রাশিয়া থেকে এলো প্রথম পরমাণু চুল্লিপাত্র।পাবনার ঈশ্বরদীতে নির্মিতব্য রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের মূল যন্ত্র রিঅ্যাক্টর প্রেশার ভেসেল (চুল্লিপাত্র) রাশিয়া থেকে প্রকল্প এলাকার পাকশী নদীবন্দরে এসে পৌঁছেছে। একই সঙ্গে নিয়ে আসা হয়েছে একটি স্টিম জেনারেটর।
রূপপুর প্রকল্প সূত্র জানায়, মঙ্গলবার প্রকল্প এলাকার পাশে পাকশীর পদ্মা নদীতে নবনির্মিত জেটিতে নোঙর করেছে চুল্লিপাত্র এবং জেনারেটরবাহী বিশেষায়িত বার্জ। নৌবাহিনীর কড়া নিরাপত্তায় এটি মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ঈশ্বরদীর রূপপুরে আনা হয়। যন্ত্র দুটি নির্মাণ করা হয়েছে রাশিয়ার বৃহত্তম নিউক্লিয়ার শিল্প এলাকা ভোলগাদোনস্কে।
চুল্লিপাত্রটির ওজন ৩৩৩ দশমিক ৬ টন এবং স্টিম জেনারেটরের ওজন ৩৪০ টন। এর আগে আগস্টের শেষদিকে রাশিয়ার পেট্রোজাবাদ বন্দর থেকে যন্ত্র দু’টি নিয়ে বিশেষ জাহাজ বাংলাদেশের উদ্দেশে রওনা দেয়। ১৪ হাজার কিলোমিটার আন্তর্জাতিক নৌপথ পাড়ি দিয়ে সেগুলো গত ২০ অক্টোবর মোংলা বন্দরে পৌঁছে। চুক্তি অনুযায়ী দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিট ২০২২ এবং দ্বিতীয়টি ২০২৩ সালে নির্মাণ শেষ করবে রাশিয়ান ঠিকাদার এটমস্ত্রয় এক্সপোর্ট। যথাক্রমে পরের বছর থেকেই পরমাণু জ্বালানি ইউরেনিয়াম লোড করে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু করবে। রাশিয়ার ঋণ ও দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত পরমাণু সংস্থা রোসাটমের কারিগরি সহায়তায় বাস্তবায়ন করা হচ্ছে দেশের প্রথম এই পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প। জনবল প্রশিক্ষণসহ প্রকল্পের নির্মাণ ব্যয় ১ লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকা; যার ৯০ শতাংশ ঋণ সহায়তা দিচ্ছে রাশিয়া।
রূপপুর প্রকল্পের প্রকল্প ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক পরমাণু বিজ্ঞানী ড. মো. শৌকত আকবর বলেন, ইতোমধ্যে রূপপুরে প্রথম ইউনিটের ভৌত কাঠামোর কাজ প্রায় শেষ হয়েছে। নতুন বছরের শুরুতেই এগুলোকে রূপপুরের ভৌত কাঠামোর মধ্যে স্থাপন করা হবে। সব ঠিক থাকলে আগামী বছরের প্রথম প্রান্তিকে রিঅ্যাক্টর প্রেশার ভেসেল ওই ভৌত কাঠামোর ভেতর স্থাপনের কার্যক্রম শুরু হবে। এর পর কাঠামোর উপরিভাগে ছাদ (বিশেষ ডোমের) নির্মাণ কাজ শুরু হবে।
সারোয়ার আলমকে বদলির নেপথ্যে কোনো কারণ নেই: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান জানান, রাশিয়া থেকে এত পথ পাড়ি দিয়ে যন্ত্রগুলো রূপপুরে পৌঁছানোয় প্রকল্পটি নিয়ে জনগণ আরও আস্থা পাবে। রাশিয়ায় কয়েকটি শহরে রূপপুরের সব ধরনের যন্ত্রপাতি সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়েই তৈরি হচ্ছে এবং এর মাধ্যমে পরমাণু প্রযুক্তি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে।
এদিকে রোসাটমের টিভিইএল ফুয়েল কোম্পানি উইন্ড পাওয়ার প্লান্ট জেনারেটরে ব্যবহার করার জন্য রেয়ার-আর্থ ম্যাগনেট ক্রমান্বয়ে স্থানীয়ভাবেই প্রস্তুত করা শুরু করেছে। কোম্পানিটির প্রস্তুত করা ম্যাগনেটের প্রথম সেটটি ইতোমধ্যে গ্রাহককে পাঠানো হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে রোসাটম কর্তৃপক্ষ এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। ইলেমাস ম্যাগনেট এলএলসি (মস্কো ইলেকত্রস্তালে রোসাটমের টিভিইএল ফুয়েল কোম্পানি) এবং রেড উইন্ড বিভির (নোভাউইন্ড জেএসসি এবং ডাচ কোম্পানি লেগারওয়ের জয়েন্ট ভেঞ্চার) চুক্তি অনুসারে টিভিইএল ফুয়েল কোম্পানিটি প্রায় ২০০ সেটের বেশি ম্যাগনেট প্রস্তুত ও সরবরাহ করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। নকশা অনুযায়ী এক সেট ম্যাগনেটের মাধ্যমে একটি পাওয়ার জেনারেটর চলে।