হঠাৎ কেন খরচ করছে বাংলাদেশ?
আস্থা ডেস্কঃ
দুই দিনের বাংলাদেশ সফরের সময় ম্যাখোঁ একজন সম্মানিত পরিদর্শনকারী ব্যক্তিত্বের ভূমিকা পালন করেন। তিনি দাঁড়িয়ে লোকসংগীত শুনেছেন, পুরান ঢাকার রাস্তায় রিকশায় চড়েছেন এবং নানা ব্যঞ্জনের বাংলা খাবারের স্বাদ নিয়েছেন। এতকিছুর পরেও ম্যাখোঁ তার মোহনীয় ঐতিহাসিক সফরকে সম্পূর্ণরূপে ছদ্মবেশে ঢাকতে পারেননি।
তিনি বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বিমান সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের কাছে ৩৫ হাজার কোটি টাকারও বেশি মূল্যে ১০টি এয়ারবাস উড়োজাহাজ বিক্রির চুক্তি করেছেন। এই উড়োজাহাজ ক্রয় বাংলাদেশের জন্য সম্পূর্ণ অপ্রয়োজনীয় এবং বাংলাদেশকে বছরের পর বছর এর ভার বহন করতে হবে।
এসময় ফরাসি প্রেসিডেন্টের সঙ্গে উড়োজাহাজ ক্রয় চুক্তিতে সাক্ষর করেছে বাংলাদেশ। আগামী নির্বাচনের আগে ফ্রান্সকে খুশি করতেই উড়োজাহাজ ক্রয় চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়েছে।
হাসিনা-ম্যাখোঁ যে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছেন তা বাংলাদেশের জন্য প্রয়োজন ছিল না, এমনকি এর ব্যয়ভার বহন করার সক্ষমতা এ মুহূর্তে বাংলাদেশের নেই। অনেকেই বিশ্বাস করেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় থাকা নিশ্চিত করতে নির্বাচনে কারচুপির আশ্রয় নিতে পারে। আর এই পরিস্থিতিকে পুঁজি করে, ম্যাখোঁ বাংলাদেশে নির্বাচনের আগে ফরাসি বিমানশিল্পের পক্ষে একটি লাভজনক চুক্তি স্বাক্ষর করাতে সক্ষম হন।
মূলত পাইলটের ঘাটতি এবং সময়সূচি সংক্রান্ত সমস্যার কারণেই এই অপচয় হয়েছে। গত এক দশকে বাংলাদেশ বিমান তার বহরকে দ্বিগুণ করেছে। বর্তমানে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের কাছে রয়েছে ২১টি বিমান। ২০০০ সালে যেখানে ২৮টি আন্তর্জাতিক রুটে বিমান বাংলাদেশের ফ্লাইট যাতায়াত করত সেখানে বর্তমানে তা নেমে দাঁড়িয়েছে ২১টিতে।
বৈদেশিক মুদ্রা সংকটের কারণে রাজস্ব ফেরত দিতে না পারায় সম্প্রতি বাংলাদেশে রুট স্থগিত করেছে অনেক আন্তর্জাতিক এয়ারলাইন্স। এতে বাংলাদেশ বিমান এয়ারলাইন্সের বিমানের ব্যবহার বেড়েছে। তবুও বাংলাদেশ বিমান একটি লোকসানি প্রতিষ্ঠান হিসেবে রয়ে গেছে।
২০২১ এবং ২০২২ সালে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স প্রায় ৪১ মিলিয়ন ডলার এবং ৫৪ মিলিয়ন ডলার মুনাফা অর্জনের দাবি করেছে। অথচ ২০২২ সালের নভেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশ সিভিল এভিয়েশন অথরিটি এবং রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন পদ্মা অয়েলের কাছে বিমানের প্রায় ১ বিলিয়ন ডলারের বিল বকেয়া রয়েছে, যার কোনো হিসাব সেখানে ছিল না। এই অপরিশোধিত বিলগুলো হিসাব করলে বিমান বাংলাদেশ লাভের পরিবর্তে ব্যাপক লোকসানে রয়েছে।