লালমনিরহাটের পাটগ্রামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার পর লাশ পুড়িয়ে দেয়ার ঘটনায় স্থানীয়দের জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ।লালমনিরহাটের এসপি আবিদা সুলতানা জানান, তদন্তে ঘটনার সঠিক কারণ জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে নিহতের বিরুদ্ধে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার বিষয়ে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়দের কয়েকজন।
এর আগে, বৃহস্পতিবার বিকেলে পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী বাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে এ ঘটনা ঘটে। নিহত শহিদুন্নবী জুয়েল রংপুর শহরের শালবন মিস্ত্রীপাড়া এলাকার আব্দুল ওয়াজেদ মিয়ার ছেলে। তিনি রংপুর ক্যান্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের সাবেক গ্রন্থাগারিক।
পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার সুলতান যোবাইয়ের আব্দার নামে এক সঙ্গীসহ বুড়িমারী বেড়াতে আসেন জুয়েল। বিকেলে বুড়িমারী কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে আসরের নামাজ আদায় করেন তারা। নামাজ শেষে মসজিদের সানসেটে রাখা কোরআন শরীফ পড়তে গিয়ে নামাতে যান। এ সময় অসাবধনাতাবশত কয়েকটি কোরআন ও হাদিসের বই তার পায়ে পড়ে যায়। পরে তিনি তুলে চুম্বন করেন। বিষয়টি নিয়ে জুয়েলের সঙ্গে মুয়াজ্জিনের কথা কাটাকাটি হয়। এরপর আশপাশের লোকজন ছুটে এসে সন্দেহবশত জুয়েল ও সুলতান যোবাইয়েরকে পাশে ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের একটি কক্ষে আটকে রাখে।
পুরো বাজারে এবং পার্শ্ববর্তী গ্রামে গুজব ছড়িয়ে পড়ে, কোরআন অবমাননার দায়ে দুই যুবককে আটক করা হয়েছে। এ সময় বিক্ষুব্ধরা ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের দরজা-জানালা ভেঙে জুয়েলকে পিটিয়ে হত্যা করে। পরে মরদেহ টেনে পাটগ্রাম বুড়িমারী মহাসড়কে নিয়ে আগুনে পুড়িয়ে ছাই করে দেয় স্থানীয়রা। এ সময় বিক্ষুব্ধরা মহাসড়কে আগুন জ্বালিয়ে অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল করে।
ঘটনার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন এসপি আবিদা সুলতানা বলেন, ঘটনা সম্পর্কে স্থানীয় লোকজন পুলিশের কাছে বিভন্ন ধরনের তথ্য দিচ্ছে। ঘটনাটির তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। পিটিয়ে হত্যার পর মরদেহ আগুন দিয়ে পোড়ানোর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ভাইরাল হয়েছে।
এসপি আবিদা সুলতানা বলেন, ঘটনাস্থলে ধারণ করা ভিডিও ফুটেজগুলো দেখে জড়িতদের চিহ্নিত করার চেষ্টা করছে পুলিশ। ওই এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।