ঢাকা ১০:০০ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৫, ২৫ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সৎ মেয়েকে নির্যাতনের ঘটনায় ২৪ ঘণ্টায়ও কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ

News Editor
  • আপডেট সময় : ১২:২৭:০৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৪ অক্টোবর ২০২০
  • / ১০৬৯ বার পড়া হয়েছে

মামলার পর একদিন অতিবাহিত হলেও কুমিল্লায় তিথিকে নির্যাতনকারী অভিযুক্ত সৎ মাকে আটক করতে পারেনি পুলিশ। নির্যাতনের ঘটনায় তিথির খালু বাদী হয়ে সোমবার (১২ অক্টোবর) রাত ১টায় চান্দিনা থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। তবে মামলা হওয়ার পর থেকে অভিযুক্ত সৎ মা পলাতক রয়েছেন।

চান্দিনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামসউদ্দিন মোহাম্মদ ইলিয়াছ এ তথ‌্য নিশ্চিত করে জানান, তিথিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এ ঘটনায় শিশু নির্যাতন দমন আইনে চান্দিনা থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

ওসি বলেন, ‘তিথির সৎ মাকে গ্রেপ্তার করতে তাদের চান্দিনার বাসায় অভিযান চালানো হয়। তবে পুলিশ পৌঁছানোর আগেই তিনি পালিয়ে যান। তাকে গ্রেপ্তারে পুলিশ সচেষ্ট রয়েছে।’

তিথি দেবীদ্বার উপজেলার বাগমারা ইসলামীয়া আলিম মাদ্রাসায় অষ্টম শ্রেণি শিক্ষার্থী। তিথির সৎ মা মাহমুদা সুলতানা লাভলী দেবীদ্বার উপজেলার প্রেমু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, তিথির বাবা জামাল হোসেন (৪৫) দেবীদ্বার উপজেলার বরকমতা গ্রামের বিরাম বাড়ির মৃত আরব আলীর ছেলে। সেনাবাহিনীতে চাকরিরত অবস্থায় ১৯৯৬ সালে দেবীদ্বার উপজেলার জাফরাবাদ (সীমারগুড়ি) গ্রামের আমেনা খাতুন তিন্নির সঙ্গে তার বিয়ে হয়।

দাম্পত্য জীবনে তিথি ও আবু মুছা নামে দুই সন্তানের বাবা-মা হন তারা। ২০১৫ সালে তিন্নির মৃত‌্যু হয়। মা মারা যাওয়ার পর তিথি ও মুছা চাচির কাছে বড় হতে শুরু করে।

সেনা বাহিনী থেকে অবসর নেওয়ার পর জামাল হোসেন ২০১৭ সালে শিক্ষিকা লাভলীকে বিয়ে করেন। তারা চান্দিনায় ভাড়া বাসায় বসবাস করতে শুরু করেন। তবে সৎ মা লাভলী তিথি ও মুছাকে মেনে নিতে পারেনি।

চলতি বছরের ১৫ জানুয়ারি মাস থেকে জামাল হোসেন কারাগারে রয়েছেন। সেসময় থেকে তিন্নি ও মুছা সৎ মায়ের সঙ্গে বসবাস করছিল।

বাবার অবর্তমানে তুচ্ছ বিষয়েও শারীরিক-মানসিক নির্যাতন চালায় সৎ মা লাভলী। কথায় কথায় তিথিকে মারধর, দেয়ালের সাথে ধাক্কা, খুন্তির ছ্যাঁকাসহ নানা ধরনের অত‌্যাচার করেছেন তিনি।

অভিযোগ রয়েছে, চলতি মাসের ১ অক্টোবর কাজ করতে না পারার অজুহাতে তিথিকে বেধড়ক মারধর করেন লাভলী। এতে মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ে তিথি।

তিথির চাচি বরকামতা জাগরণি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা রওশন আরা আক্তার জানান, ছোট বেলা থেকে তিথি খুব মেধাবী। পড়াখেলার পাশাপাশি খেলাধুলা ও নাচ-গানেও পারদর্শী ছিল। একাধিকবার উপজেলা পর্যায়ে পুরস্কৃত হয়েছে তিথি।

তিনি বলেন, ‘আমার কাছে থাকা অবস্থায়ও সে সুস্থই ছিল। কিন্তু গত ৮-৯ মাসের নির্যাতনে সে মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েছে।’ এদিকে সৎ মা লাভলীকে দ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে তিথির স্বজন ও প্রতিবেশীরা।

সৎ মেয়েকে নির্যাতনের ঘটনায় ২৪ ঘণ্টায়ও কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ

আপডেট সময় : ১২:২৭:০৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৪ অক্টোবর ২০২০

মামলার পর একদিন অতিবাহিত হলেও কুমিল্লায় তিথিকে নির্যাতনকারী অভিযুক্ত সৎ মাকে আটক করতে পারেনি পুলিশ। নির্যাতনের ঘটনায় তিথির খালু বাদী হয়ে সোমবার (১২ অক্টোবর) রাত ১টায় চান্দিনা থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। তবে মামলা হওয়ার পর থেকে অভিযুক্ত সৎ মা পলাতক রয়েছেন।

চান্দিনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামসউদ্দিন মোহাম্মদ ইলিয়াছ এ তথ‌্য নিশ্চিত করে জানান, তিথিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এ ঘটনায় শিশু নির্যাতন দমন আইনে চান্দিনা থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

ওসি বলেন, ‘তিথির সৎ মাকে গ্রেপ্তার করতে তাদের চান্দিনার বাসায় অভিযান চালানো হয়। তবে পুলিশ পৌঁছানোর আগেই তিনি পালিয়ে যান। তাকে গ্রেপ্তারে পুলিশ সচেষ্ট রয়েছে।’

তিথি দেবীদ্বার উপজেলার বাগমারা ইসলামীয়া আলিম মাদ্রাসায় অষ্টম শ্রেণি শিক্ষার্থী। তিথির সৎ মা মাহমুদা সুলতানা লাভলী দেবীদ্বার উপজেলার প্রেমু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, তিথির বাবা জামাল হোসেন (৪৫) দেবীদ্বার উপজেলার বরকমতা গ্রামের বিরাম বাড়ির মৃত আরব আলীর ছেলে। সেনাবাহিনীতে চাকরিরত অবস্থায় ১৯৯৬ সালে দেবীদ্বার উপজেলার জাফরাবাদ (সীমারগুড়ি) গ্রামের আমেনা খাতুন তিন্নির সঙ্গে তার বিয়ে হয়।

দাম্পত্য জীবনে তিথি ও আবু মুছা নামে দুই সন্তানের বাবা-মা হন তারা। ২০১৫ সালে তিন্নির মৃত‌্যু হয়। মা মারা যাওয়ার পর তিথি ও মুছা চাচির কাছে বড় হতে শুরু করে।

সেনা বাহিনী থেকে অবসর নেওয়ার পর জামাল হোসেন ২০১৭ সালে শিক্ষিকা লাভলীকে বিয়ে করেন। তারা চান্দিনায় ভাড়া বাসায় বসবাস করতে শুরু করেন। তবে সৎ মা লাভলী তিথি ও মুছাকে মেনে নিতে পারেনি।

চলতি বছরের ১৫ জানুয়ারি মাস থেকে জামাল হোসেন কারাগারে রয়েছেন। সেসময় থেকে তিন্নি ও মুছা সৎ মায়ের সঙ্গে বসবাস করছিল।

বাবার অবর্তমানে তুচ্ছ বিষয়েও শারীরিক-মানসিক নির্যাতন চালায় সৎ মা লাভলী। কথায় কথায় তিথিকে মারধর, দেয়ালের সাথে ধাক্কা, খুন্তির ছ্যাঁকাসহ নানা ধরনের অত‌্যাচার করেছেন তিনি।

অভিযোগ রয়েছে, চলতি মাসের ১ অক্টোবর কাজ করতে না পারার অজুহাতে তিথিকে বেধড়ক মারধর করেন লাভলী। এতে মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ে তিথি।

তিথির চাচি বরকামতা জাগরণি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা রওশন আরা আক্তার জানান, ছোট বেলা থেকে তিথি খুব মেধাবী। পড়াখেলার পাশাপাশি খেলাধুলা ও নাচ-গানেও পারদর্শী ছিল। একাধিকবার উপজেলা পর্যায়ে পুরস্কৃত হয়েছে তিথি।

তিনি বলেন, ‘আমার কাছে থাকা অবস্থায়ও সে সুস্থই ছিল। কিন্তু গত ৮-৯ মাসের নির্যাতনে সে মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েছে।’ এদিকে সৎ মা লাভলীকে দ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে তিথির স্বজন ও প্রতিবেশীরা।