সুপ্রিম কোর্টে বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা আদালত বর্জন কর্মসূচি পালন করছেন। মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সামনে শতাধিক বিএনপিপন্থী ও সরকার বিরোধী আইনজীবীরা অবস্থান নিয়ে আদালত বর্জন কর্মসূচি পালন করছেন। তারা আইনজীবীদের মাঝে আদালত বর্জনের লিফলেট বিতরণ করছেন। তারা সুপ্রিম কোর্ট বার ভবনের সামনে কাপড় বিছিয়ে কর্মসূচি পালন করছেন।
সকাল ৯টা থেকে বিএনপির আইন সম্পাদক ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের মহাসচিব ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, আইনজীবী ফোরাম সুপ্রিম কোর্ট ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক গাজী কামরুল ইসলাম সজল, ইউনাইটেড লইয়ার্ ফ্রন্টেরে (ইউএলএফ) সমন্বয় সৈয়দ মামুন মাহবুব, ইউএলএফে নেতা শাহ আহমেদ বাদল, আইনজীবী আবেদ রাজা, সগীর হোসেন লিওন, সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক ট্রেজারার মো: কামাল হোসেন, আইনজীবী মিজানুর রহমান, মো: পারভেজ হোসেন, ফাতেমা আক্তার, মো: মাকসুদ উল্লাহ শতাধিক আইনজীবী সকাল ৯টা থেকে এ কর্মসূচি পালন করছেন।
এ বিষয়ে বিএনপির আইন সম্পাদক ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের মহাসচিব ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, আমরা সকাল ৯টা থেকে আদালত বর্জন কর্মসূচি শুরু করেছি। সারা দেশে বিচারের নামে যে অবিচার-প্রহসন হচ্ছে তার প্রতিবাদে। দেশের ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য বিচারের নামে যে অবিচার হচ্ছে, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার অন্যায়ভাবে সাজা দেয়া হয়েছে। তারেক রহমানকেও সাজা দেয়া হয়েছে। সোমবার নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকেও সাজা দেয়া হয়েছে। বেগম খালেদা জিয়া, তারেক রহমান, ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ বিরোধী দলের নেতাদের
প্রহসনের বিচারের নামে সাজা দেয়া হচ্ছে। এসব আন্যায়ের প্রতিবাদে আমরা আদালত বর্জন কর্মসূচি পালন করছি। আগামী ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত আমারা আদালত বর্জন কর্মসূচি পালন করব।
এর আগে গত ২৭ ডিসেম্বর ১ জানুয়ারি থেকে ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টে আপিল বিভাগ, হাইকোর্ট বিভাগসহ সকল আদালত বর্জনের ঘোষণা দেয় বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের সংগঠন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম। ওইদিন সুপ্রিম কোর্ট বার ভবনে ডামি নির্বাচন বর্জন, কর্তৃত্ত্ববাদী এ সরকারের পদত্যাগের দাবিতে জনগণের অসহযোগ আন্দোলনের সাথে সংহতি জ্ঞাপন এবং আইনজীবীদের কর্মসূচি ঘোষণা উপলক্ষ্যে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের মহাসচিব ব্যারিস্টার কায়সার কামাল।
ওই সংবাদ সম্মেলনের বলা হয়, আগামী ৭ জানুয়ারি ২০২৪ সরকার আর একটি নীলনকশার পাতানো ডামি নির্বাচনের পাঁয়তারা করছে। কথিত নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক দেখানোর জন্য সরকারি দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী, বিদ্রোহী প্রার্থী, অনুগত প্রার্থী প্রভৃতি হরেক রকমের প্রার্থী দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে। কারা ডামি হিসাবে দাঁড়িয়ে থাকবে তাও ঠিক করে দেয়া হচ্ছে। অবৈধ ফ্যাসিস্ট সরকার রাষ্ট্রের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে, হয় আজ্ঞাবহ করেছে অথবা করায়ত্ব করতে না পেরে প্রতিষ্ঠানগুলোকে দুমড়ে-মুচড়ে ভেঙ্গে দিয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনের আরো বলা হয়, জনগণের শেষ আশ্রয় স্থল হচ্ছে বিচার বিভাগ, সংবিধানের তৃতীয়ভাগে জনগণের মৌলিক অধিকার বিবৃত আছে এবং অনুচ্ছেদ ১০২ অনুযায়ী হাইকোর্ট বিভাগ জনগণের মৌলিক অধিকার বলবৎ করার জন্য সংবিধানের কাছে দায়বদ্ধ। কিন্তু বেদনাহত চিত্ত নিয়ে আমরা প্রত্যক্ষ করলাম, ২৮ অক্টোবরে বিএনপিসহ ভোটের অধিকার ও গণতন্ত্র বিশ্বাসী সকল রাজনীতিক দলের নেতাকর্মী ও বিভিন্ন শ্রেণি পেশার নাগরিকদের উপর সরকারের পেটোয়া বাহিনী ক্রাক ডাউন করল, তখন নেতাকর্মীদের আইনের আশ্রয় লাভের অধিকার উপেক্ষিত হল। যা দেশ ও জাতির জন্য দুর্ভাগ্যজনক।