পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন এমপি বলেছেন, সামুদ্রিক পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করছে। এ লক্ষ্যে সরকার দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থিত সোয়াচ অব নো গ্রাউন্ড এর ১ হাজার ৭ শত ৩৮ বর্গ কিলোমিটার এলাকা মেরিন প্রটেক্টেড এরিয়া হিসেবে ঘোষণা করেছে। ফলে বিভিন্ন প্রজাতির বিপন্ন সামুদ্রিক ডলফিন, তিমি এবং হাঙ্গর এর সংরক্ষণ ও বংশ বৃদ্ধিতে সহায়ক হচ্ছে। এছাড়া সেন্টমার্টিন দ্বীপ সংলগ্ন ১ হাজার ৭শত ৪৩ বর্গ কি. মি. এলাকার জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ করার লক্ষ্যে মেরিন প্রটেক্টেড এরিয়া হিসেবে ঘোষণা করার কার্যক্রম চলমান আছে। বঙ্গোপসাগরে জলজ সার্বিক জীববৈচিত্র্য বিশেষ করে ডলফিন সংরক্ষণের টেকসই ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।
রোববার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকালে বিশ্ব পর্যটন দিবস ২০২০ উপলক্ষে ‘সেভ আওয়ার সি’ আয়োজিত অনলাইন ‘আন্ডারওয়াটার ন্যাচার এক্সিবিশন অ্যান্ড ডিসকাশন’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে সংযুক্ত থেকে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী উদ্বোধনী বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুনঃ এমসি কলেজে গণধর্ষণ: ঘটনা চাপা দেয়ার চেষ্টা করেন স্থানীয় আ.লীগ নেতারা!
পরিবেশ মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের সমূদ্র উপকূলবর্তী এলাকায় পরিবেশ সুরক্ষার জন্য পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সেন্টমার্টিন দ্বীপ, কক্সবাজার-টেকনাফ সমুদ্র সৈকত এবং সুন্দরবনকে প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) ঘোষণা করেছে। এসব এলাকায় পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমসহ পরিবেশ সংরক্ষণে বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। সরকার ঘোষিত ইসিএ যথাযথভাবে কার্যকরের মাধ্যমে এ সকল এলাকার জীববৈচিত্র সংরক্ষণ করা সম্ভব হবে। এছাড়া উপকূলের দূষণ প্রতিরোধে ৫২টি স্থানকে হটস্পট হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, যেখানে দূষণ প্রতিরোধে কাজ করা হচ্ছে। সমূদ্রের বায়োডাইভার্সিটি এসেসমেন্টের জন্যও প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার ভবিষ্যতে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে যুগান্তকারী ১০০ বছরের ডেল্টা প্লান বাস্তবায়ন করছে।
পর্যটন বিষয়ে পরিবেশ মন্ত্রী বলেন, ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ পূর্বক আমাদের পর্যটন করতে হবে।
কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান লে. কর্নেল (অব.) ফোরকান আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অনলাইন এক্সিবিশন ও ওয়েবিনারে শের-ই-বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারি, অ্যাকুয়াকালচার এবং মেরিন সায়েন্স বিভাগের ডিন প্রফেসর ড. কাজী আহসান হাবিব, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমুদ্র বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মুসলেম উদ্দিন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক রাকিব আহমদ পিএইচডি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের মেরিটাইম ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অধ্যাপক ড. সৈয়দ রশিদুল হাসান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, গাজীপুরের মৎস্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. দীনেশচন্দ্র সাহা এবং ব্লু ইকোনমি এর গবেষক ড. দিলরুবা চৌধুরী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
ওয়েবিনারটি পরিচালনা করেন সমুদ্র সংরক্ষণ বিষয়ক আয়োজক সংগঠন ‘সেভ আওয়ার সি’ এর সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ আনোয়ারুল হক।
অনলাইন এক্সিবিশনে সাগরের জীববৈচিত্র সংরক্ষণ বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টিকারী সংগঠন ‘সেভ আওয়ার সি’ এর উদ্যোগে দেশে এবং বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ডুবুরিদের পানির নিচের সৌন্দর্যের স্থির ও ভিডিও চিত্র প্রদর্শন করা হয়।