা চাষিদের।তবে ন্যায্য মূল্য না পাওয়ার অন্যতম কারণ বাজারে পানের চাহিদা না থাকা।
জেলার পান চাষিরা ক্রমাগত ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছেন। ফলে চরম হতাশায় ভুগছেন তারা। অর্থনৈতিক ক্ষতির কারণে পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন তারা।
তবে এক সময় রাজবাড়ী জেলার পান বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রফতানি করা হতো। দেশের চাহিদা মিটিয়ে ভারত, পাকিস্তান, ভুটান, মালদ্বীপ, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, সৌদি আরব, মালয়েশিয়ার মতো দেশগুলোতে রফতানি করা হতো। কিন্তু হঠাৎ করে বিদেশে পান রফতানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চরম বিপাকে পড়েছে হাজারো পান চাষী।
তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন- করোনার হিংস্র থাবায় পুরো পৃথিবী স্থবির। থমকে রয়েছে বিশ্বের অর্থনৈতিক চাকা। তারই প্রভাব এসে পড়েছে দেশে। তবে আশার কথা হলো খুব দ্রুতই বিদেশে পান রফতানি করা শুরু হবে। পান রফতানি করা শুরু হলে আবার পানের দাম বেড়ে যাবে।
এ জেলার মাটি ও আবহাওয়া পান চাষের উপযোগী হওয়ায় এ অঞ্চলের প্রায় ৩ উপজেলায় এ বছর ও পান চাষ হয়েছে প্রায় ১১৭ হেক্টর জমিতে। এ বছর বালিয়াকান্দি উপজেলা ৮০ হেক্টর, কালুখালিতে ৩০ হেক্টর ও পাংশা উপজেলায় ৭ হেক্টর জমিতে পান চাষ হয়েছে। যা কি না গত বছর থেকে প্রায় ৪ হেক্টর কম।
এ জেলায় সাধারণত দুই ধরণের পান উৎপাদন হয়। মিষ্টি পান ও সাচি পান। এই দুই ধরণের পানেরই বেশ কদর রয়েছে। দেশের গন্ডি পেরিয়ে এই দুই জাতের পান বিদেশের মাটিতেও বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। রাজবাড়ীর পান খুবই সুস্বাদু ও মিষ্টি।
সরেজমিন বালিয়াকান্দির বিভিন্ন পানের বরজে গিয়ে দেখা যায়, বাজারে পানের দাম না থাকায় অনেক পান চাষীই পান চাষ করা থেকে আগ্রহ হারাচ্ছে। ন্যায্য দাম থেকে বঞ্চিত হওয়ায় অনেকেই পানের বরজ আর তৈরি করছেন না। বরজ ভেঙে গেলেও সেটি তারা মেরামত করছেন না। কারণ- বরজ তৈরি করতে যে খরচ হয় সেটা তারা পাচ্ছেন না।
অনেক আবার বলেছেন- পানের দাম ফাল্গুন-চৈত্র মাসে কিছুটা পাওয়া যায়। আর বাকি মাসগুলোতেই পানের দাম থেকে একেবারে নিম্ন। তবে চলতি বছরের মার্চ থেকে পানের দাম একেবারেই কম। ৮০টি পান ২ থেকে ৫ টাকা পর্যন্ত। বরজ থেকে পান ছিড়ে বাজারে নিতে যে খরচ হয় তার কিছুই আয় হয় না।
রাজবাড়ী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক এস এম শহীদ নূর আকবর বলেন, নীতি নির্ধারকরা দেশের পান ইউরোপীয় দেশগুলোতে রফতানির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। খুব দ্রুতই এটি বাস্তবায়ন হবে। আশার কথা হলো নীতি নির্ধারকরা যে জেলার পান রফতানি করবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সেই সিদ্ধান্তের মধ্যে রাজবাড়ী জেলা রয়েছে।