সমবায় কার্যক্রমে নারীরা আরো বেশি বেশি সম্পৃক্ত হওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সমবায় কার্যক্রমে নারীরা আরো বেশি এগিয়ে এলে, সমাজে দুর্নীতি কমবে, কাজ বেশি হবে এবং সর্বোপরি প্রত্যেকটি পরিবার উপকৃত হবে।
শনিবার (৭ নভেম্বর) সকালে ৪৯তম জাতীয় সমবায় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এই কথা বলেন তিনি। করোনা মহামারীর প্রাদুর্ভাবের মধ্যেই এ বছর পালিত হচ্ছে জাতীয় সমবায় দিবস। এই উপলক্ষে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে সমবেত হয়েছিলেন দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা সমবায়ীরা। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন সরকার প্রধান শেখ হাসিনা।
অনুষ্ঠানে দেশসেরা সফল ৯টি সমবায় সমিতি ও একজন বিশিষ্ট সমবায়ীর হাতে তুলে দেয়া হয় জাতীয় সমবায় পুরস্কার-২০১৯।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সমাজের কোনো অংশই যাতে পিছিয়ে না থাকে, সে জন্য কোনো জমি অনাবাদী না রাখার উদ্যোগ নিয়েছে আওয়ামী লীগ সরকার।’
শেখ হাসিনা জানান, প্রান্তিক মানুষের উন্নয়নে বড় কাজে দিচ্ছে, আমার বাড়ি আমার খামার প্রকল্প। নিজস্ব জমিতে যে যা খুশি এখন উৎপাদন করতে পারছে। পাশাপাশি উৎপাদিত পণ্য যাতে ঠিকমতো বাজারজাত হয় সেই ব্যবস্থাও নিতে বলেন শেখ হাসিনা।
‘আমার বাড়ি আমার খামার’ প্রকল্পে, ১ লাখ ২১ হাজার ১৪২টি সমবায় গড়ে উঠেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সরকারের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী দেশ এখন প্রায় শতভাগ বিদ্যুতায়নের পথে। স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর মধ্যেই দেশের শতভাগ মানুষ বিদ্যুৎ পাবে’। ২০১৮ এর নির্বাচনী ইশতেহার অনুযায়ী আমার গ্রাম আমার শহর বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে সরকার। যাতে প্রান্তিক মানুষ নগরের সুবিধা পেতে পারেন গ্রামে বসেই।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রী করোনা মহামারিতে গণভবনে বন্দিজীবন কাটাচ্ছেন
এছাড়া, বঙ্গবন্ধুর বহুমুখী সমবায় ভাবনার দর্শন সামনে রেখে, মডেল গ্রাম প্রতিষ্ঠার জন্য ১০টি গ্রামে পাইলট প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘গ্রামের মানুষ যাতে উন্নত জীবন পায়। সেদিকে আমরা বিশেষ দৃষ্টি দিচ্ছি। আমরা ক্ষুদ্র সঞ্চয়ের ব্যবস্থা করেছি। আমরা স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক করে দিয়েছি। যাতে মানুষ এখান থেকে মূলধন নিয়ে কাজ করতে পারেন। আমরা আত্মনির্ভরশীল করতে চাই প্রত্যেকেটি পরিবারকে। যাতে ঐ ঋণ নিয়ে সুদের জন্য, কারো বাড়ির চালা ধরে টান দেয়া, কারো গরু ধরে নিয়ে যাচ্ছে। কেউ কেউ সুদ দিতে না পেরে, দেশান্তরী হচ্ছে। এই পরিস্থিতি যেন তৈরি না হয়।’
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রী করোনা মহামারিতে গণভবনে বন্দিজীবন কাটাচ্ছেন
সবাইকে উদ্দেশ্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘সমবায়ের মাধ্যমেই দেশকে উন্নত করা সম্ভব। আমি সমবায়ীদের বলবো, আন্তরিকতার সাথে কাজ করতে হবে। তাৎক্ষণিক লাভের আশা না করে, এটা যেন স্থায়ী, উৎপাদনমুখী এবং লাভজনক প্রতিষ্ঠান হয়।
তিনি বলেন, ‘এটা পরীক্ষিত যে, বহুমুখী গ্রাম সমবায় গড়ে তুলতে পারলে, বাংলাদেশে কোনো দারিদ্র্য থাকবে না। দরিদ্রতা সম্পূর্ণ নির্মূল হবে। সেটা করা সম্ভব। কাজেই প্রত্যেক সমবায়ীর এক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে।’